সর্বজনীন পেনশনের 'প্রত্যয়' স্কিম নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে 'তথ্যের ঘাটতি' দেখছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।
শনিবার রাতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে চট্টগ্রাম বিভাগ আয়োজিত প্রীতি সাংবাদিক সম্মিলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আগের চারটি স্কিমের সঙ্গে গত মার্চে 'প্রত্যয় স্কিম' নামে একটি প্যাকেজ চালু করে অর্থ মন্ত্রণালয়। কিন্তু তাতে যুক্ত হলে অবসর-পরবর্তী আর্থিক সুবিধা কমে যাওয়ার শঙ্কায় আন্দোলন করছেন পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা।
চট্টগ্রামে শনিবারের অনুষ্ঠানে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, 'শিক্ষকরা আমাদের শ্রদ্ধার এবং সম্মানের। উনারা আন্দোলন করছেন। গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন করলে বাধা দেব কেমন করে। তবে এ বিষয়ে অনেক তথ্যের ঘাটতি আছে।'
'২ তারিখের প্রেস রিলিজে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যমে যেসব প্রতিবেদন আসছে, আমি দেখেছি। আমি বলব না, সেখানে মিথ্যা বলা হয়েছে। কিন্তু সেসব প্রতিবেদনে পর্যাপ্ত তথ্যের ঘাটতি আছে।'
ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, 'এই পেনশন স্কিম আমরা চালু করেছি দেশের সব মানুষের জন্য। শ্রমিক, কর্মজীবী এমনকি রাজনৈতিককর্মীসহ যাদের জন্য কখনোই অবসর জীবনে কোনো অর্থনৈতিক সুযোগই ছিল না।'
\হ'সেই বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে যখনই কথা হয়েছে, তারা বলেছেন, তাদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম খুব চমৎকার।'
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নীতি সব সময় জনকল্যাণের জন্য। সারা বিশ্বের বেস্ট প্রাকটিস থেকে বেছে এটা করা হয়েছে। হঁ্যা, সবাই পছন্দ করবেন তেমন নয়।'
'যারা এর (প্রত্যয় স্কিম) আওতায় নেই তারা অনেক কথা বলছেন, বিভিন্ন মাধ্যমে। অবশ্যই গণতান্ত্রিক দেশ কথা বলতেই পারেন। আমরা আওয়ামী লীগ, নির্বাচনের পূর্বে আমাদের ইশতেহারে যা দেওয়া হয়, পরে তা-ই অনুসরণ করা হয়।'
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, 'অবশ্যই গণমাধ্যমকর্মীরা বলিষ্ঠভাবে সব সত্য কথা বলবেন। তারা যেমন রাজনীতিবিদদের জবাবদিহি করবেন, তেমন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহির আওতায় আনবেন। এমনকি যেখানে কাজ করেন, যে মালিকরা তাদের বঞ্চিত করেন তাদেরও জবাবদিহি করবেন।'
সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পের অধীনে 'প্রতয় স্কিমে' অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০২৪ সালের ১ জুলাইয়ের পর যোগ দেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের অভিযোগ, এ স্কিম 'বৈষম্যমূলক'। এতে ১ জুলাই এবং এর পরে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা।
দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার থেকে আন্দোলন চলার মধ্যে ২ জুলাই 'সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রত্যয় এর শুভযাত্রা ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ের স্পষ্টীকরণ' শীর্ষক বার্তা পাঠানো হয় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ থেকে।
ওই বার্তায় বলা হয়, গত ৩০ জুনের আগে চাকরিতে যোগদানকারী শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নতুন স্কিমে যুক্ত হওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই।
সর্বজনীন পেনশনের পঞ্চম স্কিম 'প্রত্যয়' নিয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা 'প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার' ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।