সংলাপের আহ্বান প্রত্যাখ্যান শিক্ষার্থীদের
প্রকাশ | ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে চলমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
শনিবার আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, 'সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার সংলাপে বসতে আমরা রাজি নই।'
এর আগে একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন আরেক সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামও। তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।
নাহিদ বলেন, যখন আমরা ডিবি হেফাজতে
ছিলাম, তখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে ডিবি হেফাজতে অনশন করেছিলাম।
জানা গেছে, সমন্বয়কদের সঙ্গে বসার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটিও করেছে আওয়ামী লীগ। যেখানে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
শুক্রবার রাতে গণভবনে এটি জরুরি বৈঠক হয়েছে। যেখানে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে একটি সূত্র থেকে জানানো হয়।
নাহিদ ইসলামের টেলিগ্রাম বার্তা : এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, 'সরকারের কাছে বিচার চাওয়া বা সংলাপে বসারও সুযোগ আর নেই। ক্ষমা চাওয়ার সময়ও পার হয়ে গেছে।'
টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় তিনি লিখেছেন, 'যখন সময় ছিল তখন সরকার বস্নক রেইড দিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করেছে, নির্যাতন করেছে। আখতার হোসেন, আরিফ সোহেলসহ রাজবন্দিদের কারাগারে রেখে আমরা কোনো ধরনের সমঝোতায় যাব না।'
তিনি লিখেছেন, '১৯ জুলাই আমরা কারফিউ ভঙ্গ করে শাটডাউন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমাদের সে বক্তব্য কোনো মিডিয়ায় প্রচার করতে দেওয়া হয় নাই। সে রাতে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম অত্যাচার করা হয় এ ঘোষণার জন্য এবং আন্দোলন প্রত্যাহার ও সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য জবরদস্তি করা হয়।'
'ছাত্রজনতা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিল? সরকার দমন-পীড়ন করে সেটিকে সংঘাত ও সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধ করে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এবার এরকম পরিস্থিতি হলে কারও জন্যই পরিণতি ভালো হবে না।'
নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, 'পরবর্তীতে ডিবি অফিস থেকেও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমাদের অনশন ও রাজপথে আন্দোলনের কারণে সে পরিকল্পনা সফল হয়নি।'
'আমরা এখনো শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে চাই। আমরা কোনো সহিংসতা, প্রতিহিংসা ও প্রাণনাশ চাই না। নিরাপত্তা বাহিনীকেও এজন্য সহযোগিতা করতে হবে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রাজপথে দেখা গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এর দায়ভার নিতে হবে, লিখেছেন নাহিদ ইসলাম।
'তবে রক্ত ঝরলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমরা ন্যায়বিচার ও জীবনের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। কোনো ধরনের দমন-পীড়ন, প্রোপাগান্ডা ও ষড়যন্ত্র করে এ আন্দোলন থামানো যাবে না।'