রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আরও দুইজনের মৃতু্য

দেশব্যাপী চলমান অভিযানে গ্রেপ্তার প্রায় ৬ হাজার

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
দেশব্যাপী চলমান অভিযানে গ্রেপ্তার প্রায় ৬ হাজার

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজনের মৃতু্য হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দুই শতাধিক ছাড়িয়ে গেল। যার মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন কয়েক হাজার। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই গুরুতর। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এদিকে নাশকতার মামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে হাসপাতালটির আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ঢাকার সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ইমতিয়াজ (২০)। আর ভোর ৪টার দিকে আইসিইউতে থাকা মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মাইন উদ্দিনের (২৪) মৃতু্য হয়।

নিহত ইমতিয়াজের পিতা মো. নওশের ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে সাংবাদিকদের বলেন, তার ছেলে বিবিএর ছাত্র ছিল। গত ১৯ জুলাই দুপুরের খাবার খেয়ে বের হয়েছিল। রামপুরা বনশ্রী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত ২২ জুলাই এখানে আনা হয়। তাদের বাড়ি যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানায়। তারা রামপুরা থানাধীন বনশ্রী এলাকায় সপরিবারে বসবাস করেন। তিনি ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন।

নিহত মাইন উদ্দিনের পিতা মো. কামরুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, গত ২১ জুলাই যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় টিউশনি শেষে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল তার ছেলে। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলা সদরে। তারা সপরিবারে যাত্রাবাড়ীতে থাকেন। তিনিও ছেলে হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এদিকে শুক্রবার ঢাকার মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ের ডিবি প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সংবাদ সম্মেলনে জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে সহিংসতা ছড়িয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ ও শনির আখড়া এলাকায় দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রদল নেতাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হচ্ছেন হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড ডেমরা থানা ছাত্রদল আহ্বায়ক মাসুদ রানা ও তার অনুসারী ইরফান, আবু বক্কর, রবিউল ইসলাম, সৌরভ মিয়া এবং তারেক।

ডিবি প্রধান বলেন, মাসুদ রানার নেতৃত্বে পুলিশ হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করা হয়। গ্রেপ্তাররা সবাই আলাদা আলাদা দায়িত্ব পালন করে। পুলিশ হত্যার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার দিন তারা মাসুদের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেয়। তারা যাত্রাবাড়ী থানাধীন রায়েরবাগে অবস্থান করে। সঙ্গে যোগ দেয় তাদের অনুসারীরা। মাসুদ রানার নেতৃত্বে তারা রায়েরবাগ ও শনির আখড়া এলাকায় যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মসজিদের মাইক দিয়ে গুজব ছড়ায়।

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে চিরুনি অভিযান চলছে। অভিযানে শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত সারাদেশে গ্রেপ্তার হয়েছে অন্তত ৬ হাজার জন। ঢাকায় নাশকতার ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ২৩৪টি মামলা হয়েছে।

অন্যদিকের্ যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে নাশকতার ঘটনায় সারাদেশে চলমান অভিযানের্ যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ২৬৬ জন। যার মধ্যে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬৩ জনকে। বাকি ২০৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে