স্বেচ্ছাসেবক-যুবলীগের দুই নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

শরীয়তপুর সদর ও ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে কুপিয়ে ও বগুড়ার ধুনটে যুবলীগের এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পৃথক এই দুই ঘটনায় অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই দুই নেতা মারা যান। উভয়কে বুধবার সন্ধ্যার পর দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। জানা যায়, বুধবার রাতে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরকুমারীয়া ইউনিয়নের গনি মোলস্নার কান্দি এলাকার আব্দুল হাই মোলস্নার ছেলে ও চর কুমারিয়া ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. ফারুক মোলস্নার (৪৫) বাড়িতে ঢুকে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। নিহতের ছোট ভাই মামুন মোলস্না ও তার ছেলে মহসিন মোলস্না বলেন, তারা বাড়িতে ঢুকে ফারুক মোলস্না, তার ছোট ভাই ফরহাদ মোলস্না, সুরুজ মোলস্না, আয়শা বেগম, পান্না আক্তার, মিজান মোলস্না ও বাবুল মোলস্নাসহ ১৫জনকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। এরপর দুর্বৃত্তরা তাদের বাড়িতে লুটপাট ও ভাঙচুর করে করে ১৫টি বসতঘরে আগুন দিয়ে চলে যায়। আহতদের উদ্ধার করে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মো. ফারুক মোলস্নাকে মৃত ঘোষণা করেন। ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের চিকিৎসক আনিকা বলেন, 'স্বজনরা মো. ফারুক মোলস্নাকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিয়ে এসেছিল। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃতু্য হয়।' এছাড়া তার ভাই ফরহাদ মোলস্নাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের ভাই ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজ মোলস্না অভিযোগ করে বলেন, 'আমরা রাজনীতি করার সময় কারো কোনো ক্ষতি করিনি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের লোক আমার ভাইকে মেরে ফেললো। স্থানীয় সম্রাট মোলস্না, অশ্রম্ন, অনিক মোলস্না, মনির মোলস্না- ওরা আমার ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়া কোপাইছে। আমার আরেক ভাইয়ের অবস্থাও খুব খারাপ, মনে হয় সেও বাঁচবে না। ওরা আমাগো বাড়িঘর সব লুটপাট করে জ্বালাই দিছে। আমরা ওগো বিচার চাই।' এদিকে, বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আল-আমিন (২৪) নামে যুবলীগের এক নেতাকে বুধবার পিটিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি ধুনট পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরধুনট গ্রামের ভুলু মিয়ার ছেলে। তিনি ধুনট পৌর যুবলীগের প্রস্তাবিত আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তদের লাঠির আঘাতে আবু হানিফ (২৩) নামে এক ব্যবসায়ী আহত হন। তিনি একই এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে। জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যার দিকে ব্যবসায়ী আবু হানিফের মোটর সাইকেলের পেছনে বসে নিজ বাড়ি থেকে ধুনট শহরের দিকে রওনা হন আল-আমিন। পথে ধুনট-গোসাইবাড়ী পাকা সড়কের ইছামতি নদীর চরধুনট সেতু এলাকায় পৌঁছালে সামনের দিক থেকে আসা দুর্বৃত্তরা ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান থেকে নেমে তাদের মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। এরপর আল-আমিনকে পিটিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়। এ সময় আবু হানিফের চিৎকারে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আল-আমিনকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বগুরার শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালে তার মৃতু্য হয়। ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, 'পিটিয়ে একজনকে হত্যার ঘটনা শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আইনি কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা এখনও সঠিক করে বলতে পারছি না।'