এক দুপুরের যানজটে নাস্তানাবুদ নগরবাসী

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সড়কেই আরও এক দুপুর দীর্ঘ হলো রাজধানীবাসীর। চলতি পথে যানজট আর গরমে নাস্তানাবুদ হতে হলো তাদের। গন্তব্যে যেতে এক জায়গাতেই কেটে গেল ঘণ্টার পর ঘণ্টা, তবুও যেন গাড়ি এগোয় না, পথ ফুরোয় না। রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসেই কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের গণপদযাত্রা ও সমাবেশের কারণে যানজটের এমন দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে তাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত সড়ক ছিল শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের দখলে। আর এর রেশ ধরে রাজধানীর অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ ছিল প্রায় চার ঘণ্টা। এসব সড়কের সঙ্গে যুক্ত অন্য সড়কগুলোয়ও গাড়ির চাপ বেড়ে এক পর্যায়ে অনড় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এদিন বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে কোটা আন্দোলনকারীদের পদযাত্রা শুরু হয়। শাহবাগ, মৎস্যভবন হয়ে সচিবালয়ের সামনে দিয়ে বঙ্গভবনে যাওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। কয়েক দফা পুলিশের সঙ্গে মুখোমুখি হয় তাদের মিছিল। এর মধ্যেই ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগিয়ে যায় বঙ্গভবনের দিকে; যা গিয়ে থামে গুলিস্তানে। তবে পুলিশ শক্তি প্রয়োগ না করায় কোনো সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। গণপদযাত্রা শেষে আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল দুপুর ৩টায় বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেয়। এরপর গুলিস্তানে সমাবেশ করে তারা। পরে সাড়ে ৩টার দিকে সমাবেশ শেষ করে ক্যাম্পাসের দিকে চলে গেলে বিকাল ৪টার পর থেকে রাস্তা সচল হতে শুরু করে। আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়ে দিলেও যানজটের জের ছিল আরও অন্তত দুই ঘণ্টা। অফিস ছুটির পর সচিবালয় থেকে বের হওয়া গাড়িগুলো নতুন করে যানজটে আটকা পড়ে। এদিন দুপুরের পর থেকেই রাজধানীর জিরো-পয়েন্ট গুলিস্তানমুখী সড়কগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যানজট ছড়াতে থাকে। বিকাল ৩টার দিকেও তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা থেকে মগবাজার হয়ে গুলিস্তানমুখী সড়কে সারি সারি গাড়ি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কিছু সময় পরপর গাড়ির চাকা সচল হলেও একটু এগোনোর পরই তা থেমে যায়। এর প্রভাব পড়ে গুলিস্তান থেকে মহাখালী, বিমানবন্দর, মিরপুর, গাবতলী, রামপুরা, যাত্রাবাড়ীসহ সব সড়কে। ভ্যাপসা গরমে বাসে বসে থাকতে না পেরে অনেক যাত্রীকে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে দেখা যায়। তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে ছিল গাজীপুর-গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী প্রভাতী বনশ্রী পরিবহণের একটি বাস। বিকাল ৩টার দিকে বাসের চালক আব্দুল জব্বার বলেন, 'গুলিস্তান ফ্লাইওভার (যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান মেয়র হানিফ উড়াল সড়ক) বন্ধ করেছে পুলিশ। কোনো গাড়ি নামতে পারে না। পল্টন মোড়ে সব গাড়ি আটকা হুনলাম (শুনলাম)।' হাতে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় নিয়ে গাজীপুর থেকে রওনা দিয়ে ট্রিপ শেষে দুপুর আড়াইটার দিকে গুলিস্তানে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা ছিল তার। অথচ ৩টার দিকেও সাতরাস্তা পেরোতে পারেননি। কখন গুলিস্তান পৌঁছাতে পারবেন সেটি বুঝতেও পারছেন না। সড়কে চালক জব্বার যখন যানজটে পড়ে নাস্তানাবুদ হচ্ছিলেন সেই সময় দুশ্চিন্তা পেয়ে বসেছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান প্রবাসী জয়নাল আবেদিনকে। ফ্লাইট মিস করার ভয়ে ছিলেন তিনি। ৫ মাস দেশে ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন তিনি।