আন্তর্জাতিক চাপ সামলানোই চ্যালেঞ্জ
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি
প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১১:২৭
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংস পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগ উঠেছে সেগুলোকে কেন্দ্র করে সরকারের ওপর স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে। ইতোমধ্যেই কোটা আন্দোলনকেন্দ্রিক সব সহিংস কর্মকান্ডের তদন্ত স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সহিংসতায় এক সপ্তাহের কম সময়ে দুই শতাধিক মানুষের মৃতু্য (সরকারি হিসাবে ১৪৭ জন) এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হওয়ার পর দেশব্যাপী চলমান গ্রেপ্তার অভিযানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ কড়া নজর রাখছে। এছাড়া পুরোবিষয়টি জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনের নজরদারিতে আছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বহির্বিশ্বের চতুর্মুখী চাপ সামাল দেওয়া সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে যেভাবে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে তাতে বাংলাদেশের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। দ্রম্নত পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে আবার বাংলাদেশের উপর মানবাধিকার, সুশাসন ইত্যাদি বিষয়ে বিদেশি আরও চাপ আসতে পারে। যদিও সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা কেউ কেউ এ বিষয়টিতে ততটা গুরুত্ব দিতে চাননি। তাদের ভাষ্য, দেশ আক্রান্ত হওয়ায় সরকার উদ্বিগ্ন। আন্তর্জাতিক চাপ সামাল দেওয়া নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ বা দুশ্চিন্তা নেই। তবে দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক চাপ সামাল দিতে কূটনৈতিক উদ্যোগের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী সংগঠন রয়েছে। সেই সংগঠনগুলোকে এখন কাজে লাগানো হবে। সূত্রগুলোর দাবি, যেসব ইসু্যতে আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে, এর একটি বড় অংশই বাস্তবতাবিবর্জিত। দেশে ও বিদেশে থাকা সরকারবিরোধী কুচক্রী মহল নানা অপপ্রচার চালিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করছে। তাই এ ধরনের অপপ্রচার বন্ধ করাই এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ শাখা, ইউরোপ আওয়ামী লীগ শাখা এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ শাখাকে সক্রিয় হওয়ার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা সেখানে বিভিন্ন রকম সভা-সমাবেশ করবে। পাশাপাশি তারা সেখানে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা চালাবে এবং বাংলাদেশ সরকারের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরবে। এছাড়াও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতারাও এখন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যোগাযোগ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক যে কমিটি রয়েছে, সেই কমিটিও এখন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ইতিবাচক ভাবমূর্তি ধরে রাখার জন্য কাজ করবে। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতের্ যাব-পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনী কতটা সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে; জনগণের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার তাগিদে কোনো পরিস্থিতিতে তারা আক্রামণাত্মক ভূমিকা রেখেছে সংশ্লিষ্টরা তা বহির্বিশ্বে তুলে ধরবে। কূটনৈতিকভাবেও একই ধরনের তৎপরতা চালানো হবে। এতে আন্তর্জাতিক মহলে সংঘাত-সহিংসতার প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে। সরকারের নীতি-নির্ধারক মহলের দাবি, গত ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, নাশকতা এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে তা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সরকারের বিরুদ্ধে নজিরবিহীনভাবে অসত্য, মিথ্যা এবং অপপ্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনে এ ঘটনাগুলোকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মৃতু্যর সংখ্যা নিয়ে অতিরঞ্জিত তথ্য, গুজব এবং পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে নানারকম বানোয়াট তথ্য এবং ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে। আর এর ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আবার বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। উলেস্নখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। তা সামাল দিতে না পারায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায়নি। এছাড়া বাংলাদেশের সাত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশেরর্ যাবকে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে না নেওয়ার জন্য জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নেও একজন পার্লামেন্টারিয়ান বাংলাদেশেরর্ যাবকে নিষিদ্ধ করার দাবি করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশের সুশাসন এবং গণতন্ত্র নিয়ে তারা অনেক নেতিবাচক মন্তব্য করেছিল। এ পরিস্থিতিতে এখন নতুন করে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানাবিধ অভিযোগ উত্থাপিত হলে তা সরকারের জন্য সুখকর হবে না বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের ভাষ্য, আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ভিত্তি তৈরি হলে শান্তিরক্ষা মিশনসহ বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। আর এ কারণে এখনই সরকারের এসব ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো উচিত। বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, 'আন্দোলনের সময়কার পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলোকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক পরিসরে চাপ বাড়ছে। এর কারণ, সরকার যেভাবে বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তা নিচ্ছে না।' তিনি বলেন, মার্কিন সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা চাক শুমার দেশটিতে বেশ প্রভাবশালী রাজনীতিক। তিনি বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যা বলছেন, তার যথেষ্ট তাৎপর্য আছে। উলেস্নখ্য, চাক শুমার গত মঙ্গলবার এক এক্স- পোস্টে (সাবেক টুইটার) জানান, তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচির বিরুদ্ধে সহিংস নিপীড়নকে ভুল পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, 'এতে অস্থিরতা বাড়বে।' বাংলাদেশ জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য-বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, 'সেখানে যদি বিষয়টি ওঠে, আলোচনা হয়, এই কাউন্সিল যদি বাংলাদেশ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিশন গঠন করে, আর জাতিসংঘ যদি বিষয়গুলোর ওপর নজরদারির জন্য একজন বিশেষজ্ঞ নিযুক্ত করে, তাহলে সরকারের জন্য তা ভালো কিছু বয়ে আনবে না।' কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ অর্ধশতাধিক দেশে বাংলাদেশিরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছেন। এসব বিক্ষোভ কারা করেছে, সে বিষয়ে তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোকে চিঠি দিতে শুরু করেছে। এদিকে এবারের আন্দোলনের সময় সহিংসতায় কতজন নিহত হয়েছেন, কত লোক আহত হয়েছেন, আর কতজনকে আটক করা হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি গত বৃহস্পতিবার আহ্বান জানান জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ফলকার তুর্ক। তিনি বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক নীতি ও মান মেনে চলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বাংলাদেশে সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পৃথক দুটি প্রস্তাব এনেছেন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত দুই সদস্য রুপা হক ও আপসানা বেগম। বাংলাদেশে যা চলছে, তা নিয়ে সম্প্রতি রোম, প্যারিস, ম্যানচেস্টার ও লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে বিক্ষোভের কথা উলেস্নখ করে রুপা হক গত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্য সরকারের ভূমিকা দরকার। ওই প্রস্তাবের জবাবে পার্লামেন্টে লেবার সরকারের মুখপাত্র লুসি পাওয়েল এমপি জানান, চলমান সহিংসতার বিষয়ে তাঁরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রাণহানি অগ্রহণযোগ্য। এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ হালনাগাদ তথ্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টে উপস্থাপনের নিশ্চয়তা দেন তিনি। এদিকে বিক্ষোভকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরাসরি গুলি করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটছে, যে গণগ্রেপ্তার ও হত্যাকান্ড হয়েছে, তা তাঁরা দেখছেন। সব সহিংস কর্মকান্ডের তদন্ত স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে করার তাগিদ দেন তিনি। জার্মান সরকার বৃহস্পতিবারের বিবৃতিতে সহিংসতার ঘটনাগুলোর তদন্ত এবং তাতে জড়িত এমন অভিযোগে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সঠিক আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের তাগিদ দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ যে মূল নীতিগুলোর ওপর (১৯৭১ সালে) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা কার্যকর করা এবং সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ঊর্ধ্বতন পরিচালক ডিপ্রোজ মুচেনা বৃহস্পতিবারের বিবৃতিতে বলেছেন, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা এবং সক্রিয় পর্যবেক্ষণের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও বিক্ষোভ দমনে বেআইনিভাবে প্রাণঘাতী ও কম প্রাণঘাতী-উভয় ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে। সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া তিনটি ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে আসা ভিডিও এবং ছবির ক্রমাগত যাচাই ও বিশ্লেষণে সেখানকার এক ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকারের ভয়াবহ মানবাধিকার রেকর্ড এবং বিক্ষোভ দমনে মোতায়েন করার্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের র্(যাব) কর্মকান্ডে আশ্বস্ত হওয়া যায় না যে ইন্টারনেট বন্ধ করে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের অনুপস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। জাতিসংঘ ও অ্যামনেস্টির বিবৃতি দেওয়ার আগেই বিবৃতি দেয় নিউইয়র্ক-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডবিস্নউ)। গত ২২শে জুলাইয়ের সেই বিবৃতিতে সংস্থাটির ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর মিনা গাঙ্গুলি বলেন, 'শেখ হাসিনা সরকারের বিরোধিতাকারী যে কারও ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঢালাওভাবে নিপীড়ন চালানোর ঘটনা বাংলাদেশে অনেকদিন ধরেই হয়ে আসছে এবং, এবারও আমরা সেই একই ধারাবাহিকতা দেখছি, যা প্রয়োগ করা হয়েছে নিরস্ত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর।' 'প্রভাবশালী সরকারগুলোর এখন সময় হয়েছে, শেখ হাসিনার ওপর চাপ প্রয়োগ করার। যাতে তিনি শিক্ষার্থী ও অন্যান্য আন্দোলনকারীদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করেন।' এদিকে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও বর্তমান ঘটনাপ্রবাহে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষাবিদ, লেখক ও বুদ্ধিজীবীরা। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্ককে গত বৃহস্পতিবার লেখা এক চিঠিতে উদ্বেগ জানিয়ে তারা এ বিষয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ১৪০ জনেরও বেশি বিশিষ্টজন। চিঠিতে বিশিষ্টজনরা বাছবিচারহীন গ্রেপ্তার, শোকজ ছাড়াই আটক, আটক বা গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের আইনজীবীর সহায়তা পাওয়ার সুযোগ না দেওয়া, আহত করা, নির্যাতন-মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন ঘটনা থামাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, ভয়ভীতি ও নির্যাতনের এমন পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার হিসেবে ফলকার টুর্কের কাছে তারা ওইসব ঘটনায় একটি স্বাধীন তদন্ত পরিচালনার জন্য চাপ প্রয়োগের অনুরোধ জানাচ্ছেন; যাতে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী সহিংসতা ঘটানো এবং সংবাদ প্রকাশ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা যায়।