কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রাণহানির ঘটনার সুষ্ঠু ও মানসম্মত তদন্তে 'বিদেশি কারিগরি সহায়তা' নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তার আগ্রহকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, 'আমাদের যে জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি (তদন্ত) কমিটি (গঠিত হয়েছে), তাদের সুষ্ঠু ইনকোয়ারি করার জন্য, তাদের ইনকোয়ারিটা যেন খুব উচ্চমানের হয় এজন্য বিদেশি কারিগরি সহায়তা নেওয়া হবে।'
তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, 'এরই মধ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতার (সাম্প্রতিক সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা তদন্তে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনকে সহায়তা) ব্যাপারে যোগাযোগও হয়েছে। যোগাযোগ বলতে জাতিসংঘ আগ্রহ প্রকাশ করেছে, বাংলাদেশও তার ব্যাপারে উৎসাহ দেখিয়েছে।'
জার্মান রাষ্ট্রদূত উদ্বৃত করে নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর
বক্তব্যে তারা (জার্মান) দৃঢ় আশাবাদী যে একটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট (স্বাধীন) ইনভেস্টিগেশন (তদন্ত) হবে। যারা দুর্বৃত্ত তারা চিহ্নিত হবে এবং তাদের বিচার হবে।'
রাষ্ট্রদূতকে উদ্বৃত করে প্রেসসচিব বলেন, 'যারা ধর্মীয় উগ্রবাদের সহযোগী তাদের ব্যাপারে জার্মানির কোনো সিমপ্যাথি (সহানুভূতি) নাই।'
নাঈমুল ইসলাম খান জানান, বৈঠকের শুরুতে জার্মান রাষ্ট্রদূত সাম্প্রতিক সহিংসতায় জীবনহানির ঘটনায় বাংলাদেশ যে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শোক ও সমবেদনা জানান।
জার্মান বাংলাদেশের সঙ্গে থাকবে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টারকে উদ্বৃত করে নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, 'জার্মানি বাংলাদেশের পাশে থাকবে। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক এবং এখনো তারা বাংলাদেশের সঙ্গে থাকবে।'
দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী ও বিদ্যমান সুসম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে জার্মানির সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং জার্মানির বেশকিছু পরিবার বাংলাদেশের যুদ্ধ শিশুকে দত্তক নিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী সে কথা স্মরণ করেন।'
ভিসা প্রক্রিয়ার ধীরগতি প্রসঙ্গে আলাপের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব বলেন, 'জার্মান রাষ্ট্রদূত তাদের ভিসা প্রক্রিয়ায় সস্নথতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রদূত বলেছেন, গুড উইলের (সুনামের) কমতির জন্য এটা হচ্ছে না। তাদের (জার্মান দূতাবাস) সক্ষমতা ও সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে এটা হচ্ছে।'
সৌজন্য সাক্ষাৎকালে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।