বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১
অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন

অগ্নিগর্ভ গোটা দেশ, নিহত ৯৭

আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ গুলিবিদ্ধ পুলিশ-সাংবাদিকসহ দুই সহস্রাধিক মানুষ ২৭টি থানা-পুলিশ ফাঁড়ি ও রাজনৈতিক দলের অসংখ্য অফিস ভাঙচুর ও আগুন এক ডজন গার্মেন্ট কারখানা ভাঙচুর
যাযাদি রিপোর্ট
  ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
সর্বাত্মক অসহযোগের প্রথম দিন রোববার আন্দোলনকারীরা মিরপুর-১৪ নম্বর থেকে মিরপুর-১০ এর দিকে এগোলে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজের সামনে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এরপর মিরপুর-১০ নম্বর ও আশপাশের এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয় -স্টার মেইল

ক্ষোভের আগুনে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটাদেশ। দিনভর সংঘাত-সহিংসতায় ঝরেছে রক্ত, ঝরেছে তাজা প্রাণ। অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন রোববার রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৯৭ জনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এরমধ্যে সিরাজগঞ্জে থানা ঘেরাও করে পৈশাচিকভাবে ১৩ পুলিশ সদস্য এবং কুমিলস্নার দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ মহাসড়ক ফাঁড়ি ঘেরাও করে এক কনস্টেবলকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ বিভিন্নভাবে আহত হয়েছে পুলিশ, সাংবাদিক ও নিরীহ পথচারীসহ দুই সহস্রাধিক মানুষ। নিহতের মধ্যে ঢাকায় ৮ জন, সিরাজগঞ্জে ২৩ জন, ফেনীতে ৮ জন, লক্ষ্ণীপুরে ৮, মাগুরায় ৪ জন, পাবনায় ৩ জন, মুন্সীগঞ্জে ৪, বগুড়ায় ৫, রংপুরে ৫, বরিশালে ২, কুমিলস্নায় ৩, সিলেটে ৪, হবিগঞ্জে ১, নরসিংদীতে ৬, কিশোরগঞ্জে ৪, ভোলায় ৩, জয়পুরহাটে ১, শেরপুরে ৩, সাভারে ১ ও কেরানীগঞ্জে ১ জন। সংঘাত-সংঘর্ষ চলাকালে ২৭টি থানা-ফাঁড়ি-পুলিশ বক্স, বিপুল সংখ্যক রাজনৈতিক কার্যালয়, ডজনখানেক গার্মেন্টস কারখানা, হাসপাতাল, পত্রিকা অফিস এবং শতাধিক যানবাহন ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় সদর, জেলা সদর ও সিটি কর্পোরেশনে রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া এই সান্ধ্য আইন বলবৎ থাকবে। আজ সোমবার থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত টানা তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সারা দেশের নিরাপত্তা। তবে সেনা-বিজিবি'র পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীর তৎপরতার মাঝে ব্যাপক নাশকতা, ১৪ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা এবং গুলিতে বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃতু্যর ঘটনায় জনমনে চরম উদ্বেগ-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার অলিগলিতে দিনভর সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটায় জরুরি প্রয়োজনেও সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হওয়ার সাহস পায়নি। নাশকতার আশঙ্কায় অধিকাংশ দোকানপাট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা বন্ধ ছিল। দিনভর নগর সার্ভিস ও দূরপালস্নার যানবাহন চলাচল করেনি বললেই চলে। এদিকে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে শুরু হওয়া অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকার সিএমএম আদালত চত্বর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে শিক্ষার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। এ সময় অন্তত ২৫টি গাড়ি ভাঙচুরের পর তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া নাশকতাকারীরা। রোববার সকাল থেকেই উত্তরা এলাকায় আওয়ামী লীগসহ সরকার দলীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা পূর্বঘোষিত শান্তি সমাবেশ করতে জড়ো হন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা বিএনএস সেন্টার ও আজমপুর রাজউক কমার্শিয়ালের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিলে বিপরীত পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় সংঘর্ষে অন্তত ২২ জন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ৯ জন ও ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ধাওয়ার মুখে উত্তরা রাজলক্ষ্ণী কমপেস্নক্সের লতিফ এম্পোরিয়াম মার্কেটে আশ্রয় নেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যকরী পরিষদের সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম (৬২)। এ সময় আন্দোলনকারীরা সেখান গিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। আওয়ামী লীগ নেতার মৃতু্যর সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর \হনিয়েছিলেন। সেখানেই তাকে পিটিয়ে হত্যা করে আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে দুপুরে দেড়টার দিকে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার জিগাতলায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আব্দুলস্নাহ সিদ্দিকী (২৩) নামের এক শিক্ষার্থী। চিকিৎসকরা জানান, তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তিনি ঢাকার কাকরাইল এলাকার হাবিবুলস্নাহ বাহার ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। আব্দুলস্নাহ পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার এলাকার কলতা বাজারের বাসিন্দা। তার বাবার নাম আবু বকর। অন্যদিকে বিকালে ফার্মগেট এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে আহত হয়ে তৌহিদুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবক নিহত হন। তিনি মহাখালীর ডিএইট কনসালটেন্ট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী। গুরুতর আহত অবস্থায় বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তৌহিদুলের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অন্যদিকে মিরপুরে সংঘর্ষ চলাকালে মিরাজ হোসেন (২৩) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। সেখানকার স্থানীয় আজমল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অন্দিরা জানান, নিহতের বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মিরাজের মৃতু্য হয়েছে। তিনি মিরপুর ৬ নম্বরের এ বস্নকের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। বিকালে গুলিস্তান থেকে জহির উদ্দীন (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্যার সলিমুলস্নাহ মেডিকেল কলেজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে আনার অনেক আগেই তিনি মারা গেছেন। তার বাড়ি কুমিলস্নায়। এদিকে অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে নিহতদের লাশ নিয়ে শহীদ মিনার থেকে মিছিল শেষে রাজধানীর শাহবাগ থানায় আক্রমণের চেষ্টা চালায় আন্দোলনকারীরা। পরে সাউন্ডগ্রেনেড ও গুলি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তিনটি লাশ নিয়ে মিছিল করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যায় আন্দোলনকারীরা। লাশ তিনটি তারা শহীদ মিনারে রাখেন কিছুক্ষণ। পরে সোয়া ৬টার দিকে আন্দোলনকারীরা সেগুলো কাঁধে নিয়ে মিছিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হয়ে শাহবাগে যান। সেখানে শাহবাগ থানায় আক্রমণের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বাধে। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে শাহবাগ ত্যাগ করেন। এর আগে সকাল দশটার দিকে শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে শাহবাগ চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে প্রায় দুইশ' জনের একটি দল লাঠিসোটা নিয়ে শাহবাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালের পূবালী ব্যাংক প্রাইভেট লিমিটেডের গেটের দিকে অগ্রসর হয়। গেট ভেঙ্গে তারা ভেতরে ঢুকে পড়ে। সেখানে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসসহ অন্তত ২০টি গাড়ি ভাংচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দুপুর পর্যন্ত দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। এ সময় বিকট শব্দে গাড়ির চাকার বিস্ফোরণ ঘটে। আগুন এক পর্যায়ে হাসপাতালে লেগে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি মাঝারি আকারের গাড়ি আগুন নেভাতে শাহবাগে গেলে তা অবরোধের মুখে পড়ে। পরে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় গাড়িটি ভেতরে ঢুকতে পারে। দুপুর ২টার দিকে আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ করতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। হাসপাতালের কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম পুড়ে গেলেও চিকিৎসাধীনরা কেউ হতাহত হননি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই শত শত বিক্ষোভকারীরা ইটপাটকেল ও লাঠিসোটা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা জানালা ভাঙচুর করে। তারা প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে ঢুকেও ভাঙচুর চালায়। এরপর বিক্ষোভকারীদের আরেকটি গ্রম্নপ হাসপাতালটির কেবিন বস্নকের গেট ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে দুই দিকে থাকা সকল ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। হাসপাতালের ভেতরে থাকা ফার্মেসিতেও ভাঙচুর করে। ফার্মেসির সামনে থাকা কয়েকটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়। ফার্মেসির সঙ্গে থাকা হাসপাতাল ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে এনজিওগ্রাম, ইসিজি, ইকো, এক্সরে মেশিনসহ বহু চিকিৎসা সরঞ্জাম বিকল হয়ে পড়ে। এ সময় আতঙ্কে রোগীদের হাতজোড় করে বিক্ষোভকারীদের চলে যাওয়ার অনুরোধ করতে দেখা গেছে। ঠিক একই সময়ে শাহবাগ এলাকায় থাকা সকল সিসি ক্যামেরা ও পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়। তবে রাস্তার পূর্বদিকে থাকা বারডেম হাসপাতালে কোন ধরনের ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে ভাঙচুর: শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় ভয়ে সেখানে থাকা আনসার সদস্যরা নিরাপদে চলে যায়। সামনের দরজা জানালা ভেঙ্গে ফেলে। স্টিলের মোটা পাইপ খুলে তা দিয়েই ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। একইভাবে হাসপাতাল লাগোয়া শাহবাগ বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতেও ভাঙচুর চালানো হয়। পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের পুলিশ বক্সে আগুন:বিক্ষোভকারীদের একটি গ্রম্নপ সামনে দিকে গিয়ে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে থাকা পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। পরে তার দরজা খুলে সেখানে কাপড় ও রশি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। মিন্টো রোডে ভাঙচুর: বিক্ষোভকারীদের একটি গ্রম্নপ দুপুর তিনটার দিকে মিন্টো রোডের দিকে রওনা হয়। এ সময় তারা মিন্টো রোডে ঢুকতেই বাম দিকে থাকা পুলিশ বক্সটি ভাঙচুর করে। পরে শত শত পুলিশ পুরোরাস্তায় কাঁটাতারের বেরিকেড দিয়ে অবস্থান নেয়। আন্দোলনকারীরা পরে সেখান থেকে অন্যদিকে চলে যায়। মৎস্য ভবন: আন্দোলন পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের একটি দল মৎস্য ভবনের গেট ভেঙ্গে ফেলে। ভেতরে পার্কিং করে রাখা কয়েকটি পাজেরো জিপসহ অন্তত ৫টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সিএমএম কোর্টের সামনে পুলিশের গাড়িতে আগুন : বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুরান ঢাকার রায়সাহেব মোড় সংলগ্ন এলাকায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের সামনে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয়। বাড্ডা ও রামপুরায় সংঘর্ষ: বাড্ডা চৌরাস্তা মোড়, মেরুল বাড্ডা, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের সামনে, রামপুরা ও বনশ্রী এলাকার মূল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়। আন্দোলনকারীদের অধিকাংশই আফতাবনগর ইস্টার্ন হাউজিং আবাসিক এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে দিয়েছিলেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা আন্দোলনকারীরা। অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে বে হওয়ার কারণে অনেক যানবাহন ভাঙচুরের কবলে পড়ে। যাত্রাবাড়ী : দুপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে পুরোএলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ধাওয়া-পাল্টা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় শতাধিক মানুষ আহত হন বলে জানা গেছে। এদিন পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে সকাল থেকেই যাত্রাবাড়ীর ওয়ার্ডগুলোতে আওয়ামী-লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হন। পরে তারা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় দিকে যান। সেখানে আগে থেকেই ঢাকা মহানগর যুবলীগের ৫০নং ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিলেন। স্থানীয়রা জানান, শনিবার দিবাগত গভীর রাত থেকেই ওই এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। ভোরে প্রায় ৭ হাজার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের মিছিল যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার দিকে এলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষে অন্তত শতাধিক আহত হন। পরে ধাওয়া খেয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীরা চৌরাস্তা ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যান। আন্দোলনকারীদের মিছিল দেখে যাত্রাবাড়ী থানার মধ্যে অবস্থান নেয় পুলিশ সদস্যরা। আকাশে হেলিকপ্টারের টহল দিতে দেখা গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে