অব্যাহত সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে
প্রকাশ | ০৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
দেশে অব্যাহত সহিংসতায় বিভিন্ন জেলায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। উদ্বেগজনক এ পরিস্থিতির মাঝে খোদ পুলিশ বাহিনী নিজেদের নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানানোয় দুষ্কৃতকারীরা আরও বেপয়োরা হয়ে উঠেছে। রাজধানীর হাতিরঝিলে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার বিকালে হাতিরঝিলের মধুবাগসংলগ্ন ব্রিজের নিচ থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, বিকাল ৪টার দিকে লেকের পাড়ে লাশটি তোলা হলে শত শত মানুষ ভিড় করে। যুবকের মাথায় ও বুকে গুলির আঘাত রয়েছে। পকেটে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম লেখা রয়েছে বাপ্পি আহমেদ। পিতার নাম মো. সাহিদ আহমেদ। জন্ম তারিখ ৩ জানুয়ারি, ১৯৮৬ সাল। ঠিকানা রয়েছে মিরপুর পলস্নবীর সেকশন-১১, বস্নক-এ।
মধুবাগ এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল জানান, মানুষের ভিড় দেখে লাশ দেখতে এসেছেন। এই যুবকের লাশ পচে ফুলে উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সোমবার রাতে গুলিবিদ্ধ লাশটি হাতিরঝিলে ফেলা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।
এদিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে লেকের পাড়ে উঁচু পেভমেন্টে মঙ্গলবার সকালে চারটি লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ইমরান নামে এক পথশিশু জানায়, সোমবার বিকালে বঙ্গবন্ধু ভবনে ভাঙচুরের সময় সে এখান থেকে ছোট ছোট রড কুড়াতে ঢুকে। তখন হাতে ব্যান্ডেজওয়ালা (চার লাশের একটি) তরুণকে ভেতরে জিনিসপত্র কুড়াতে দেখেছিল। সকালবেলা দেখে, এখানে তার লাশ পড়ে আছে। মঙ্গলবার সকালে সেখানে আশপাশের মানুষের জটলা দেখা গেছে। তারা বলছিলেন, পুলিশ নেই, লাশ কে উদ্ধার করবে?
সোমবার বিকাল ৪টার দিকে বঙ্গবন্ধু ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে বাড়িটিতে আগুন জ্বলতে থাকে। আন্দোলনকারীরা ঐতিহাসিক এই বাড়িতে যখন আগুন ধরিয়ে দিচ্ছিল, তখন তারা বিভিন্ন সেস্নাগান দিচ্ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রাবাদের দিক দিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে তারা চারদিকে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন। যেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় সেই প্রতিকৃতি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। বই বিক্রয়কেন্দ্র ও বাড়ির সবগুলো রুমও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট আর কিছু নাই, দেয়াল; জানালা সব পুড়ে গেছে। ওই জাদুঘরে রাখা বই, রড, নির্মাণ সামগ্রীসহ অক্ষত যেসব জিনিস রয়েছে, সেগুলো দুষ্কৃতকারীরা লুট করে নিয়ে গেছে।
সাতক্ষীরায় ১৪ জন নিহত: প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে সাতক্ষীরায় হামলা ও
\হসহিংসতায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপির দুজন আছেন। বাকিদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। এ সময় একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সাতক্ষীরা সদর ও শ্যামনগর থানা এবং ট্রাফিক কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন, তার ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন, ভাইপো সজিব হোসেন, ভাগনে আশিকুর রহমান, স্বজন সাকের আলী ও গাড়িচালক শাহিন হোসেন।
এ ছাড়া আশাশুনি থানার কল্যাণপুর গ্রামের আদম আলী (২৮), কোলা গ্রামের আনাজ বিলস্নাহ (১৭) ও কুড়িকাউনিয়া গ্রামের আনাজ আলী (১৮), সদর উপজেলার বৈকারি গ্রামের আওয়ামী লীগের কর্মী আসাফুর রহমান (৪০), মৃগাডাঙ্গা গ্রামের তৌহিদ ইসলাম (৩০), সাইফুল ইসলাম (২৫), বিএনপির কর্মী জাহিদ হোসেন (২৮) ও ফারুক হোসেন (৩৫) নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েক হাজার লোক এক জোট হয়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেনের কল্যাণপুরের বাড়িতে হামলা করে। এ সময় জাকির বন্দুক দিয়ে গুলি করেন। গুলিতে ঘটনাস্থলেই আদম আলী, আনাজ বিলস্নাহ ও আনাজ আলী (১৮) মারা যান। এরপর জাকিরের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। তারা রাত আটটার দিকে জাকিরসহ তার পাঁচ স্বজনকে পিটিয়ে হত্যা করে। প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু দাউদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
একইভাবে গতকাল রাতে সদর উপজেলার বৈকারি গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী আসাফুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করে। রাত নয়টার দিকে মৃগাডাঙ্গা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে মৃগাডাঙ্গা গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী তৌহিদ ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, বিএনপির কর্মী জাহিদ হোসেন (২৮) ও ফারুক হোসেন নিহত হন। বৈকারি ইউপির চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা শহরে আওয়ামী লীগ নেতা আবু আহমেদ, ফিরোজ কামাল, লায়লা পারভিন, তামিম আহমেদ, সুব্রত ঘোষ, আবদুল মান্নান, তজুলপুরের সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন, বৈকারি গ্রামের আলী হোসেন, নূরুল ইসলাম, ইউনুস আলী, আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ঘোষ সনৎ কুমার, প্রণব ঘোষ, বিশ্বজিৎ সাধু, জাকির হোসেন, শেখ নূরুল হক, কলারোয়ার ফিরোজ আহমেদ, আমিনুল ইসলাম, মজনু চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, শ্যামনগরের অসিম কুমার মৃধা, উৎপল মন্ডল, মলয় মন্ডল, আবদুল মুজিদ, রবিউল ইসলাম, এজাজ আহমেদ, সেলিনা সাঈদ, সেলিম রেজা, মতিয়ার রহমান, সুফিয়ান সফিকুল ইসলাম, আশাশুনির রাজেশ্বর দাস, পুলিশ কর্মকর্তা হারুন, দেবহাটার নজরুল ইসলামের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। তাদের কারও কারও বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে সাতক্ষীরা সদর থানা, ট্রাফিক কার্যালয় ও শ্যামনগর থানায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। একাধিক সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা মুঠোফোনে তাদের আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন। স্থানীয় থানাগুলোয় কোনো পুলিশ সদস্য না থাকায় তারা কোথাও জানাতেও পারছেন না।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির বলেন, কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। পরিস্থিতির উন্নতির চেষ্টা চলছে। সবাইকে ঘরে ফিরে যেতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
নাটোরে ৪ অগ্নিদগ্ধ লাশ : সাবেক সংসদ সদস্যের পুড়িয়ে দেওয়া বাসভবন থেকে চারটি অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নাটোর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাসভবন জান্নাতি প্যালেস থেকে চারটি অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে শহরের কান্দিভিটায় পুড়ে যাওয়া নাটোর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাসভবন জান্নাতি প্যালেসে ভেতরে লাশগুলো পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা। পরে নিহতদের স্বজনরা গিয়ে লাশগুলো শনাক্ত করে নিয়ে যান। তবে লাশগুলো উদ্ধার ও শনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যকে সেখানে দেখা যায়নি।
নিহতরা হলেন নাটোর সিটি কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খানের ছেলে আকিব খান, তালতলা এলাকার বকুল হোসেনের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী সিয়াম হোসেন, বড়গাছা এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে শফিকুল ইসলাম মোহন ও মলিস্নকহাটি এলাকার ফজের আলীর ছেলে ইয়াসিন আলী।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার বিকালে সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাসভবন জান্নাতি প্যালেস ও তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধরা।
স্থারীয়রা জানান, এ সময় চারজন অতি উৎসাহী বা লুটপাটের উদ্দেশ্যে জান্নাতি প্যালেসে ঢুকে যায়। কিন্তু পরে আগুনের কারণে তারা বের হতে না পেরে ভেতরে আটকা পড়ে যান।
এছাড়া নাটোরের সিংড়ায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলকের বাসায় ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় মালামাল লুট করা হয়। সোমবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সিংড়া পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসাও ভাঙচুর করা হয়।
সিংড়ার স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, শহরে পলকের ছবি সম্বলিত সাইনবোর্ডও ভাঙচুর করে শত শত বিক্ষুব্ধ জনতা। প্রতিমন্ত্রী পলকের বাসার সামনে একটি মোটর সাইকেলে আগুন দেয় তারা।
এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলামের বাসা, অপর যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তহিদুল ইসলামের বাসা ও কার্যালয় ভাঙচুর করে মানুষ। সোমবার বিকালে নাটোরের মেয়র উমা চৌধুরী জলি এবং নাটোরের জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। লালপুর, বাগাতিপাড়া, গুরুদাসপুর ও নলডাঙ্গাসহ নাটোরের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর করে আওয়ামী বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন ও তার গাড়িচালক আক্তার হোসেনকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর হিরনের লাশ শহরের কেন্দ্রস্থল পায়রা চত্বরে টাঙিয়ে রাখা হয়। সোমবার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্থানে হামলা করে আগুন ধরিয়ে দেয়। নিহত চেয়ারম্যান জেলা সদরের ৯নং পোড়াহাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছিলেন।
একই সময় জেলার কালীগঞ্জে ২ জন আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছে। বিকালে কালীগঞ্জ শহরের ঢাকালে পাড়ায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে রাব্বি হোসেন (১৫) ও মুজাহিদ (১৬) নামে দুই কিশোর নিহত হয়েছে। মৃত রাব্বি উপজেলার ফয়লা ও মুজাহিদ খয়েরতলা এলাকার বাসিন্দা।
এছাড়া ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপুর বাসভবনে হামলা চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুন্নেছা মিকি, পৌর মেয়র সহিদুজ্জামানের বাড়ি ভাঙচুর করে।
ঝিনাইদহে চেয়ারম্যানসহ ৪ জন নিহত : ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন ও তার গাড়িচালক আক্তার হোসেনকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর হিরনের লাশ শহরের কেন্দ্রস্থল পায়রা চত্বরে টাঙিয়ে রাখা হয়। সোমবার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্থানে হামলা করে আগুন ধরিয়ে দেয়। নিহত চেয়ারম্যান জেলা সদরের ৯নং পোড়াহাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছিলেন।
একই সময় জেলার কালীগঞ্জে ২ জন আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছে। বিকালে কালীগঞ্জ শহরের ঢাকালে পাড়ায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে রাব্বি হোসেন (১৫) ও মুজাহিদ (১৬) নামে দুই কিশোর নিহত হয়েছে। মৃত রাব্বি উপজেলার ফয়লা ও মুজাহিদ খয়েরতলা এলাকার বাসিন্দা।
এছাড়া ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম অপুর বাসভবনে হামলা চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুন্নেছা মিকি, পৌর মেয়র সহিদুজ্জামানের বাড়ি ভাঙচুর করে।
এদিকে ঝিনাইদহে বিক্ষোভকারীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয় হোন্ডা মোটর সাইকেলের শোরুম। আগুনে নতুন-পুরাতন মিলে অর্ধশত মোটর সাইকেল পুড়ে যায়। নষ্ট হয় শোরুমে থাকা সকল কাগজপত্র ও নগদ টাকা। সোমবার সন্ধ্যায় শহরের এইচএসএস সড়কের জননী অটোতে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় ছাত্রজনতার ঢল নামে। তারা রাস্তায় এসে বিজয় মিছিল করতে থাকে। অনেকে মিষ্টি বিতরণ করে। এদিন জেলার ৩ এমপিসহ ৬ উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ভাইস চেয়ারম্যান ও ৬৬ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের দেখা যায়নি। তারা সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। ফলে মঙ্গলবার জনপ্রতিনিধিদের কেউ অফিস করেনি।
গাজীপুরে পুলিশসহ ২ জনের লাশ: গাজীপুরে এক পুলিশ ও এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নগরীর বাসন থানার সামনে থেকে মঙ্গলবার ভোরে পুলিশ সদস্যের এবং কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আনসার একাডেমির পাশের লেক থেকে যুবকের লাশ পাওয়া যায়।
নিহত পুলিশ সদস্যের নাম আবদুল মালেক (৪৫)। তিনি গাজীপুর নগরীর বাসন থানার কনস্টেবল ছিলেন। ওই যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার বয়স আনুমানিক ৩০ বছর।
পুলিশ বলছে, সোমবার রাতে শতাধিক দুর্বৃত্ত 'ভুয়া' 'ভুয়া' বলে একটি মিছিল নিয়ে থানার সামনে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে থানায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তখন পুলিশ সদস্যরা থানার পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে গেলেও কনস্টেবল আবদুল মালেককে ধরে পিটুনি দেয় হামলাকারীরা। এ সময় তার মৃতু্য হয়।
বাসন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, 'নিহতের লাশ থানার সামনে পড়ে ছিল। তার পরনে পুলিশের পোশাকটিও ছেঁড়া ছিল।'
এদিকে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আনসার একাডেমিতে গত দুইদিন আনসার ও দুর্বৃত্তদের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে সোমবার দুজনের মৃতু্য হয়।
এলাকাবাসী জানায়, সকালে একাডিমের সামনে রূপনগর এলাকায় একটি লেক থেকে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। তাৎক্ষণকিভাবে তাকে কেউ চিনতে পারেনি।
গাজীপুর যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা: মহানগরীর টঙ্গীর যুবলীগ নেতা ইসমাইল (৩৫) সোমবার রাতে গণপিটুনিতে মারা গেছে। হত্যাকান্ড, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক কারবারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের একাধিক মামলার আসামি ইসমাইল গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। এলাকাবাসী জানান, ইসমাইল যুবলীগে যোগ দেওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এলাকার সাধারণ মানুষ ছিল তার কাছে জিম্মি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের খবরে উৎফুলস্ন ও বিক্ষুব্ধ জনতা গত সোমবার রাত ৯টায় ইসমাইলকে টঙ্গীর আউচপাড়া সুরতরঙ্গ রোডে গণপিটুতিতে ঘটনাস্থলেই তার মৃতু্য হয়। ইসমাইল সাবেক অবিভক্ত টঙ্গী থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তিনি টঙ্গী কলেজ গেট ও চেরাগআলী এলাকায় কয়েকটি ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ করতেন। এছাড়াও এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ী, মার্কেট ও বাড়ির মালিকরা তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। বাসাবাড়ির নির্মাণ কাজে বাধা দিয়ে চাঁদাবাজি এবং দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় বিচার-সালিশের নামে মানুষকে হয়রানি ও জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায় করতো। স্থানীয়রা জানান, সন্ত্রাসী ইসমাইল একসময় পুলিশের কনস্টেবল দেখলেও পালিয়ে যেতেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদানের পর পুলিশ দেখলে পালাবে তো দূরের কথা বরং থানায় নিয়মিত তদবির বাণিজ্যে ব্যস্ত থাকতো। এমনকি থানার অফিসার ইনচার্জসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে করমর্দন করে ভাই বলে সম্বোধন করতো।
যশোরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪: যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচতারকা হোটেল 'জাবির ইন্টারন্যাশনালে' অগ্নিসংযোগে নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। নিহতরা সবাই পুরুষ। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছর মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সোমবার বিকালে বিজয় মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ পাঁচতারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের পর হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে হামলা চালায় বিজয় মিছিলে থাকা বিক্ষুব্ধ জনতার একাংশ। দুই শতাধিক আন্দোলনকারী হোটেলটির বেজমেন্টে ঢুকেই সিঁড়ি বেয়ে ১৪ তলা পর্যন্ত উঠে যায়। এক পর্যায়ে নিচে থাকা বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন যুবক পেট্রোল দিয়ে আগুন দিতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে তারা কয়েকটি ফ্লোরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে দাউ দাউ করে পুরো ১৪ তলাই কয়েক মিনিটের মধ্যে জ্বলতে শুরু করে। বিকাল চারটার দিকে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনেন রাত দশটার দিকে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ২৪ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৩ জন। তবে কোনো মাধ্যম থেকেই হতাহতদের নাম-পরিচয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র মিলছে না।
হোটেলের ভেতর প্রবেশকরা আন্দোলনকারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিচের ফ্লোরগুলোতে আগুন ধরে যাওয়ায় উপরে থাকা বেশিরভাগ আন্দোলনকারী বের হতে পারেননি। ফলে আগুনের ধোঁয়ায় ও অক্সিজেন সংকটে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আটকে থেকে তারা মারা গেছেন।
যশোর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে উদ্ধার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ২৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আর দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২১ জনের লাশ পেয়েছি। আহত ২৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বুধবার সকাল ৮টায় আবার মৃতের সংখ্যা আপডেট জানানো হবে।'
যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, নিহত ও আহতদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে আছে হাসপাতাল চত্বর। আন্দোলনে এসে অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। ফলে সেই নিখোঁজদের স্বজনরা হাসপাতাল ও মর্গের সামনে ভিড় করতে দেখা গেছে। তবে হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ বা প্রশাসনের কাউকে দেখা যায়নি। আন্দোলনরতকারীদের অনেকেই এখন হাসপাতালে থাকতে দেখা গেছে। তারা মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর, হোটেল থেকে মরদেহ হাসপাতালে আনার সড়ক নিয়ন্ত্রণ করেছেন। সবাই হাতেই বাঁশ, রড ও দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। মরদেহ শনাক্ত হলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন নিহতের স্বজনরা।
মর্গের সামনে আহাজারি করতে দেখা যায় খড়িক এলাকার এক নারীকে (৪৫)। হোটেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন তার ভাইপো রাতুল (১৭)।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নারী বলেন, 'আমার কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সাথে আমিও আন্দোলনে এসেছিলাম। পরে বিকালে বিজয় মিছিলটি জাবির হোটেলের সামনে দিকে যেতেই অনেক ছেলে-মেয়ে হোটেলের মধ্যে প্রবেশ করে। আন্দোলনকারীদের ওই স্রোতের মধ্য দিয়ে আমার মেয়েও ঢুকে যায়। পরে আগুন লাগলে আমার মেয়েরে খুঁজতে আমিও ভেতরে প্রবেশ করি। প্রবেশ করে দেখি হোটেলে কয়েক যুবকরা পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। তাদের অনুরোধ করলাম এই ক্ষতি করিস নে বাপ! এর পরে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে হোটেল। পরে আহত অবস্থায় আমার মেয়েকে উদ্ধার করি। পরে শুনি আমার ভাইপো মারা গেছে।'
যশোর সিটি কলেজ থেকে আন্দোলনে অংশ নেওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও হোটেলে প্রবেশ করা মারুফ হোসেন বলেন, 'আমাদের আন্দোলনে কিছু উগ্র ছেলেরা ছিল। বিজয় মিছিলে তারা জাবির হোটেলে ঢুকে পড়ে। তাদের সঙ্গে অনেক সাধারণ আন্দোলনকারীরাও ঢুকে পরে। তারা মূলত জাবির হোটেল দেখতে গিয়েছিল। সিঁড়িতে উঠতে উঠতে তারা হোটেলের বিভিন্ন তলায় উঠে যায়। এদিকে ওদের সাথে থাকা উগ্র ছেলেরা আগুন ধরিয়ে দেয় বিভিন্ন তলাতে। তাদের বলতে শোনা যায়, আওয়ামী লীগের শাহীন চাকলাদার অনেক নেতাদের নির্যাতন করেছে, আওয়ামী লীগের শেষ নিশানা মুছে দিতে হবে।'
এ সময় সমস্ত হোটেলে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই আটকে পড়ে বিভিন্ন তলাতে। তিনি আরও দাবি করেন, 'হোটেলে বার থাকায় বারের অ্যালকোহলের কারণে আগুন বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। মূলত শিক্ষার্থীরা এই অগ্নিকান্ডের সাথে জড়িত না। বিভিন্ন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা উগ্র ব্যক্তিরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে এই শিক্ষার্থীর ভাষ্য।
শহরতলী সুজলপুর গ্রামের মফিজুর রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, 'আমার আল আমিনকে কেউ দেখেছেন। সে রাজ্জাক কলেজে পড়ে। কেন যে সে আন্দোলনে এসেছিল। বিকাল থেকে তার ফোনে ফোন দিচ্ছি, রিং যাচ্ছে অথচ ফোন ধরছে না। তার বন্ধুরা বলছে, আলামিনও জাবিরে উঠেছিল। সে এখন কোথায়। আলস্নাহ আলামিনকে বাঁচিয়ে দাও।'
এদিকে, শাহীন চাকলাদারের কাঁঠালতলা এলাকার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। শহরের চারখাম্বা মোড়ে অবস্থিত শেখ রাসেলের ভাস্কর্যও ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফেনীতে চার লাশ: ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলা থেকে দুই যুবলীগ নেতাকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে লাশ উদ্ধারের জন্য পুলিশকে খবর দিলেও তারা আসেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলা থেকে নিহতের স্বজনেরা লাশ দুটি উদ্ধার করেছে।
সোনাগাজীতে উদ্ধার হওয়া লাশটি মুশফিকুর রহমানের। তিনি ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সাহেবেরহাট এলাকার একটি খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন জানান, সকালে সাহেবেরহাট এলাকায় খালের পানিতে লাশটি ভেসে আসে। পরে একটি সেতুর নিচে এসে লাশটি ঝোপের মধ্যে আটকা পড়ে। খবর পেয়ে নিহতের স্বজনেরা লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যান। এর আগে সকালের দিকে ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নে বাদশা মিয়া ওরফে কানা বাদশা (৪০) নামে এক যুবলীগ কর্মীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। তার মাথায় ও হাতে জখমের চিহ্ন ছিল। তাকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা এলাকাবাসীর।
উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের আফতাব বিবি বাজারে একটি করাতকলের (স'মিল) সামনে থেকে বাদশার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত বাদশা মিয়া বালিগাঁও ইউনিয়নের মধুয়্যাই গ্রামের ব্যাপারী বাড়ির আবুল খায়েরের ছেলে। স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সকালে লাশটি দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী নিহত বাদশার পরিবারে খবর দেন। পরে স্বজনেরা লাশটি উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
মাদারীপুরে শাহজাহান খানের বাড়িতে আগুন : শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে যাওয়ার খবরের পরেই মাদারীপুরের ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে শহরের ডিসির ব্রিজ এলাকায় জড়ো হয়। এ সময় কিছু দুর্বৃত্ত মাদারীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তার ভাই হাফিজুর রহমানের বাসা, সার্বিক হোটেল, সার্বিক কাউন্টার, আরেক ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ওবাইদুর রহমানের খানের বাসা ও অফিস কক্ষ ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দুর্বৃত্তরা পরে ঢাকা-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিমের বাসা ও মাতৃভূমি হোটেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে দুর্বৃত্তরা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আহম্মেদ ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নোবেল বেপারীর বাসা, তার ভাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।