চীনা ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশে বিনিয়োগের এখনই উপযুক্ত সময়

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চীন সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বেইজিংয়ের সাংগ্রি-লা সার্কেলে চীনের ওয়ার্ল্ড সামিট উইংয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধা বিষয়ক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন -ফোকাস বাংলা
পারস্পরিক স্বার্থে 'বিশ্বের সবচেয়ে উদার' বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের প্রধান খাতগুলোয় বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার বেইজিংয়ের সাংগ্রি-লা সার্কেলে চীনের ওয়ার্ল্ড সামিট উইংয়ে 'বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সুযোগ' শীর্ষক এক সম্মেলনে চীনা ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের তিনি এ আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, 'এখনই বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় এবং আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমাদের হাতে হাত মিলিয়ে একসঙ্গে আমরা দুর্দান্ত কিছু অর্জন করতে পারি।' সফরের দ্বিতীয় দিন সম্মেলনে বাংলাদেশের আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এবং উন্নয়ন খাতের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আমাদের অবকাঠামো, জ্বালানি এবং লজিস্টিক খাতে বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই।' তিনি বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি চীনা বিনিয়োগের উলেস্নখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জ্বালানি খাতে। জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট ফার্মিং চীনের সঙ্গে ক্রয়-ব্যাক ব্যবস্থাসহ কৃষি-প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে সহযোগিতার সুযোগ উন্মুক্ত করে। তিনটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হচ্ছে যেখানে চীন রিয়েল এস্টেট এবং আতিথেয়তা খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। এবং আমি চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে পোর্টফোলিও বিনিয়োগ অন্বেষণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।' বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমরা একটি শক্তিশালী বন্ড বাজার বিকাশে উলেস্নখযোগ্য অগ্রগতি করেছি। আমরা ডেরিভেটিভ পণ্য প্রবর্তনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি, যা আমাদের আর্থিক বাজারে আরও বৈচিত্র্য আনবে এবং প্রসারিত করবে।' বাংলাদেশ ডিজিটাল যুগকে 'সর্বাত্মভাবে' গ্রহণ করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'সরকার সক্রিয়ভাবে আইসিটি সেক্টরের প্রবৃদ্ধি জোরদার করছে, স্টার্টআপগুলোকে প্রণোদনা দিচ্ছে, টেক পার্কে বিনিয়োগ করছে এবং উদ্ভাবনা ও উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করে এমন একটি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলছে। আমাদের তরুণ উদ্যোক্তারা বিশ্ব মঞ্চে তাদের অবস্থান তৈরি করছে এবং আমরা আপনাদের এই আকর্ষণীয় যাত্রার শরিক হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং সবুজ প্রযুক্তিতে অসংখ্য সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।' অনুষ্ঠানে চীনের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স লি ফেই, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রম্নপ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওয়াং টংঝু, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট ও সিইও মার্ক ওয়াং, হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল ইসলাম। বাংলাদেশ ও চীনের কয়েকশ ব্যবসায়ী নেতা, বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তা এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। চীনা বিপস্নবী বীরদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার এখানে তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে চীনা বিপস্নবী বীরদের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয় এবং বিউগেলে করুণ সুর বেজে ওঠে। বিকালে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী চীনা বিপস্নবী বীরদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী এখানে এসে পৌঁছালে চীনা সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।