বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা ঠেকাতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে কাউকেই সন্ত্রাস-সহিংসতা সৃষ্টির সুযোগ আমরা দিতে পারি না। জনগণের জানমালের নিরাপত্তাকে বাধাগ্রস্ত করে- এমন কোনো কর্মকান্ড সহ্য করা হবে না।'
বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের প্রশিক্ষিত ক্যাডার বাহিনী ব্যাপক সন্ত্রাসী তান্ডব চালাচ্ছে এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের পরিবর্তে এবং কোটাবিরোধী আন্দোলনের বিপরীতে এখন বিএনপি-জামায়াত তাদের পুরনো আগুন সন্ত্রাস নিয়ে মাঠে নেমেছে। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ আশ্রয়ের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ইতোমধ্যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। এই আন্দোলন আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়। এই আন্দোলন বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত
\হহয়েছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের লাশ বানিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা।'
তিনি বলেন, 'এই প্রেক্ষাপটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জীবন নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে কোনো মায়ের বুক যাতে খালি না হয়, সে লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা নিরসনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। তিন শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী মারাত্মক আহত হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।'
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'তারা ছাত্রলীগের নারী শিক্ষার্থীদের হামলা করে বেধড়ক পিটিয়েছে, হলে আক্রমণ চালিয়ে তাদের লাঞ্ছিত করেছে এবং সাংবাদিকদের ওপরও হামলা করেছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও শিক্ষকদের জিম্মি করে রাখে। আবাসিক হলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।'
তিনি বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি, দ্রম্নততার সাথে এই ষড়যন্ত্রের স্বরূপ উদঘাটিত হবে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনবে। নতুন প্রজন্মের মস্তিষ্কে রাজাকারের মতো ভিন্ন শব্দ ঢুকিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ দেশবিরোধী রাজনীতির ধারা প্রচলনের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। যারা অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য সন্ত্রাস-সহিংসতার মাধ্যমে সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আমরা বাধ্য হব। কারা উসকানি দিয়েছে, দিচ্ছে- সব খতিয়ে দেখা হবে। দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পবিত্র দায়িত্ব আমাদের উপর বর্তেছে। আমরা সেখানে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হব না- এ কথা বলতে পারি।'
তিনি বলেন, 'এই সন্ত্রাসী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রয়োজনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের রাজপথে থেকে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের নিজেদের সহযোগিতামূলক সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য সাংগঠনিকভাবে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। যারা হত্যাকান্ড, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে- তারা যারাই হোক তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নিতেই হবে। জননিরাপত্তা বাধাবিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করলে ছাড় দেওয়া হবে না।'
এ সময় দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপস্নব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।