সারাদেশে চলছে চিরুনি অভিযান
সন্ত্রাসী হামলায় দেড় হাজার পুলিশ আহত, ১২১ জনের অবস্থা গুরুতর : এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার চার হাজার
প্রকাশ | ২৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০৮
কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে সারাদেশে চিরুনি অভিযান চলছে। চলমান অভিযানে রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও পুলিশ কর্মকর্তার অফিস ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগে জড়িত তিন এবং ঢাকায় এক হাজার ১১৭ জনসহ সারাদেশ থেকে প্রায় চার হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নাশকতার ঘটনায় ঢাকার বিভিন্ন থানায় ৩৮টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। নাশকতার ঘটনায় পুলিশের শত শত কোটি টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে অত্যন্ত পূর্বপরিকল্পিতভাবে সারাদেশে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড চালানো হয়েছে। ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়ার পরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পেছনে রাজনৈতিক মদদ থাকার সুস্পষ্ট তথ্য আছে। সেই তথ্য মোতাবেক নাশকতায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব ইউনিট অভিযান শুরু করেছে। রীতিমতো সারাদেশে চিরুনি অভিযান চলছে। এমন অপারেশন কত দিন চলবে, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট করে কিছুই জানানো হয়নি। তবে নাশকতারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। এমনকি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এমন নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল মামুন। তিনি মঙ্গলবার বিকালে যায়যায়দিনকে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন যেহেতু যৌক্তিক দাবি ছিল, তাই সেটি মেনে নেওয়ার বিষয়টি সরকারের তরফ থেকে আগাম আভাস দেওয়া হয়েছে। সরকারি দলের সিনিয়র নেতারা সে-সংক্রান্ত ইঙ্গিতও দিয়েছেন। এ ছাড়া উচ্চ আদালত আন্দোলনকারীদের পক্ষে যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন। এমন রায় দেওয়ার পর সারাদেশে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, তা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। এতে কোনো সন্দেহ নেই। রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধীরা পুরোপুরি দেশকে অচল করে দেওয়ার জন্য এবং দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটাতেই এমন নাশকতা চালিয়েছে। পুলিশ সদস্যদের ধরে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সরকারি ভবন, স্থাপনা ছাড়াও বিশেষ করে পুলিশের স্থাপনাগুলোতে টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যারা সাংবাদিক ও পুলিশকে হত্যা করতে, পারে তারা দেশ ও জাতির শত্রম্ন। তাদের কোনো ছাড় নয়। প্রত্যেকটি নাশকতার পাই পাই করে হিসাব নেওয়া হবে। ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। নাশকতাকারীদের হামলায় নিহত হয়েছেন টু্যরিস্ট পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. মুক্তাদির রহমান (৩৫), ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রো-রক্ষা বিভাগের নায়েক গিয়াস উদ্দিন (৫৮) এবং পিবিআইয়ের নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত ১ পুলিশ পরিদর্শক মাসুদ পারভেজ ভূঁইয়া (৫০)। পুলিশপ্রধান বলেন, নাশকতাকারীদের হামলায় আহত হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার পুলিশ সদস্য। যার মধ্যে ১২১ জন জীবনমৃতু্যর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তাদের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এ জন্য নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তারে সারাদেশে কম্বিং অপারেশন চালানোর কড়া নির্দেশনা দিয়েছি। একজন নাশকতাকারীও গ্রেপ্তারের বাইরে থাকা পর্যন্ত অপারেশন চলবে। এ জন্য যতই সময় লাগুক না কেন, তা দেখা হবে না। নাশকতাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যেই পুলিশের সব ইউনিটকে এ সংক্রান্ত কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা মোতাবেক অভিযান চলছে। পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক সাগর জানান, নাশকতার ঘটনায় পুলিশের শত শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সারাদেশে চলমান অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে কয়েক হাজার। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার কারওয়ান বাজারর্ যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মো. মুনীম ফেরদৌস বলেন, পুলিশপ্রধানের নিদের্শনা মোতাবেক কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নামে নাশকতায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে সারাদেশে চিরুনি অভিযান চালাচ্ছের্ যাব। অভিযানে সারাদেশ থেকে ১৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, গণমাধ্যমে প্রচারিত ফুটেজসহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে তিনজন ঢাকার রামপুরা বিটিভি ভবন, ট্রাফিক পুলিশ বক্স এবং রামপুরা এলাকায় থাকা ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনারের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে সরাসরি জড়িত। তারা হচ্ছেন- মো. তারেক রহমান, সজল ও ফয়সাল ওরফে রকি। বিটিভি ভবন, ট্রাফিক পুলিশ বক্স এবং ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তার অফিস ভাঙচুরের পর এতে আগুন দেওয়ার নেতৃত্ব দেন তারা। তারা নাশকতার মূল কারিগর। তারাই সামনের সারিতে থেকে পুরো রামপুরা এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তারা শুধু ধ্বংসযজ্ঞই চালায়নি, তারা রামপুরা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) এপিসি (আর্মার পার্সোনাল ক্যারিয়ার) বা সাঁজোয়া যানের ওপর ওঠে রীতিমতো উলস্নাস করতে থাকে। তাদের উলস্নাস অনেকটাই যুদ্ধ জয়ের মতো মনে হয়েছে। যদিও তারা এপিসি ভাঙচুর বা ক্ষয়ক্ষতি করেনি। তাদের নেতৃত্বেই পুরো এলাকায় তান্ডব চলেছে। এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন যায়যায়দিনকে জানান, নাশকতার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। পুলিশের ওপর হামলা, যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সরকারি কাজে বাধাদান এবং পুলিশ হত্যার ঘটনায় ঢাকার বিভিন্ন থানায় মোট ৩৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় আসামির সংখ্যা কয়েক হাজার। ইতোমধ্যেই গত ৪৮ ঘণ্টায় এক হাজার ১১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান চলছে। আমাদের চট্টগ্রাম বু্যরো অফিস জানায়, চট্টগ্রামে পোশাকশিল্প মঙ্গলবার থেকেই পুরোপুরি খোলা হয়েছে। শ্রমিকদের উপস্থিতিও ছিল প্রায় ৯৫ ভাগ। গত সোমবার বিজিএমই'র নেতারা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফকরুজ্জামান ও পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে কীভাবে পোশাকশিল্প কারখানা চালু রাখা যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়। সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে তিন দফা দাবি উপস্থাপনা করেন বিজিএমইএ নেতারা। দাবিগুলো হচ্ছে- শ্রমিকদের কারখানায় আসা-যাওয়ার সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ইন্টারনেট সেবা চালু করা এবং ব্যাংক খোলা রাখা। বৈঠক শেষে বিজিএমই নেতারা সাংবাদিকদের বলেন, চলমান সংকটের কারণে দেশের পোশাকশিল্প বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন। ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় বিভিন্ন দেশের বায়ার ও গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। তৈরিকৃত পোশাক সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এমনকি নতুন কোনো অর্ডার নেওয়া যাচ্ছে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পোশাক তৈরি ও সরবরাহ না করা গেলে বাজার হারানোর আশঙ্কা করেন তারা। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনার বলেন, মালিকপক্ষ নিজ নিজ দায়িত্বে মঙ্গলবার থেকে পোশাকশিল্প চালু রাখতে পারবেন। শ্রমিকদের আইডি কার্ড কারফিউ পাস হিসেবে বিবেচিত হবে। আমাদের ময়মনসিংহ বু্যরো অফিস জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে হামলা, ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধাদান এবং নাশতার অভিযোগে ময়মনসিংহ বিভাগের অধীন জেলার বিভিন্ন থানায় ৩৩টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। দায়েরকৃত মামলায় ১৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন। মঙ্গলবার ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও গৌরিপুর থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। তিনি আরও জানান, চলমান আন্দোলনে রেঞ্জের ৭০-৮০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বেশকিছু যানবাহন, পুলিশ বক্সসহ বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জামালপুরে ট্রেন থামিয়ে নাশকতার চেষ্টা করা হয়েছিল, সেখানে পুলিশ আহত হয়েছে। গৌরিপুরে পুলিশের ওপর হামলায় ওসি আহত হয়েছেন। শেরপুর সদর থানার ওসি আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এসব ঘটনায় কারা জড়িত, তাদের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। যারা দুষ্কৃৃতশারী, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্যই এই তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনে কোনো অবস্থাতেই আমরা কোনো সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করিনি। এই আন্দোলনের ওপর ভর করে দুষ্কৃতকারীরা ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড চালিয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে, নাশকতার চেষ্টা করেছে। যারা নাশকতা করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের বসে থাকার জন্য নামানো হয়নি। নাশকতা ঠেকাতে আমরা আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে পারি। আমাদের যে অস্ত্র দেওয়া হয়, প্রয়োজনে সেই অস্ত্রের ব্যবহারে আইনগত অধিকার দেওয়া হয়েছে। আমরা দায়িত্ব পালনে সচেতন। দায়িত্ব পালনে বিন্দুমাত্র পিছপা হব না।' এদিকে সহিংসতার ঘটনায় ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগর নেতা আনোয়ার হোসেন সুজনসহ ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ। আমাদের নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া হত্যা মামলার আসামি হাজতি আব্দুল আলীকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ময়মনসিংহের ইশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারোবাড়ির বৈরাতি গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আলী ওই এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে। তিনি কারাগার থেকে পালিয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। আমাদের সিলেট প্রতিনিধি জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর নেতা এহসানুল হক জোবায়ের, বিএনপি নেতা কয়েস লোদীসহ ১১০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। সিলেট জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক লোকমান আহমেদ দাবি করেছেন, মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। টাঙ্গাইল থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে জেলার বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে দুই হাজার ৯৫৩ জনকে। যার মধ্যে ৪২৭ জনের নাম উলেস্নখ করা হয়েছে। নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরসহ সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামি হিসেবে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ১৪১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কুমিলস্না থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, হামলা ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ জনসহ গত তিন দিনে ১১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন- কুমিলস্না সিটি করপোরেশনের জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত কাউন্সিলর ইকরামুল হক বাবু, সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আহমেদ মোলস্না, জগন্নাথপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. জসিম উদ্দীন, কুমিলস্না মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সদস্য ইসরাফিল মজুমদার এবং কুমিলস্না সিটির ২৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান রবি। কুমিলস্নার কোতোয়ালি, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং ও দাউদকান্দি থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাফি। তিনি আরও জানান, নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে কুমিলস্নার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক খ. মুশফিকুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, জেলাটিতে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। মৌলভীবাজার থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে নাশকতার ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জেলা পুলিশ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। আমাদের বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে নাশকতা মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার কৈলাগ ইউনিয়ন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শামসুল ইসলাম (৬৩) ওই এলাকার হাসানুলস্নাহ মিয়ার ছেলে। বাজিতপুর থানার ওসি মোর্সেদ জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আসামিকে মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মাদারীপুর থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, জেলার পুলিশ ফাঁড়ি পোড়ানোর মামলায় ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াত-শিবিরসহ মোট ৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। পুলিশ ফাঁড়ি পোড়ানোর দায়ে সোমবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করে। নাশকতার ঘটনায় জেলাটির বিভিন্ন থানায় চারটি মামলা দায়ের হয়েছে।