জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন

'১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত ৬৫০ জনের মৃতু্য'

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও সরকার পতন কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এই সময়কার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশন। নিহতদের মধ্যে ৪ আগস্ট পর্যন্ত চারশোর কাছাকাছি মারা গেছেন। বাকি প্রায় ২৫০ জন ৫ ও ৬ আগস্ট নিহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে। 'বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অস্থিরতা বিষয়ে প্রাথমিক বিশ্লেষণ' শীর্ষক ১০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত হয়। এদিন প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক বার্তায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, বাংলাদেশের পালাবদল মানবাধিকার ও আইনের শাসনের ওপর ভিত্তি করে অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এক ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে। 'মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা এবং যারা এর শিকার তাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই মূল কাজ। পরিস্থিতি উত্তরণে জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে।' এই প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও বিস্তৃত পরিসরে তদন্তের কথা উলেস্নখ করেন মি. তুর্ক। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে মধ্য জুন থেকে শুরু হওয়া ছাত্র বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তত ৩২ শিশুসহ শত শত মানুষ হতাহত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। অতিরিক্ত বল প্রয়োগ, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনকে কেন্দ্র করে মানবাধিকার পরিস্থিতিও বর্ণিত হয়েছে রিপোর্টে। কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক পক্ষসমূহ, অন্তর্র্বর্তী সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বেশ কিছু সুপারিশও করা হয়েছে। অন্তর্র্বর্তী সরকারকে সহায়তায় প্রস্তুত জাতিসংঘ এদিকে, প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তী সরকার ও জনগণকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্র ফারহান হক বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সংস্থাটির মহাসচিবের মুখপাত্রের কার্যালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশে নতুন করে বিক্ষোভ ও সহিংসতা নিয়ে তার প্রশ্ন। এবার বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেতার মৃতু্যর দিনকে স্মরণ করার চেষ্টা ঘিরে শিক্ষার্থী বিক্ষোভকারী কর্তৃক এ কাজ হয়েছে। তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পিতা। এসব প্রতিবাদ নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের কোনো মন্তব্য আছে কি? জবাবে ফারহান হক বলেন, মন্তব্য মূলত একই রকম, যা তারা আগের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ক্ষেত্রে বলেছেন। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে তারা সবাইকে উৎসাহিত করছেন। তারা নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি এই আহ্বান জানান, যাতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে জড়িত কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ব্রিফিংয়ে আরেক সাংবাদিক বলেন, সাবেক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেখামাত্র গুলির নির্দেশের জেরে বাংলাদেশে যে নৃশংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্তে আগামী সপ্তাহে দেশটিতে যাবে জাতিসংঘের একটি দল। এ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মত কী? জবাবে ফারহান হক বলেন, এই দলটির কাজ কী, তা তাদের দেখতে হবে। এই পর্যায়ে দলটি সম্পর্কে তার কোনো মন্তব্য নেই।