কোটা আন্দোলনে হতাহতের তদন্তে সহায়তায় 'প্রস্তুত' জাতিসংঘ

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সরকারি চাকরিতে কোটা আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশকে চাহিদা অনুযায়ী সহায়ত দিতে প্রস্তুত জাতিসংঘ। বুধবার নিউ ইয়র্ক সময় বিকালে এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা চাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, 'আমরা জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেছি।' এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশে সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনায় একটি তথ্যানুন্ধান মিশন পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনার ফলকার টুর্ক। ব্রিফিংয়ের শুরুর দিকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি পড়ে শোনান জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সহিংসতার মধ্যেও বিষয়টি সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া জরুরি, বাংলাদেশে মানবিক সংকট চলছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালসহ বিভিন্ন জরুরি পরিস্থিতির শিকার মানুষদের জাতিসংঘ, জাতিসংঘের অংশীদাররা অব্যাহতভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছর ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। ইন্টারনেট ও ব্যাংক বন্ধ, কারফিউয়ের মতো অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও জাতিসংঘের অংশীদাররা তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। গত জুন মাসে জাতিসংঘ, জাতিসংঘের অংশীদাররা ১২ লাখ মানুষকে সহায়তার জন্য ৮ কোটি ডলারের মানবিক সাড়া পরিকল্পনা চালু করেছে। বিবৃতিতে ঘূর্ণিঝড় দুর্গত মানুষ এবং কক্সবাজারে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে মানবিক সহায়তার নানা তথ্য তুলে ধরে হয়। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের কার্যালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ সরকার কি জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছে? স্বাধীনতার অভাব থাকা রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানের তদন্তে জাতিসংঘ কি সহায়তা করবে? নাকি জাতিসংঘ নিজস্ব তদন্তের প্রস্তাব দেবে? জবাবে মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, প্রশ্নে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। যেকোনো দেশের সরকার যেকোনো বিষয়ে সাহায্য চাইলে জাতিসংঘ অবশ্যই সব সময় তা করতে প্রস্তুত। আর কীভাবে সেই সহায়তা সবচেয়ে ভালোভাবে করা যায়, তা জাতিসংঘ দেখে। এ ধরনের বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘের লেজিসলেটিভ বডির (আইনপ্রণয়নকারী পরিষদ) অনুমতি প্রয়োজন। একই সাংবাদিক আরেক প্রশ্নে বলেন, এই ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র গাজায় সাংবাদিক নিহত হওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে অন্তত তিনজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেউ জানেন না, তারা কোথায়। তাদের একজন তার (প্রশ্নকারী সাংবাদিক) সাবেক সহকর্মী সাঈদ খান। তিনি কোথায় আছেন, তা কেউ জানেন না। জবাবে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, 'বাংলাদেশে গুলি ব্যবহারের যে দৃশ্য আমরা দেখেছি, তার নিন্দা জানিয়েছি। বাংলাদেশ বা বিশ্বের যেকোনো দেশের সরকারের জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সাংবাদিকদের স্বাধীন ও নির্বিঘ্নে কাজ করার অধিকার রক্ষা করা উচিত।'