বিএনপি অফিসে অভিযান

আইজিপিসহ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২ মামলা

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে এবং দুই বছর আগে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে 'পুলিশি অভিযানের নামে লুটপাট ও ডাকাতির' অভিযোগে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল মামুন ও ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদসহ ৩০ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় দুটি অভিযোগ দায়ের করেছে বিএনপি। দলটির 'মামলা তথ্য ও সংরক্ষণ' বিষয়ক কর্মকর্তা সালাহ উদ্দীন খান বুধবার সকালে পল্টন মডেল থানায় অভিযোগ দুটি দায়ের করেন। থানার ওসি সেন্টু মিয়া অভিযোগগুলো গ্রহণ করেন। সালাহ উদ্দীন খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, 'আপনারা জানেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পুলিশ অফিসাররা অনেক মিথ্যা মামলা দিয়েছে, হয়রানি করেছে, আমাদেরকে গুম করেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের একটি ঘটনা নিয়ে এসেছি- হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান, বিপস্নব কুমার সরকার তারা আমাদের অফিসের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আমাদের অফিসের সব মালামাল নিয়ে যায়। প্রায় ৪৭ লাখ টাকার মালামাল ডাকাতি করেছে। আর তিন লাখ ৫০ টাকার মালামাল নষ্ট করেছে। সেই সংক্রান্ত একটা মামলার অভিযোগ আজকে আমরা এখানে এফআইআর জমা দিয়েছি। দ্বিতীয়টা ১৬ জুলাই। সেদিন ডিবির হারুন অর রশীদ, ডিএমপির মেহেদী হাসান, বিপস্নব কুমার সরকার তারা অস্ত্র তৈরি করার হাতিয়ারসহ বিভিন্ন অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ নিয়ে আমাদের কার্যালয়ে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্যারের কক্ষে রাখে, তৃতীয় তলায় অবৈধ বোম রাখে। একটা নাটক সাজিয়ে তারা বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। এই যে তারা (পুলিশ কর্মকর্তারা) অবৈধ অস্ত্র, গোলা বারুদ, বোম রাখল, কার্যালয়ের বাইরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভয়ভীতি দেখাল, তার একটি অভিযোগ নিয়ে আমরা এসেছি। আমরা ডিউটি অফিসার এসআই মিজানুর রহমানের সাথে কথা বলেছি। পরে ওসি সেন্টু মিয়া অভিযোগগুলো গ্রহণ করেছেন। মামলা নম্বর ১ ও ২।' পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ, ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল আলম, হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেররিমজম) আসাদুজ্জামান, যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) খন্দকার নুরন্নবী, সনজিত কুমার রায়, যুগ্ম পুলিশ কমিশার (ডিএমপি) বিপস্নব কুমার সরকার, মেহেদী হাসান, উপ-পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন) তারিক বিন রশিদ, উপ-পুলিশ কমিশনার (মতিঝিল জোন) হায়াতুল ইসলাম খান, এডিসি (সোয়াট টিম) জাহিদুল ইসলাম, এসি (মতিঝিল জোন) গোলাম রুহানী, পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন মিয়া, এসআই (পল্টন মডেল থানা) মিজানুর রহমানকে এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে। একটি মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ প্রবেশ করে 'লুটপাট ও ভাঙচুরের' ঘটনা ঘটায়। এজাহারে বলা হয়, 'ডাকাতি' যাওয়া মালামালের দাম ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ক্ষতির পরিমাণ তিন লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা। এ মামলায় পুলিশ প্রধানসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলায় বলা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই ডিবি কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সাদা পোশাকের পুলিশ নয়া পল্টনে বিএনপি অফিসে প্রবেশ করে এবং বাইরে আওয়ামী লীগের 'সশস্ত্র ক্যাডাররা' অস্ত্র-গোলা বারুদ, বাঁশের লাঠিসোটা, রড, পিস্তল নিয়ে মহড়া দেয়। তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয় তছনছ করে এবং অবৈধ অস্ত্র রেখে দেয় ভেতরে। তারা দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ মহানগর নেতৃবৃন্দকে আসামি করে 'মিথ্যা' মামলা দায়ের করে। এ মামলায় হারুন অর রশীদ ছাড়াও ডিএমপির ১৬ জন কর্মকর্তা নাম দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন, উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মুহিত কবির সেরনিয়াবাত, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আফসার উদ্দিন খান, সাইফুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ কমিশনার এরশাদুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক কবির হোসেন চৌধুরী, এসআই মনিরুজ্জামান, নুরুল ইসলাম, ফরমান আলী, এএসআই স্বপন মিয়া, রেজাউল করীম, এরশাদ আলী, রবিউল ইসলাম, ইব্রাহিম শেখ, কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম, খোরশেদ আলম ও মেহেদী হাসান মাসুদ। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়েরের সময় ছাত্রদলের সাবেক নেতা শরীফুল ইসলাম শাওন, তারেক আহমেদ ও মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।