সরকারকে আর সময় দেওয়া যাবে না :মির্জা ফখরুল

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন -ফোকাস বাংলা
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আমলা আর রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তারা আমলানির্ভর ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। তিনি বলেন, 'স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও আমাদেরকে অধিকার নিয়ে লড়াই করতে হচ্ছে। কোটাব্যবস্থা তো প্রধানমন্ত্রীই বাতিল করেছিলেন। আবারও আদালতকে ব্যবহার করে একটা ইসু্য বানিয়েছে। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। তবে একটা কথা বলতে চাই, আমাদের সবাইকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এই সরকারকে আর সময় দেওয়া যাবে না।' মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব উলেস্নখ করেন, 'স্বাধীনতার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের ছাত্রসংগঠন এনএসএফ পৈশাচিক নির্যাতন করত। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ সেটিই করছে। তারা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে। অথচ শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত। মির্জা ফখরুল বলেন, 'সোমবার একদিনে ছাত্রলীগ যা করেছে তা পাকিস্তানিদের চেয়ে কোন অংশে কম? তারা হাসপাতালে গিয়ে হামলা চালিয়েছে। স্বাধীনতার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের ছাত্র সংগঠন এনএসএফ পৈশাচিক নির্যাতন করত।' তার ভাষ্য, 'বর্তমানেও আওয়ামী লীগ সরকারের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ সেটিই করছে। তারা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে। অথচ শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত।' তিনি বলেন, 'সুতরাং আজকে ঘৃণা এবং ক্ষোভের সঙ্গে বলতে হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ বর্বর হামলা চালিয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশের অবস্থা ভয়াবহ। দেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র নেই। মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্র \হনির্বাসিত করেছে। দেশকে পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত করেছে।' বিএনপির মহাসচিব বলেন, শুধু ঢাকাতে নয় গোটা দেশে এই হামলা চালিয়েছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এখন সবার উচিত আন্দোলন করা। আমাদের সন্তানদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। এই সময়ে রুখে দাঁড়াতে না পারলে দেশ ও জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। তিনি বলেন, 'আমরা জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফেরত চাই। এটাই মূল সমস্যা। আমরা সুষ্ঠু ও জবাবদিহিমূলক সরকার চাই, ব্যবস্থা চাই। কিন্তু সরকার একের পর এক ইসু্য তৈরি করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চেষ্টা করছে।' অপর অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, 'মশিউর রহমান যাদু মিয়ার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। তিনি আমার বাবার সহপাঠী ছিলেন। অনেকেই তাকে বিতর্কিত বলেন। কিন্তু আমি যা দেখেছি তা হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি গঠন করেছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন তখন তিনি একটা নতুন রাজনৈতিক দলগঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। সে সময় যে কয়েকজন রাজনীতিবিদ এসেছিলেন তাদের একজন মশিউর রহমান যাদু মিয়া। এমনকি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিকে বিলুপ্ত করে বিএনপিতে একীভূত করে দেন। তিনি আমাদেরকে পথ দেখিয়েছিলেন।' তিনি আরও বলেন, 'অনেকেই বিরোধিতা করলেও যাদু মিয়া ছিলেন অটল। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। কিন্তু তিনি বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারেননি। তিনি বাংলাদেশের কল্যাণের জন্য ভাবতেন। তার মতো লোকদেরকে একীভূত করে জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেছিলেন জিয়াউর রহমান।' জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, 'মশিউর রহমান যাদু মিয়া ছিলেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। ডান-বাম সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছেন তিনি।' ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উলস্নাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুবউলস্নাহ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, নূর মোহাম্মদ খান প্রমুখ।