কোটা আন্দোলনের ঘিরে নাশকতা

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের ক্ষতি পাঁচশ' কোটি টাকা

ছয় সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

গাফফার খান চৌধুরী
আগুনে ভস্মীভূত কয়েকটি গাড়ি
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মহাখালী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে অন্তত পাঁচশ' কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগুন দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়তে গান পাউডার ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। এজন্য ভবন থেকে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভবন পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ও গণপূর্ত বিভাগের ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি। বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকার মহাখালী আমতলী থেকে গুলশান লিংক রোডের দিকে এগোলেই হাতের ডান পাশে মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকার ৯৩ নম্বর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন। ৯ তলা ভবনটির সামনের অংশ পুড়ে পুরোপুরি কালো হয়ে আছে। ধোঁয়ায় ভবনটি এতটাই কালো হয়ে আছে যে, দেখে মনে হয় ভবনটিতে কুচকুচে কালো রং মেখে দেওয়া হয়েছে। ভবনটির সামনে উৎসুক জনতার ভিড়। ভবনের সামনে ও ভেতরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ভবনের চারদিকে প্রচন্ড যানজট। যানজট ঠেলে ভবনের সামনে যেতেই বোঝা গেল যানজটের মূল কারণ। দেখা গেছে, ভবনটির সামনের রাস্তায় এক পাশে ফুটপাত লাগোয়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গাড়িগুলো পুড়ে পড়ে আছে। সারি সারি পোড়া গাড়ির সঙ্গে ভবন পরিদর্শনে আসা কর্মকর্তাদের গাড়ি রাখা হয়েছে। ভবনটির সামনে থাকা প্রাইভেটকার ও পাজেরো গাড়িসহ মোট ৯টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়িগুলোতে লোহা ছাড়া পোড়ার আর কিছুই বাকি নেই। পোড়া গাড়িগুলো পড়ে আছে দুর্যোগ ভবনের সামনের মূল রাস্তা সংলগ্ন লাগোয়া ফুটপাত ঘেঁষে। কোনো কোনো গাড়ির চাকার লোহা ও এলোমনিয়ামের রিং পর্যন্ত গলে গেছে। রিং গলে যাওয়ায় গাড়িগুলোর বডি রাস্তার সঙ্গে চ্যাপ্টা হয়ে পড়ে আছে। ভবনের মূল ফটকে ভেতরে ঢুকতেই সামনে পার্কিং করে রাখা আরও ৯টি দামি গাড়ি ভাঙচুরের পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব গাড়ির অবস্থাও একই। পুরোপুরি পুড়ে কঙ্কাল পড়ে আছে। ভবনটির পার্কিং লটে থাকা ৩০টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৩টি বড় টু্যরিস্ট বাস, ২টি মাইক্রোবাস, ৩টি পিকআপ ও ২টি মোটর সাইকেল। আর ২০টি দামি প্রাইভেটকার ও প্রাডো এবং পাজেরো গাড়ি। এসব গাড়ির কোনো কিছুই আর পোড়ার বাকি নেই। সিঁড়ি দিয়ে ভবনটির প্রথম তলায় যেতেই চোখে পড়ে ধ্বংসলীলা। রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। পুরো ফ্লোরে থাকা সব চেয়ার টেবিল, দামি দামি আসবাবপত্র, দরোজা, জানালা, বাথরুম থেকে শুরু করে সব কিছুই ভাঙচুর করা হয়েছে। ভাঙচুরের পর ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগুনে সব কিছু পুড়ে গেছে। পুরো ফ্লোরে অন্তত আধা ইঞ্চির মতো পুরো হয়ে কালির আস্তর পড়ে আছে। দেখা গেছে, ভবনটির পূর্ব দিকে থাকা ইন্টারনেটের ডাটা সেন্টারটি সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ডাটা সেন্টারটি মূল ভবনের বাউন্ডারির ভেতরে হলেও কিছুটা আলাদা ছিল। এটি ছিল ভবনটির পূর্ব দিকের কোনায়। হাজার হাজার ক্যাবল পুড়ে সামনের রাস্তায় পড়ে আছে। পুরোপুরি ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখা গেছে। প্রথম তলায় থাকা সাব-স্টেশনটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সাব-স্টেশনে থাকা বড় বড় তিনটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটরের কিছুই আর পোড়ার বাকি নেই। পুরো ফ্লোরে এমন কোনো জিনিস নেই, যা ব্যবহারের উপযোগী। এমনকি বাথরুমের দামি দামি ফিটিংস পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে। দ্বিতীয় তলায় রীতিমতো লুটপাট করা হয়েছে। ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে সব জিনিসপত্র। কম্পিউটার মনিটর, সিপিও, ডাটা সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত থাকা সব ক্যাবল, বিভিন্ন কর্মকর্তার রুমের দরজা জানালা ভাঙচুরসহ কক্ষ থেকে সব মালামাল লুটপাট করা হয়েছে। এরপর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় সব দলিল দস্তাবেজ। দ্বিতীয় তলায় আগুনের তাপে ভবনটির পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ দিকের দেয়াল ফেঁটে গেছে। ভবনে থাকা অগ্নিনির্বাপণের যন্ত্রপাতি পর্যন্ত লুটপাট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাতে করে আগুন নেভাতে না পারে। প্রতিটি তলায় থাকা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি সেগুলো ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরো ফ্লোরজুড়ে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। এছাড়া তৃতীয় তলায় অর্থাৎ চার তলার পরিস্থিতিও একই। প্রতিটি তলায় লুটপাট হয়েছে। চারতলা পর্যন্ত লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে নাশকতাকারীরা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনে কর্মরত এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে যায়যায়দিনকে বলেন, গত ১৮ জুলাই ছিল বৃহস্পতিবার। যথারীতি অফিস চলছিল। তবে অফিসে অন্যান্য কর্মদিবসের তুলনায় কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি ছিল অনেক কম। কারণ আগের দিন ১৭ জুলাই বুধবার ছিল মহররমের বন্ধ। অনেকেই পরদিন বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়েছেন। এতে করে চার দিনের ছুটি হয়েছে। ছুটি নেয়াদের অনেকেই হয়তো গ্রামের বাড়িতে বা অন্য কোথাও গেছেন বা প্রয়োজনীয় কাজ করেছেন। যে কারণে বৃহস্পতিবার ভবনে উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ছিল অনেক কম। বিকাল চারটার দিকে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন তারা। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই শত শত মানুষ আচমকা ভবনের সামনে পার্কিং করে রাখা যানবাহন ভাঙচুর শুরু করে। এরপর তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ভবনে কর্মরতরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তারা আগুন নেভাতে দেয়নি। উপরন্তু আমাদের মারধর করে। আন্দোলনকারীদের মারধর খেয়ে অনেকেই ভবনের বিভিন্ন তলায় আত্মগোপন করেন। তিনি আরও জানান, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আন্দোলনকারীরা ভবনের মূল গেটের ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারা প্রথমেই ভবনের বাউন্ডারি দেয়ালের ভেতরে এবং মূল ভবনের সামনে পার্কিং করে রাখা কর্মকর্তাদের গাড়িগুলো চোখের পলকে ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলে। এরপর তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তেই ভবনের সামনে ও ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আন্দোলনকারীরা ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে ঢুকে পড়ে। শত শত আন্দোলনকারী ঢুকে রীতিমতো তান্ডব শুরু করে দেয়। লোহার রড, হকিস্টিক, লাঠিসোটা, ইটপাটকেল দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। রীতিমতো যেন গাড়ি ভাঙার উৎসব করছিল আন্দোলনকারীরা। গাড়ি ভাঙচুর করার পর তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দিয়েই তারা উঠে আসে লিফটের প্রথম তলায় অর্থাৎ ভবনের দ্বিতীয় তলায়। সেখানে তারা প্রতিটি রুমের দরোজা জানালা ভেঙ্গে ফেলে। কর্মকর্তাদের খোঁজতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ভয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্র লুকিয়ে ফেলেন। অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ভয় ও আতঙ্কে ভবনটির ছাদে পর্যন্ত ওঠে আত্মগোপন করেন। আন্দোলনকারীদের মারধরের ভয়ে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ভবনটিতে কাজে এসেছিলেন বলে মিথ্যা পরিচয় দিতে বাধ্য হন। পুরো চার তলা পর্যন্ত চলে এমন তান্ডব। একদিকে তান্ডব আরেকদিকে আগুন। ভয়ে ভবনের বাসিন্দারা যে যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গায় আত্মগোপন করেন। অনেকেই প্রাণে বাঁচতে ভয়ে ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মরক্ষা করেন। এতে অনেকেই আহত হয়েছেন। ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগুন নেভাতে দেওয়া হয়নি। আগুন নেভাতে গিয়ে অনেকেই আন্দোলনকারীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন। এছাড়া আন্দোলনকারীরাও আগুন নেভানোর যন্ত্র ভেঙে ফেলেছে। যাতে করে আগুন নেভানো সম্ভব না হয়। এমন ধ্বংসযজ্ঞ পরিকল্পিত নাশকতা বলে প্রমাণ করে। তিনি আরও জানান, পুরো ভবনে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদু্যতায়িত করার যিনি দায়িত্বে ছিলেন তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে চার তলায় আটকে রাখা হয়েছিল। এরপর জেনারেটর রুমের শক্ত লোহার গেট ভেঙে জেনারেটর ভাঙচুর করা হয়। পুরো জেনারেটরের সব কিছুই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগুন লাগানোর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়। কাছাকাছি যাওয়ার পর আন্দোলনকারীরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আটকে দেয়। আগুন নেভানো তো দূরের কথা আন্দোলনকারীরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও ভাঙচুর চালায়। এমন পরিস্থিতি ভবনের ভেতরে আটকে পড়া কর্মকর্তা জীবন বাঁচাতে জানালার গ্রিল ভেঙে ও উপরের ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে খানিটা নিচে নেমে লাফিয়ে পড়ে জীবন রক্ষা করেন। এতে অনেকেই আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় আন্দোলনকারীদের সরিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করার পর আগুন নেভানো হয়। নতুবা পুরো ভবন পুড়ে যেত। এদিকে বুধবার দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনে ক্ষয়ক্ষতি দেখতে যান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগের সচিব নবীরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল। মন্ত্রী পুরো ভবন পরিদর্শন করেন। ভবনের ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত তালিকা নেন। তালিকাটি দেওয়া হয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমানের তরফ থেকে। এছাড়া ভবনের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা পুরোভবন পরিদর্শন করে সার্বিক পর্যালোচনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করেন। \হবেলা তিনটার দিকে ভবনটির সিঁড়িতে সচিব নবীরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি যায়যায়দিনকে বলেন, পুরো ভবনটি ঘুরে দেখেছি। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় তিনটি ক্র্যাক বা ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ভবনটি ব্যবহারের উপযোগী কিনা সে ব্যাপারে সার্বিক দিক পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ভবনের সক্ষমতা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। পুরো ভবনে ক্ষয়ক্ষতিসহ নানা দিক খতিয়ে দেখতে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাজ করছে। ভবনে থাকা সব মালামাল, যানবাহন ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ভবনে থাকা সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলিল দস্তাবেজ বা নথিপত্র। সবমিলিয়ে ভবনটিতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া ও লুটপাটের কারণে অন্তত পাঁচশ' কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ভবনটি ২০০৩ সালে তৈরি বলেও তিনি জানান। ভবিষ্যতে ভবনটি সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবহারের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এটি এখনই বলা যাচ্ছে না। ভবনের সার্বিক দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ ব্যাপারে স্পষ্ট মতামত দেওয়া যাবে। আর ভবনটি যেহেতু মাত্র ২১ বছর আগে তৈরি, তৈরির সময় কি ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, সেটিও খতিয়ে দেখতে হবে। এরপরই আসলে মতামত দেওয়া সম্ভব। তবে এ মুহূর্তে ভবনটি আপাতত ব্যবহারের উপযুক্ত না। সরেজমিন ঢাকা মহাখালী থেকে গুলশান লিংক রোডের দিকে যত এগোনো যাচ্ছিল ততই নাশকতার ভয়াবহতা স্পষ্ট হচ্ছিল। মহাখালী রেলগেট এলাকায় দেখা গেল সেখানকার পুলিশ বক্স, ট্রাফিক পুলিশ বক্স, ট্রাফিকের সহকারী কমিশনারের কার্যালয় ও ট্রাফিক সার্জেন্টদের ক্যাম্পটি একপ্রকার নেই বললেই চলে। পুরোএলাকা একেবারে ফাঁকা। ভাঙচুরের পর আগুন দেওয়ার কারণে পুলিশ অফিসটি পুড়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। খানিকটা সামনে এগোলেই চোখে পড়বে মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য বড় বড় স্কিনগুলো একেবারে পুড়িয়ে খুলে ফেলা হয়েছে। গুনে গুনে এমন ১২টি স্ক্রিন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মহাখালী আমতলা ট্রাফিক পুলিশের দুটি বক্স পুরোপুরি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সার্জেন্টদের বসার জন্য একটি কক্ষ নাশকতাকারীরা তুলে নিয়ে চলে গেছে। জায়গাটি দেখে বোঝার উপায় নেই যে, সেখানে আদৌ কোনো পুলিশের স্থাপনা ছিল কিনা! সেখানকার ট্রাফিক পুলিশের পরির্দশক মাসুদুর রহমান কথা প্রসঙ্গে বলছিলেন, রেলগেট সংলগ্ন স্থাপনাটি গুঁড়িয়ে দেয়ার কারণে অন্তত ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আর মহাখালী আমতলীর দুটি বক্স ভাঙচুরের পর পুড়িয়ে দেয়ায় অন্তত ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।