কোটা আন্দোলনকারীরা এবার ৮ দফা দাবি দিয়ে বলেছেন, দাবিগুলো মানার পর তারা ক্যাম্পাসে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরামর্শ করে সংলাপে বসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলবে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় নতুন কর্মসূচির কথা জানান।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধ উপায়ে ব্যবহার করে ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে মন্ত্রিপরিষদ ও দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে। ঢাকাসহ যত জায়গায় ছাত্র শহীদ হয়েছেন, সেখানকার ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরকে
পদত্যাগ করতে হবে।
এছাড়া ৮ দফা দাবির মধ্যে আরও রয়েছে, যেসব পুলিশ সদস্য শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ যেসব সন্ত্রাসী শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে এবং পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে, তাদের আটক এবং হত্যা মামলা দায়ের করে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার দেখাতে হবে। দেশব্যাপী যেসব শিক্ষার্থী ও নাগরিক শহীদ ও আহত হয়েছেন, তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই অন্যতম সমন্বয়ক বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগসহ দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ছাত্রসংসদকে কার্যকর করতে হবে। অবিলম্বে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হল খুলে দিতে হবে। আর যেসব ছাত্র কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের কোনো ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক হয়রানি না করার নিশ্চয়তা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
এদিকে কারফিউ জারির পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'সরকার ছাত্র ও নাগরিকদের প্রতিরোধের মুখে কারফিউ জারি করেছে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন দমনের জন্য। আমাদের আহ্বান থাকবে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে কমপিস্নট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করবে। সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান থাকবে, এ সরকারকে সমর্থন না দিয়ে ছাত্র-নাগরিকদের মানবাধিকারের পক্ষে যাতে অবস্থান করে।'
শুক্রবার রাত ১২টা ২৪ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো খুদে বার্তায় এ কথাগুলো বলা হয়।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের পস্ন্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে বিক্ষোভের মধ্যে শুক্রবার ৮ দফা দাবির কথা জানাল তারা।