স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, 'সেনাবাহিনীর কাজ শেষ হলে দেশের পরিবেশ যখন ঠিক হয়ে যাবে, তারা তাদের কাজে চলে যাবে। কারফিউ প্রত্যাহার হবে এবং জনজীবন আবারও স্বাভাবিক গতিতে চলবে। আমরা যত তাড়াতাড়ি পারি সেটি ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছি।'
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিবালয়ে কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনের সময় সংঘাত-সংঘর্ষে নিহত তিন পুলিশ সদস্য ও একজন আনসার সদস্যের পরিবারের কাছে আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এখন কারফিউ শিথিল। সামনে কী পরিকল্পনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, 'আমরা তো কারফিউ রাখতে চাই না। থানা আক্রমণ করছে, পুলিশ মেরে ফেলছে, কেপিআইগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে। পুলিশ,র্ যাব, আনসার, বিজিবি দায়িত্ব পালন করতে গেলে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। সে জন্য আমরা বাধ্য হয়ে সন্ধ্যা আইন বা কারফিউ জারি করেছি।'
কোটা সংস্কার দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের সময় সহিংসতার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী, জামায়াত-বিএনপি ও জঙ্গিদের দায়ী করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে নাশকতাকারীদের একের পর এক চিহ্নিত করব। তাদের আইনের মুখোমুখি করব। এখান থেকে আমরা এক পা-ও সরে দাঁড়াব না।'
সংঘাত-সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ প্রসঙ্গে
তিনি বলেন, 'একটি অচল অবস্থা তৈরির জন্য স্বাধীনতাবিরোধী, জামায়াত-বিএনপি শক্তি, জঙ্গিরা একত্র হয়ে এ ঘটনাগুলো একের পর এক ঘটিয়েছে। আমরা কোনো সময়েই দেখিনি থানা ভবন আক্রমণ করতে, কারাগার আক্রমণ করতে- এগুলো আমরা নতুন করে দেখলাম।'
আসাদুজ্জামান খান বলেন, 'পুলিশকে চিহ্নিত করে ধরার জন্য মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তাই নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকতে পারেনি। আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে তাদের একের পর এক চিহ্নিত করব। তাদের আইনের মুখোমুখি করব। এখান থেকে আমরা এক পা-ও সরে দাঁড়াব না।'
তিনি বলেন, 'জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের উত্থান, বিএনপি-জামায়াত চক্রকে ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগামী দু-চার দিনের মধ্যে সবই নিয়ন্ত্রণে
আসবে। কারণ, দেশের মানুষ এটি পছন্দ করছে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা বাধ্য হয়ে কারফিউ জারি করেছি। আমরা সেনাবাহিনীকে ডেকেছি। তারা সহযোগিতা করছে। এই জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের উত্থান, বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্ত ইতোমধ্যে আমরা কন্ট্রোল করে নিয়ে এসেছি। আগামী দু-চার দিনের মধ্যে আশা করি সবকিছু কন্ট্রোল করে নিয়ে আসব। কারণ, দেশের মানুষ এটা পছন্দ করছে না। আমরা মনে করি, সবাই মিলে এটাকে প্রতিহত করব। এই গোষ্ঠীকে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে দেব না।'
সহিংসতায় আন্দোলনকারী কিংবা সাধারণ মানুষ কতজন মারা গেছেন, এর তথ্য সরকারের কাছে নেই বলে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, 'জনসাধারণ কতজন মারা গেছেন, তার কোনো হিসাব আমাদের কাছে নেই। কোনো থানায় এ সংক্রান্ত কোনো মামলাও দায়ের হয়নি। পুলিশ তথ্য সংগ্রহ করছে, এ বিষয়ে পরে বলা যাবে।'
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার মেরিট অনুযায়ী চার্জশিট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'মামলা হচ্ছে। এ আক্রমণ ছিল তাদের (আন্দোলনকারী) সুপরিকল্পিত। মামলা কখন হবে, কোথায় হবে সেটা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে না। প্রতি ঘণ্টায়ই মামলা হচ্ছে। আমরা চার্জশিট পাওয়ার পর মামলার মেরিট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।'
এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল-মামুন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।