কেউ অন্যায় করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি
প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
বিচারক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ অন্যায় বা শিষ্টাচার লঙ্ঘন করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
সোমবার আপিল বিভাগের ১ নম্বর বিচারকক্ষে তাকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
এদিন বেলা পৌনে ১১টার দিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাম্প্রতিক ঘটনায় নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি ও উপস্থিত আইনজীবীরা।
সকাল সাড়ে ১০টায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরুর কথা থাকলেও এর আগেই আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় এজলাস কক্ষ। অনেকে ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রথমেই অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বক্তব্য দেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, 'কেউ ভালো কাজ করলে তাকে পুরস্কৃত করা হবে। কিন্তু কোনো ধরনের বিচু্যতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এর ফলে সংঘটিত গণ-অভু্যত্থানের কারণ আপনারা সবাই অবগত। এই মুহূর্তে আমরা এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি।'
তিনি আরও বলেন, 'বিগত বছরগুলোতে বিচারপ্রক্রিয়ায় আমাদের
বিচারবোধ, ন্যায়বিচারের মূল্যবোধকে বিনষ্ট ও বিকৃত করা হয়েছে। সততার বদলে শঠতা, অধিকারের বদলে বঞ্চনা, বিচারের বদলে নিপীড়ন, আশ্রয়ের বদলে নির্যাতনকে স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত করা হয়েছে। অথচ এ রকম সমাজ ও রাষ্ট্র আমরা চাইনি। এই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আমাদের নতুন যাত্রা শুরু করতে হবে।'
অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আপনারা কোনো ধরনের অন্যায়, চাপ ও ভয়ভীতির আশঙ্কা করবেন না। নির্ভয়ে, নিষ্ঠার সঙ্গে বিচারিক কাজ পরিচালনা করুন। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে ভগ্নদশা থেকে বিচার বিভাগও মুক্ত নয়। কিন্তু ছাত্র-জনতার বিজয়ের এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ আমাদের সামনে এনে দিয়েছে। আমরা যেন এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পারি।'
এর আগে সকাল সাতটার দিকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি এবং সকাল ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি। এ সময় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের সব বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন।
রোববার বঙ্গভবনের বাংলাদেশের ২৫তম বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন রেফাত আহমেদ। তাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। গত শনিবার ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে প্রধান বিচারপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ান ওবায়দুল হাসান। ওইদিনই রেফাত আহমেদকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়।