মাদারীপুরে কোটা বাতিলের দাবিতে কমপিস্নট শাটডাউন চলাকালে পুলিশের ধাওয়ায় লেকের পানিতে ডুবে দীপ্ত দে (২১) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে মাদারীপুর শহরের ডিসিব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আর এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর এবং শহরের ১নং পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ জন। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে ৬ জনকে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে মাদারীপুর শহরের ডিসিব্রিজ এলাকায় জড়ো হয় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা। পরে পাশের জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে গড়ায়।
আন্দোলনকারীদের শক্ত অবস্থান দেখে পুলিশ তাদের তাড়া করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এতে গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের
প্রায় ৩০ জন আহত হন। পরে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ।
সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ও ছাত্রলীগের ধাওয়ায় শকুনী লেকের পানিতে ঝাঁপ দেন ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী। পরে পানি থেকে সবাই উঠতে পারলেও দীপ্ত দে নামে ওই শিক্ষার্থী ডুবে যান। দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লেকের পানি থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তার লাশ উদ্ধার করে।
দীপ্ত মারা যাওয়ার ঘটনায় দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ বলেন, 'সদর হাসপাতালে ৩০ জনের মতো আহত শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে আসে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছে। ছয়জনের অবস্থা গুরুতর। একজন মৃত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ।'
মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান ফকির বলেন, 'কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা শহরের ডিসি, পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরে যেতে বললে সংঘর্ষ বাধে। এক শিক্ষার্থীর লাশ শকুনী লেকের পানি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। শহরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'