সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনে সহিংসতায় প্রাণহানির প্রতিক্রিয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এবার রাজপথে কর্মসূচি দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
আজ ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে এবং দেশের সব মহানগর এবং জেলায় জমায়েত কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবারের শোক মিছিল নেওয়া হয়েছে কাল; ওইদিন রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত মিছিল করবে ক্ষমতাসীন দলটি। শনিবার দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেন কাদের।
তিনি বলেন, 'একদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অন্যদিকে আমরা কোনো রকম মুখোমুখি অবস্থানে জড়াতে চাই না, সে কারণে সংঘাত হতে পারে এ ধরনের প্রোগ্রাম আমরা এড়িয়ে চলেছি।'
'আমরা এখন নতুনভাবে ৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, যদিও মৃতু্যর বেদনা, জন্মদিবসকে ছেপে চলে যায় শোকের কাছে। আমরা রোববার নতুন করে প্রোগ্রাম দিয়েছি।'
কোটা আন্দোলনে গত ১৮ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘর্ষে সরকারি হিসাবে দেড় শতাধিক মানুষের মৃতু্য, এরপর শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় দেশে এক বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সংঘাতের দায় দিয়ে সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করেছে, সরকারের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢুকে তারা ত্রাস তৈরি করেছিল। বিএনপিও সরকার পতনের চেষ্টা করছে বলেও মনে করছে ক্ষমতাসীন দল।
শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক কর্মসূচি চলছে, সেই সঙ্গে চলছে সংঘর্ষ, এর মধ্যে আওয়ামী লীগ রাজপথে সক্রিয় নয়, যদিও আগস্ট মাসজুড়ে প্রতি বছর কর্মসূচি থাকে তাদের।
বৈষম্যমূলক ছাত্র আন্দোলন এবার সরকারকে অসহযোগের ডাক দিয়ে পানি-বিদু্যৎ-গ্যাস বিলও বন্ধ করে দেওয়ার ডাক এসেছে। শনিবার রাতে প্রথমবারের মতো সরকার পতনের কথা বলেছেন সমন্বয়কদের একজন আবদুল হান্নান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনার ডাক দিয়েছেন, তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এই দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ফিরিয়ে এনেছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতে বিএনপি-জামায়াত অপচেষ্টা চালাচ্ছে।'
বিএনপি বারবার জনগণ দ্বারা 'প্রত্যাখাত' ও রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'যে কোনো আন্দোলন দেখলেই সেটাকে সরকার উৎখাতে নিয়ে যেতে উন্মুখ হয়ে থাকে। সরকার সব উসকানি ও নৈরাজ্য ধৈর্য, সংযমের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।'
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপস্নব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ছিলেন।