রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বুধবার রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেটের ফোর-জি সেবা বন্ধ রয়েছে। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু আছে। মোবাইল ইন্টারনেটের টু-জি সেবা চালু আছে। সংশ্লিষ্ট অপারেটর সূত্রে বৃহস্পতিবার এ কথা জানা যায়।
এদিকে, মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবহারকারীরা। প্রবেশ করা যাচ্ছে না ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে।
এ বিষয়ে জানতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
বুধবার গ্রাহকরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে হঠাৎ মোবাইল ইন্টারনেটের গতি কমে গেছে। ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে প্রবেশ করতে পারছেন না অনেকে। কেউ আবার প্রবেশ করতে পারলেও ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে বার্তা বা
ছবি পোস্ট করতে পারছেন না। এমনকি অন্যদের পোস্টে ক্লিক করে বার্তা বা ছবি দেখতে পারছেন না তারা। শুধু তা-ই নয়, ফেসবুকের হালনাগাদ পোস্ট খুঁজে পেতেও সমস্যা হচ্ছে অনেকের।
বুধবার দুপুরের পর থেকেই দেশের প্রায় সব মোবাইল অপারেটরের ইন্টারনেট ধীরগতিতে চলার পাশাপাশি ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ব্যবহারে
সমস্যা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতেও ভিপিএনের (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) মাধ্যমে মুঠোফোনে ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয় অনেককে।
এদিকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পস্ন্যাটফর্মকে ব্যবহার করে গুজব, মিথ্যা, অপপ্রচার করাটাকে অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে একটি গোষ্ঠী। তাই জাতীয় ও নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে চেষ্টা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দেশের প্রায় সব মোবাইল অপারেটরের ইন্টারনেট ধীরগতিতে চলার পাশাপাশি ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ব্যবহারে সমস্যা হচ্ছে। এর প্রেক্ষাপট জানতে চাইলে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে জুনাইদ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জুনাইদ বলেন, 'শুধু দেশের ভেতর নয়, বাইরে থেকেই কিছু কনটেন্ট পোস্ট করা হচ্ছে। তার মানে টাকা দিয়ে মিথ্যা তথ্যটা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার যে অপকৌশল বা ষড়যন্ত্র, এটা আমরা যখন দেখছি তথ্য-উপাত্ত, গোয়েন্দা সংস্থার সব বিশ্লেষণ, তখন আমরা মনে করেছি, দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের যার যতটুকু করার সক্ষমতা আছে সেটা করা দরকার। যেমন পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা রক্ষার চেষ্টা করছে, তেমনি আমরা সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইবার পস্ন্যাটফর্মে চেষ্টা করছি, জাতীয় নিরাপত্তা ও নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই।'
ইন্টারনেটে গতি কমিয়ে দেওয়া হবে- এমন ঘোষণা আগে ছিল কি না, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'পরিবেশ-পরিস্থিতির প্রয়োজনীয়তার স্বার্থে, গোয়েন্দা সংস্থার প্রয়োজনে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতার স্বার্থে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। যত দ্রম্নত পরিবেশটা নিয়ন্ত্রণে আসবে, আইনশৃঙ্খলা আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, আমরা এই আশঙ্কা থেকে মুক্ত হতে পারব। আমরা লক্ষ করছি, কোথা থেকে কারা এই অর্থায়ন করছে, কোথা থেকে কারা এই কনটেন্ট তৈরি করছে, তার জন্য আমরা ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থা জোরদার করছি। আমরা আশা করছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নয়ন আমরা ঘটাতে পারব।'
ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্ন ঘটার কারণে সাময়িক যে ক্ষতি ও অসুবিধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সেটা মেনে নিয়ে সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বুধবার রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেটের ফোর-জি সেবা বন্ধ রয়েছে। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু আছে। মোবাইল ইন্টারনেটের টু-জি সেবাও চালু আছে। সংশ্লিষ্ট অপারেটর সূত্রে বৃহস্পতিবার সকালে এ কথা জানা যায়।
ফোর-জি সেবা বন্ধ থাকায় মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবহারকারীরা। প্রবেশ করা যাচ্ছে না ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে।
সরকারের পক্ষ থেকে ফেসবুক ও ইউটিউবের সঙ্গে এসব কনটেন্ট নিয়ে কোনো ধরনের যোগাযোগ হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জুনাইদ বলেন, 'তারা যদি সহযোগিতা করত তাহলে আমাদের এত কঠোর অবস্থানে যেতে হতো না। বিতর্কিত কনটেন্ট অপসারণ নিয়ে তাদের প্রাইভেসি পলিসি, সেটিংস নিয়ে সন্তোষজনক না। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। উসকানি ছড়িয়ে পড়ার কারণেই ছয়টি প্রাণ ঝরে গেছে।'
এরপর তাদের কারণে যদি আর কোনো প্রাণহানি ঘটে তাহলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ। ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, টিকটককে উদ্দেশ করে প্রতিমন্ত্রী তাদের বাংলাদেশের পরিবেশ পরিস্থিতি মাথায় রেখেই এখানে ডেটা সেন্টার স্থাপন করতে এবং বাংলাদেশের আইন মেনে চলতে অনুরোধ জানান।