রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

কারফিউ প্রত্যাহার করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফেরত নিন :ফখরুল

যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
কারফিউ প্রত্যাহার করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফেরত নিন :ফখরুল

অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। গত কয়েকদিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে; জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়।

সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে বলেন, 'জনগণের টাকায় কেনা কি পরিমাণ গোলাবারুদ, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে; তার হিসাবও জনগণ জানতে চায়। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নেবে।'

সারাদেশে ছাত্র-জনতাকে গণহত্যার পর এবার অব্যাহত গতিতে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মীর বাড়ি বাড়ি তলস্নাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। গ্রেপ্তারদের গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তিন-চারদিন কিংবা পাঁচদিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে, যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদের গুম করে রাখার ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু রেখে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে।'

বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেপ্তার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গ্রেপ্তার করা সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ মোশাররফ হোসেন খোকনকে ৩ দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'অব্যাহত গতিতে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মীর বাড়ি বাড়ি তলস্নাশি হচ্ছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ অনেক সিনিয়র নেতার বাসায় তলস্নাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারি চাকরিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজির স্থাপন করেছে- তা দেশ-বিদেশের সব স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে। অবৈধ সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করে যাচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব এই গণহত্যা, নির্যাতন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে সব দেশপ্রেমিক মানুষ, রাজনৈতিক দল, ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসক গোষ্ঠীকে পরাজিত করে জনগণের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের দুর্বার সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্যআইন প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বরাবরই আওয়ামী লীগ লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য গত কয়েক দিন যে পরিমাণ নিরীহ ছাত্র-মানুষকে গুলি চালিয়ে পাখির মতো হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে। এসব ঘটনা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।

সরকারকে এ ধরনের লোমহর্ষক কর্মকান্ড পরিহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্মমভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। তাই অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে