বিএনপি কিংবা বিরোধীদলের কেউ কোটাবিরোধী আন্দোলনে জড়িত নয় জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শত শত নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের সরকারি দলের সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হতাহত করল, অথচ সরকারের ইশারায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি শুধুমাত্র ছয়জনের হত্যাকান্ডের তদন্ত করবে। এটি সুকৌশলে পুরো হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দেয়ারই নামান্তর। তাই জনগণ পুরো ঘটনা ও হত্যাকান্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করে। না হলে ব্যর্থতার সব দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত বলে জনগণ মনে করে।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আড়াল করতে এবং উদোরপিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপকৌশল হিসেবে বিএনপির নির্দোষ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার কিংবা বাসায় না পেয়ে তাদের সন্তান কিংবা বাসার সদস্যদের গ্রেপ্তার ও অশালীন আচরণসহ বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হচ্ছে।'
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আন্দোলনে ভূমিকা রাখার মিথ্যা অভিযোগে ঢালাওভাবে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য দোষারোপ করছে। যদি তাই হয়, তাহলে তাদের ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়নি কেন? এটাই জনগণের প্রশ্ন।
এতে প্রমাণিত হয় যে, বিএনপি কিংবা বিরোধী দলের কেউই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নয়।'
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, 'বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্যবিষয়ক
সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উলস্নাহ বুলুর ছেলে (যিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন) সানিয়াতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে তুলে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।'
কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশ ও আনসার সদস্য যারা নিহত হয়েছেন, তাদের জন্যও বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন ফখরুল। সেই সঙ্গে তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'নিহত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক দুই লাখ নগদ টাকা এবং ৮ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র করে প্রদান করা হয়েছে। অথচ শত শত নিরীহ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাখির মতো গুলি করে গণহত্যা করা হলো, যা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে, যারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি করছি।'