কোটা আন্দোলন

পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০৯

যাযাদি রিপোর্ট
পুলিশের যানবাহন ভাঙচুর ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এক পুলিশ সদস্য। মামলায় এজাহারনামীয় কাউকে আসামি করা হয়নি। আসামি হিসেবে অজ্ঞাত বহুসংখ্যক আন্দোলনকারীর কথা উলেস্নখ করা হয়েছে। শনিবার ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স পরিবহণ বিভাগের গাড়িচালক কনস্টেবল খলিলুর রহমান বাদী হয়ে শাহবাগ মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১১ জুলাই কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি চলছিল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শাহবাগ এলাকায় একটি এপিসি-২৫ (আমার্ড পারসোনাল ক্যারিয়ার) ও একটি জলকামান মোতায়েন ছিল। এপিসির চালক ছিলেন তিনি। আর \হনায়েক কামাল হোসেন ছিলেন জলকামানের চালক। তাদের সঙ্গে ছিলেন অপারেটর সমিরন বড়াই। তারা দুপুর ২টা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা জড়ো হতে থাকেন। এর আগে তারা বিভিন্ন হল থেকে জড়ো হয়ে হলের সামনে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলে হলের ছাত্ররা যোগ দেন। বিশাল মিছিলটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে বিকাল পৌঁনে ৫টার দিকে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। আন্দোলনকারীরা শাহবাগে এসে জড়ো হন। একপর্যায়ে তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হন। সে সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গায় লিপ্ত হন। পরে তারা বেআইনিভাবে জোটবদ্ধ হয়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে যান। পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করেন। পরে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে শুনিয়ে শাহবাগে নিয়ে যান। এরপর আবারও বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বেরিক্যাড ভেঙে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের (শেরাটন) দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। এ সময় ছাত্ররা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরাপদ জায়গায় রাখা এপিসি ও জলকামানের ওপর চড়ে নৃত্য করতে থাকেন। বিক্ষোভকারীরা জলকামানের চালককে জোরপূর্বক গাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। নৃত্য করার কারণে এসিপির সামনের বনেটের সামনে থাকা রেডিও এন্টিনা, মার্টগার্টসহ বিভিন্ন জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সবমিলিয়ে এপিসিটির অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। বিক্ষোভকারীরা পানির বোতল, টেপ পেঁচানো টেনিসের বল ও ইটের টুকরো জলকামান লক্ষ্য করে ছুড়ে মারেন। এতে অনেক পুলিশ আহত হন। এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাতনামা অনেক ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে এমন কর্মকান্ডে অংশ নেন। পুলিশের উদ্দেশ্যে নানা ধরনের কটূক্তি করে। পুলিশকে মারধর করতে তেড়ে যান। শেষ পর্যন্ত পুলিশকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে শাহবাগ মোড় ত্যাগ করেন। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হয়ে সরকারি কাজে বাধাদান, পুলিশ সদস্যদের মারধর ও আঘাত করা, পুলিশকে কটূক্তি করা ও দাঙ্গার সৃষ্টি করার অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দায়েরকৃত মামলায় আনা অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিসি ক্যামেরা ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। পর্যালোচনা শেষে প্রয়োজন হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, দায়েরকৃত মামলাটির অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।