শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপার্ট
শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -সংগৃহীত
সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী ছাত্র-তরুণদের দাবি ন্যায্য ও যৌক্তিক বলে মনে করছে বিএনপি। তাই চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে দলটি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের 'প্রত্যয়' স্কিম প্রত্যাহারের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে তারা। শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। এই দুই আন্দোলন সম্পর্কে দলের অবস্থান জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। বৃহস্পতিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠকে এই দুই আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিএনপি কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ভর করছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি তো রাজনৈতিক দল। দেশের ভেতরে যা হচ্ছে, তার প্রতিক্রিয়া তো বিএনপিকে দিতেই হবে। এটা ছাত্রদের আন্দোলন। এখানে বিএনপির সম্পৃক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই বলে ন্যায্য আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন করব না? মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, 'একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে এসে প্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক বৈশ্বিক ব্যবস্থায় টিকে থাকতে হলে মেধাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। তাই সাধারণ ছাত্রসমাজের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিসমূহের সঙ্গে বিএনপি একমত। আমরা আশা করি, সময় থাকতে সরকার ছাত্রসমাজের ন্যায়সঙ্গত যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নেবে। আমরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারিদের যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে তা অবশ্যই যৌক্তিক ও সমর্থনযোগ্য। আমরা তাদের এই যৌক্তিক আন্দোলন সমর্থন করছি এবং অবিলম্বে এই পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।' বিএনপি মহাসচিব বলেন, শিক্ষকদের বিষয়টি স্পর্শকাতর এই জন্য যে, তাদের তো অন্য কোনো আয় নেই। অন্যদের 'চুরি-চামারি' দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সেটি নেই। বিএনপি কখনো সরকারের গেলে প্রত্যয় স্কিম বাতিল করবে। কোটার বিষয়ে দলের অবস্থান জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও নৃজাতিসহ পিছিয়েপড়াদের জন্য কোটা থাকতে পারে। কিন্তু সেটি ৫৬ শতাংশ নয় বড়জোর ৫ থেকে ১৫ শতাংশ হতে পারে। এর বেশি হলে মেধার মূল্যায়ন থাকে না। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী, কোনো শ্রেণীতেই কোটা পদ্ধতি মেধা বিকাশের সহায়ক হতে পারে না। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স হয়ে গেছে। অনেকে বেঁচে নেই। তাদের সন্তানেরা কোটা সুবিধা পাবেন, তাতে তাদের আপত্তি নেই। তবে সেটার নাম করে যে কাউকে মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দিয়ে, হাজার হাজার সার্টিফিকেট বানিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে টাকার বিনিময়ে। এটা সমর্থন করা যায় না। বিএনপি মহাসচিবের অভিযোগ, বর্তমান সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে অর্থাৎ আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে জনগণের ন্যায্য দাবিসমূহ দমিয়ে রাখার ঘৃণ্য পুরনো কৌশলেই ছাত্রসমাজের ন্যায্য আন্দোলনকে দমানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগের দোহাই দিয়ে ছাত্রসমাজের যৌক্তিক দাবিসমূহকে দমানোর সব অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে সার্বজনীন পেনশন স্কিম নামে নতুন স্কিম চালু করা সরকারের দুর্বল আর্থিক খাত মেরামত করার একটা কৌশল। এটি এই অবৈধ ও আর্থিক দেউলিয়া সরকারের আরেকটি নতুন লুটপাটের স্কিম, যার নাম পেনশন স্কিম, প্রত্যয় স্কিম। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারিদের সঙ্গে অর্থাৎ অংশীজনদের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই স্বেচ্ছাচারি কায়দায় বাধ্যতামূলকভাবে এটা চালু করতে চাচ্ছে অবৈধ সরকার। ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ব্রিটেনের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় লেবার পার্টি নেতা কিয়ের স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছে বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, নতুন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি-রাজনীতি যে সমস্যা আছে কাটিয়ে উঠবে। একই সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাসুদ পেজেশকিয়ান নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাকেও দলের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান বিএনপি মহাসচিব।