বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১
হোয়াটসঅ্যাপ-টিকটক-ইউটিউবও চালু

দুই সপ্তাহ পর খুলে দেওয়া হলো ফেসবুক

যাযাদি রিপোর্ট
  ০১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
দুই সপ্তাহ পর খুলে দেওয়া হলো ফেসবুক

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া ফেসবুক- হোয়াটসঅ্যাপসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেওয়া হলো দুই সপ্তাহ পর। বুধবার দুপুরে বিটিআরসি ভবনে ফেসবুক ও টিকটকের সঙ্গে এক বৈঠকের পর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এদিন বেলা ২টার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান। এর কিছুক্ষণ পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব সোশাল মিডিয়া ফের চালু হতে শুরু করে বলে ব্যবহারকারীরা জানান।

প্রতিমন্ত্রী পলক বলেছিলেন, 'যে সব সামাজিক মাধ্যমের কর্মকান্ডের জন্য আমরা সাময়িকভাবে কিছু বিধিনিষেধ দিয়েছিলাম, সার্বিক বিবেচনায় আমরা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। ব্রিফিং শেষে বিটিআরসিকে খুলে দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। তবে এক-দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। আশা করছি বিকালের মাঝে সব ওপেন হয়ে যাবে।'

\হকোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'গুজব ও অপপ্রচার' বন্ধে সরকারের তরফ থেকে কোম্পানিগুলোকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় এসব কোম্পানির কাছে ব্যাখ্যা

\হচাওয়ার কথা এর আগে সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন প্রতিমন্ত্রী পলক।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি

হয়ে তিনি বলেছিলেন, 'আমরা টিকটক, ইউটিউব এবং ফেসবুককে তাদের একটা ব্যাখ্যা মৌখিকভাবে ও লিখিতভাবে উত্তর দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। টিকটক আমাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে যে, তারা মৌখিকভাবে এবং লিখিতভাবে উপস্থিত হয়ে জবাব দিতে চায়। আর আমার জানামতে ফেসবুক ও ইউটিউব এখন পর্যন্ত বিটিআরসিতে কোনো উত্তর দেয়নি।'

বুধবার প্রতিমন্ত্রী ফেসবুকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন। টিকটকের প্রতিনিধিরা সশরীরে বিটিআরসি ভবনে উপস্থিত হয়েছিলেন। আর ইউটিউব কর্তৃপক্ষ বৈঠকের জন্য আরেকদিন সময় চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

দুই সপ্তাহের বস্ন্যাকআউট

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পস্ন্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে 'কমপিস্নট শাটডাউন' কর্মসূচিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গত ১৭ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর দিন সহিংসতা মাত্রা ছাড়ালে ১৮ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায় এবং ওইদিন থেকে বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ ছিল।

এর পাঁচ দিন পর ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড এবং ১০ দিন পর ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও ফেসবুক ও টিকটক বন্ধ রাখা হয়।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ১৮ জুলাই মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনে আগুন দেওয়া হলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়কের ওপর থাকা ইন্টারনেট সেবাদাতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তার। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েকটি ডেটা সেন্টারও। সে কারণেই সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায় বলে প্রতিমন্ত্রী পলকের ভাষ্য।

সারাদেশে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েনের পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি শান্ত হতে থাকে। ২২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ব্যবসায়ীরা। সেখানে তারা ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে দ্রম্নত ইন্টারনেট সেবা চালুর ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।

এরপর ২৩ জুলাই রাতে অগ্রাধিকার বিবেচনা করে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা ফেরে। পরদিন রাতে সারাদেশে বাসা-বাড়িতেও ব্রন্ডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা সচল হয়, যদিও স্বাভাবিক গতি না ফেরায় গ্রাহকরা সন্তুষ্ট নন।

তবে এরপরও বন্ধ থাকে ফেসবুক ও টিকটক। ২৪ জুলাই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, এখনই ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি 'ঝুঁকি' দেখছেন। তারা (ফেসবুক) এসে যদি সেই প্রতিশ্রম্নতি দেয় যে তারা দায়িত্বশীল আচরণ করবে, তখন আমরা বিবেচনা করে দেখব।

অবশ্য এ সময়ের মধ্যে বিকল্প উপায়ে অনেকেই দেশে ফেসবুক ব্যবহার করছেন। প্রতিমন্ত্রী পলকের ফেসবুকও সচল থাকতে দেখা গেছে। এ নিয়ে তিনি একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে; বলেছেন, গুজব ঠেকাতে সবাইকে সঠিক তথ্য জানাতে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় রয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে