বিএনপিকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ ফরহাদ মজহারের

প্রকাশ | ২২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিএনপি নেতাদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে ফরহাদ মজহার বলেছেন, রাজনৈতিক দল কীভাবে নির্বাচনে আসবে, সেই গঠনতন্ত্র তৈরি হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের দাবি তোলা যাবে না। বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রতিবাদী নাগরিক সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত 'গণঅভু্যত্থান ও আমাদের করণীয়' শীর্ষক সেমিনারে একথা বলেন কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার ফরহাদ মজহার। বিএনপি ইতিমধ্যেই ক্ষমতায় চলে এসেছে মন্তব্য করে ফরহাদ মজহার বলেন, 'তারা এই জনগণের মধ্যেই আছে। দলকে সামনে আনা যাবে না। আগে রাষ্ট্র গোছাতে হবে। শত্রম্নকে মোকাবিলা করতে হবে।' এ বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সংবিধানের জন্য লড়াই হয়নি। সংবিধান উৎখাত করার জন্য লড়াই হয়েছে। যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের মনের অভিপ্রায় লিখিত হওয়া পর্যন্ত সরকারকে সময় দিতে হবে। নতুন গঠনতন্ত্র তৈরি হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকতে হবে। গণঅভু্যত্থানের পরপরই বিএনপির সমাবেশের সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, 'এতে ভুল বার্তা গেছে। তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন চাইলেন, কেন করলেন? উদ্দেশ্যটা কী?' এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিএনপি কিন্তু পারেনি এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে ঠেকাতে। তারা ছাত্রদের পেছনে ছিল। ছাত্ররা সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশও করে। কিন্তু লন্ডন থেকে বিভ্রান্তিকর বার্তা দিলে তরুণদের ক্ষতি হবে। ফরহাদ বলেন, প্রয়োজনে তারেক রহমান চাইলে তিনি লন্ডনে গিয়ে কথা বলবেন। তিনি আরও বলেন, লন্ডনে কার সঙ্গে কথা বলতে হবে, কোন আইনজীবীর কাছে যেতে হবে, প্রয়োজনে সে ব্যবস্থা করা হবে। তারেক রহমানকে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ উলেস্নখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, দলের মধ্যে বিরোধ করা যাবে না। বিএনপির দুটি ধারা। একটি ধারা এ সরকারের পক্ষে। আরেকটি ধারা এটা বিরক্ত করছে। তিনি আশা করেন, বিএনপির দলীয় বিভেদ বাইরে আসবে না। তারেক রহমান সহযোগিতা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। ফরহাদ মজহার বলেন, এখনো শেখ হাসিনার সংবিধান চালুর চেষ্টা চলছে। ড. ইউনূসকে জনগণের প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। সবাই মিলে গণঅভু্যত্থানের মাধ্যমে তাকে নির্বাচিত করা হয়েছে। যারা এ বিপস্নবে অংশ নিয়েছেন, তাদের একটি জাতীয় কাউন্সিল হবে। সেখানে বিএনপিও থাকবে। সেখানে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন হবে। বিএনপির প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে গঠনতন্ত্র তৈরি হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করা। নানা ষড়যন্ত্র চলছে উলেস্নখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, বিএনপিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। ভারত জানে যে বন্দিবিনিময় চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে যেকোনো সময় খুনি হিসেবে বাংলাদেশ চাইতে পারে। তারা দিতে বাধ্য। ১৫ ও ২১ আগস্ট একটা গণহত্যার পরিকল্পনা ছিল। এসব রুখে দেওয়া গেছে। যেকোনো মুহূর্তে ভারত কিন্তু এখানে গণহত্যা করতে পারে। নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা যাবে না। সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ার উলস্নাহ চৌধুরী সরকারের কিছু দায়িত্বের কথা উলেস্নখ করেন, তা হলো জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা, জুলাই-আগস্ট হত্যাকান্ডের বিচার করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা, গণমুখী শিক্ষানীতি তৈরি, দুর্নীতি দূর করা। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।