সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

ঘটনা ধামাচাপা দিতে সরকার প্রতারণা শুরু করেছে

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -স্টার মেইল
অপরের ওপর দোষারোপ ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণাই আওয়ামী চরিত্রের ভূষণ বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকান্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিতে সরকার প্রতারণা শুরু করেছে। নিরীহ শিক্ষার্থীদের হত্যার দায় থেকে মুক্তি পেতে আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-নেতা ও প্রজাতন্ত্রের কিছু কর্মকর্তা মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক বক্তব্য দিচ্ছেন। বুধবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, 'আওয়ামী লীগ মিথ্যাচার করে চলমান ঘটনাকে আড়াল ও ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্টের চক্রান্তসহ দলের নেতাকর্মী এবং বিরোধী দলের ওপর দায় চাপিয়ে দিতে চাইছে। অথচ পরিকল্পিতভাবে হত্যাকান্ড চালিয়েছে সরকার, এর দায় তাদেরকেই নিতে হবে।' তিনি বলেন, 'জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতেই বিএনপি এবং দলটির হাইকমান্ড নিয়ে দোষারোপ করছে সরকার। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই সরকার দোষারোপের রাজনীতি করছে। তারা আন্দোলনে হতাহতের কথা না বলে শুধু পোড়ানো জিনিসগুলো নিয়ে কথা বলছে। শুরুতে ছাত্রদের দাবি মেনে নিলে দেশের আজ এই অবস্থা হতো না। সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই বলেই তারা হত্যা করেছে।' বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'গোটা জাতিকে একটি ভ্রান্ত ধারণা দিতেই স্থাপনার দিকেই সরকারের ফোকাস, কিন্তু নিহত কিংবা হতাহতের কোনো তালিকা সরকার দিচ্ছে না। এখন পর্যন্ত কতজন নিহত হয়েছে তার কোনো হিসাব সরকার দিচ্ছে না। সেনাবাহিনী মোতায়েন করে, নির্যাতন করে আন্দোলন ক্ষণিক সময়ের জন্য বিক্ষুব্ধ জনতাকে থামাতে পারবে সরকার, কিন্তু যতক্ষণ না রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে ততক্ষণ কোনো কিছুই সমাধান হচ্ছে না। রাজনৈতিক সমাধানের একমাত্র পথ সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।' মির্জা ফখরুল আরও বলেন, 'ড. ইউনূস সত্য বলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনছে। কিন্তু এই সরকারই রাষ্ট্রবিরোধী, গণবিরোধী। ইন্টারনেট বন্ধ করায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে অর্থনীতি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসায়ীরা। এখন ভিডিও বানিয়ে ব্যবসায়ীদের সামনে মিথ্যাচার করেছে সরকার।' বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, 'চট্টগ্রামে নির্দেশে বিআরটিসি বাসে আগুনের ঘটনায় ধৃত সোহেল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসেন মোহাম্মদ জুনায়েদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে সোহেল বলেন, শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুলের নির্দেশে বিআরটিসি বাসে আগুন দেন তিনি। তাকে চার লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সুতরাং বিএনপি জড়িয়ে মিথ্যাচার জনগণ কখনোই আমলে নেবে না।' বিএনপির প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'আন্দোলনের সঙ্গে থাকা আর নাশকতার সঙ্গে থাকা এক না। সরকারের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। গত ৪০ বছরের ইতিহাসে নাই যে, বিএনপি কোনো সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করেছে। সরকারই এসব করে থাকে।' সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, 'সরকার পতনের আন্দোলন চলবেই। কখনও থামবে, কখনও বেগবান হবে। আন্দোলন থামবে না। এই আন্দোলন ছিল আই ওপেনার। জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে।'