বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

নাহিদসহ ৬ সমন্বয়কের মুক্তি ছাত্রদের কর্মসূচি পালিত

আজ দেশব্যাপী প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল
যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়ক -ফাইল ছবি

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হলেও আন্দোলনকেন্দ্রিক উত্তেজনা এখনো কমেনি। বরং শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে নতুন করে দানা বাঁধাতে শিক্ষক, শিল্পী ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনসহ আওয়ামীবিরোধী অনেকেই মাঠে নেমেছে। বৃহস্পতিবারের 'রিমেম্বারিং দ্য হিরোস' কর্মসূচিতে 'নির্যাতনের ভয়ংকর দিন-রাতগুলোর স্মৃতিচারণ, চিত্রাঙ্কন/গ্রাফিতি, দেওয়াল লিখন, ফেস্টুন তৈরি ও এলাকাভিত্তিক প্রতিবাদ-সাংস্কৃতিক আয়োজনের কথা বলা হলে বেশিরভাগ জায়গায় আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। এ নিয়ে বেশকিছু স্পটে পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ধস্তাধস্তি ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে শহীদ, আহত, পঙ্গু ও গ্রেপ্তার হওয়া সবার স্মরণে আজ দেশব্যাপী প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল্থ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল কাদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে সহিংসতা, গণগ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদও জানিয়েছেন তারা।

অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বুধবার ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিলেও তারা তাদের দাবিতে এবার নতুন শর্ত যোগ করেছে। ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়ার পর তারা ঢাকাসহ সারাদেশে আটক সব শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকদের ছেড়ে দিতে ডিবি কার্যালয়ের গেটে মানববন্ধন করেছে। এ জন্যও তারা ফের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে।

'রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস' কর্মসূচি পালনের শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকদের সমাবেশ, বিক্ষোভ ও মৌন মিছিল কর্মসূচি হয়। সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকার পুলিশের কাঁধে ভর করে আছে। তারা পুলিশের বিচার করতে পারবে না। সাধারণ ছাত্র-জনতাকে হত্যার বিচার করতে হবে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে। নিপীড়নবিরোধী

কর্মসূচিতে আটক শিক্ষার্থীসহ অন্যদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তারা। বস্নক রেইডের নামে গণগ্রেপ্তার বন্ধেরও দাবি জানানো হয়। আজ শুক্রবার 'দ্রোহ মিছিল' করবে আন্দোলনকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়। তারা ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের একটি গাড়িতে বেরিয়ে আসেন। ডিবির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি) আজহার মুকুল ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের চাচা জাহিদুল ইসলাম দুপুর দেড়টার পর বলেন, ডিবির গাড়িতে করে তারা বাসায় যাচ্ছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে প্রথমে তিনজনকে গত শুক্রবার বিকালে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তুলে আনা হয়। তারা হলেন- নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের। তাদের মধ্যে নাহিদ ও আসিফ সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বাকের তাদের সঙ্গে ছিলেন। পরদিন সন্ধ্যায় সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুলস্নাহকে নিয়ে আসে ডিবি। এরপর রোববার ভোরে মিরপুরের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তুলে আনা হয় নুসরাত তাবাসসুমকে। এরপর থেকে তারা মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আছেন। ডিবির দাবি, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। তাই তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

গত ১৯ জুলাই মধ্যরাতে খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়ায় এক বন্ধুর বাসা থেকে নাহিদকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। এক দিন পর পূর্বাচল এলাকায় তাকে ফেলে যাওয়া হয়। নাহিদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল আঘাতের চিহ্ন। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অপর দুই সমন্বয়ক আসিফ ও বাকেরকেও একই দিন তুলে নেওয়া হয়েছিল। পাঁচ দিন পর তাদের দুইজনকে চোখ বাঁধা অবস্থায় যেখান থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেখানে ফেলে যাওয়া হয়। এরপর থেকে আসিফও গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন বাকেরও।

এদিকে ছয় সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলি না চালাতে নির্দেশনা চেয়ে গত সোমবার হাইকোর্টে রিট দাখিল করেন দুই আইনজীবী। তারা হলেন- আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। সোমবার ও মঙ্গলবার রিটের ওপর হাইকোর্টের এই দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি হয়। আদালতের গতকালের কার্যতালিকায় রিটটি আদেশের জন্য ১০ নম্বর ক্রমিকে ছিল। আদালত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অসুস্থতার কারণে বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসাইন দোলন বুধবার ও বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়েছেন। এ জন্য গতকাল শুনানি হয়নি।

এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, 'তারা (সমন্বয়করা) সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিল বলেই তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছিল। সে ব্যাপারে জিডিও করা আছে। আজকে যখন তারা বলছে, তাদের নিরাপত্তার প্রয়োজন নাই, তারা বেরিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, আমরা তাদের চলে যাওয়ার কোনো বাধা দেইনি এবং তারা চলে গেছে।'

এই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বাবা বদাংল ইসলাম জানান, ছেড়ে দেওয়ার আগে ছয় সমন্বয়ক গত ৩২ ঘণ্টা ধরে অনশনে ছিলেন।

এদিকে গণহারে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ টেনে আইনমন্ত্রী বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রসিকিউশন। বিচার বিভাগ কিন্তু স্বাধীন। আমরা প্রসিকিউশনকে নির্দেশনা দিয়েছি যে, যারা সম্পৃক্ত না, যারা এইচএসসি পরীক্ষার্থী, যারা মাইনর, তাদের যেন প্রসিকিউশন উদ্যোগী হয়ে জামিন দেওয়ার ব্যবস্থা করে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সরকার মুখে নানা কথা বললেও তাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করছে। তাদের ওপর হয়রানির স্ট্রিমরোলার চালাচ্ছে। বৃহস্পতিবারও পুলিশ আগ্রসী ভূমিকা পালন করেছে।

তাদের অভিযোগ, নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইলে শাহবাগ থানার সামনে শিক্ষকদের আটকে দেয় পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন অন্য শিক্ষকরা। শুরু হয় বাকবিতন্ডা। একপর্যায়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কর্মসূচিতে যোগ দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শুরুতে অল্পসংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমাবেশে অংশ নিলেও বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সমাগম। সমাবেশে শিক্ষকরা বলেন, সরকারের কাছ থেকে হত্যাকান্ডের বিচার আশা করেন না তারা। ঘোষণা করা হয় পরবর্তী কর্মসূচি।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবন হয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন টিএসসি এলাকায়। মৌন মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্য থেকে যান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি পালন করা হয় এক মিনিট নীরবতা। বস্নক রেইডের নামে গ্রেপ্তার ও আটকের নামে বাণিজ্য বন্ধের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ করলেই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আখ্যায়িত করার প্রবণতার সমালোচনা করে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতির মধ্য দিয়েও প্রতিবাদ জানানো হয়।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সমর্থন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) দাবি করে, যৌক্তিক সমাধান না হলে সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট অঢ়লাবস্থা নিরসনের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

এ সময় পরিবেশবাদী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের বিচার না হলে আর কোনোদিনই বিচার পাওয়া যাবে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে চলমান সংকটের যৌক্তিক সমাধান খুঁজতেই সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের এই সংবাদ সম্মেলন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার বন্ধ এবং মানুষের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরে সংস্থাটি।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে বসার আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। বক্তারা বলেন, ফুটেজ দেখে দেখে এবার প্রতিটি হত্যার বিচার না হলে আর কখনো বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। চলমান আন্দোলনে নিহতদের নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তালিকা প্রকাশেরও দাবি জানান বক্তারা।

এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে আটক ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ মানুষ বিনা বিচারে আটক ও আইনানুগ ব্যবস্থা ছাড়া আটকদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান অর্থনীতিবিদ ও জননীতি বিশ্লেষক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি, কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আমরা খুশি, কিন্তু সন্তুষ্ট নই। কারণ, এখনো ঢাকাসহ সারাদেশে আটক ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ মানুষ বিনা বিচারে আটক আছে।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, 'সারাদেশে অজস্র কারাগার গড়ে তোলা হয়েছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা আটকের মাধ্যমে। জুলাইয়ে হত্যাকান্ডে যারা প্রাণ হারিয়েছে, সেই আন্দোলনে হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে বস্নক রেইড দিয়ে কারাগারগুলো ভরে ফেলা হয়েছে। এ অবস্থা আজকেই থামাতে হবে। সমন্বয়কদের যেমন ছেড়ে দিয়েছেন, সব শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকদেরও ছেড়ে দিতে হবে। সব দেশের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সরকারে বসেছে। আমাদের সন্তানদের রক্তে রঞ্জিত করার জন্য আপনাদের ওইখানে বসে রাখা হয়নি। সব কারফিউ তুলে নেবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তুলে নেবেন। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। মানুষের মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। তা আটকে রাখার অধিকার আপনাদের কারও নেই।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, 'আমাদের সব শিক্ষার্থীকে যদি ছেড়ে দেওয়া না হয়, যদি হত্যার বিচার করা না হয়, যদি অবিলম্বে শিক্ষাঙ্গন খুলে দেওয়া না হয়, তাহলে আমাদের বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আরও কঠোর ও অব্যাহত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের রুশাদ ফরিদী বলেন, 'আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিকাল ৩টায় ''দ্রোহ যাত্রা'' নামে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই সমাবেশে ছাত্র-শিক্ষক ও সুধীসমাজ অংশ নিবেন। আমরা এসব হত্যার বিচার চাই।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে