সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১

ত্রিমুখী সংঘাতে কোটা আন্দোলন

মাঠে নেমেছে ছাত্রলীগ রোববার ছাত্র ধর্মঘটের ডাক কঠোর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
সাখাওয়াত হোসেন
  ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
ত্রিমুখী সংঘাতে কোটা আন্দোলন

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, সড়ক ও রেলপথ অবরোধের মতো নানা কর্মসূচি পালন করছে। যদিও এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতে শুনানি থাকায় এ নিয়ে এতদিন কিছুটা ধীরগতিতে এগিয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রাখায় আন্দোলনকারীরা এবার তাদের আন্দোলন তীব্রতর করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার শাহবাগ মোড়, রায় সাহেব বাজার, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক, কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক, চট্টগ্রাম-হাটহাজারী মহাসড়ক এবং ময়মনসিংহে রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এছাড়া দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা দিনভর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। দাবি আদায়ে আগামী রোববার সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এদিকে কোটা আন্দোলন কর্মসূচি প্রতিহত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ মাঠে নেমেছে। কোথাও কোথাও দু'পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যেভাবে মুখোমুখি হয়ে পড়ছে, তাতে সহসাই দু'পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাত, সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে। আর কোথাও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটলে এর উত্তাপ দেশের বিভিন্ন স্থানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যদিকে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীরা যাতে আন্দোলনের নামে নাশকতা কিংবা সহিংসতায় জড়িয়ে পড়তে না পারে এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়ায় তারা মাঠে তৎপর রয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে স্বার্থান্বেষী

\হকোনো গোষ্ঠী যাতে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে না পারে সেদিকেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হতে পারে বলে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, আন্দোলনকারীরা জনগণের জানমালের ক্ষতি করার অপচেষ্টা চালালে কিংবা যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটালে বাধ্য হয়ে তাদের অ্যাকশনে নামতে হবে। কারণ নগরবাসীর নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব তাদের। কেউ তা নষ্ট করার চেষ্টা চালালে তাদের তা কঠোর হাতে দমন করা ছাড়া উপায় থাকবে না। তবে শিক্ষার্থীদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দেবে না পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের একজন এডিসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, আন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগের মাঠে নামার বিষয়টি তারা অনেকেই ভালোভাবে দেখছেন না। কারণ তাতে হিতেবিপরীত হতে পারে। দু'পক্ষের সংঘর্ষে আন্দোলনের উত্তাপ বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পরস্পর সংঘাত-সহিংসতায় জড়ালে তা নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশের পক্ষে কঠিন হবে।

এদিকে ২০১৮ সালে কোটা বিরোধী আন্দোলনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন নগরবাসী অনেকেই। তারা মনে করেন, কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরুতেই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তা আগের মতোই ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। এতে শুধু আন্দোলনকারীরাই নয়, নিরীহ পথচারী, গণপরিবহণ যাত্রী, এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হতাহত হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আন্দোলনের স্পটকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য।

শাহবাগ এলাকার ফুলের দোকানি জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে বেশ কয়েকদিন তাদের ব্যবসা একরকম বন্ধ ছিল। ভয়ে এ সময় অনেকে দোকান খোলেনি। ঝুঁকি নিয়ে যারা দোকান খুলেছে, তাদেরও সেভাবে বেচাকেনা হয়নি। ওই দোকানির আশঙ্কা, এবারও কোটাবিরোধী আন্দোলন দিনে দিনে যেভাবে তীব্র হয়ে উঠছে তাতে তাদের আবারও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও তা উপেক্ষা করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার পর থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। এ অবরোধ সন্ধ্যা ৬টায় প্রত্যাহার করা হয়। দীর্ঘ সময় সড়ক অবরোধ থাকার কারণে রাজধানীর শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে।

এ সময় তারা নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কমসূচির মধ্যে রয়েছে- শুক্রবার অনলাইন-অফলাইনে বৈঠক, শনিবার বিকাল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল এবং রোববার সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ অবস্থান ধর্মঘট।

সরেজমিন শাহবাগ মোড়ে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকেই বৃষ্টির মধ্যে অবস্থান নিয়ে তাদের দাবির পক্ষে স্স্নোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এর ফাঁকে ফাঁকে চলছে প্রতিবাদী গান ও কবিতা। শাহবাগ মোড় অবরোধ করার ফলে কাঁটাবন মোড়, মিরপুর ও মতিঝিলগামী বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসব সড়কের বাস ও অন্য বাহনগুলো শাহবাগ মোড় এড়িয়ে ভিন্ন পথ ব্যবহার করে। তবে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে রাস্তা তৈরি করে দিতে দেখা গেছে।

অবরোধকালে দলনিরপেক্ষ ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সদস্যসচিব ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, 'আমরা এখানে এক ঘণ্টার জন্য আসিনি। আমরা দাবি আদায় করার জন্য এসেছি। দাবি আদায় করে ঘরে ফিরব। শিক্ষার্থীরা জেগে উঠেছে। দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।'

দুপুর ১২টার সময় শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। তাদের অবরোধের পর ঢাকা কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন অবরোধ কর্মসূচিতে।

দুপুর ১টার দিকে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড় অবরোধ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে ১টার দিকে সেখান থেকে রায়সাহেব বাজার অভিমুখে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে যাত্রা শুরু করলে বৃষ্টির বাধায় পড়েন। পরে বৃষ্টিতে ভিজেই তারা রায় সাহেব বাজার মোড় অবরোধ করেন।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকের অভিযোগ, সকাল থেকেই বিভিন্ন হলের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা হল থেকে আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের বেরোতে দিচ্ছেন না।

কয়েকটি হল ঘুরে দেখা যায়, সূর্যসেন হলের গেটে তালা দিয়ে অবস্থান করছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এসময় হল থেকে কাউকে বের হতে দিচ্ছিলেন না তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফরিদ বলেন, 'শিক্ষার্থীরা যাতে হল থেকে বেরোতে না পারে তাই সতর্ক অবস্থানে আছি।' জহুরুল হক হলের প্রধান গেটের সামনে দুই সারি চেয়ার নিয়ে অবস্থান করছিলেন তিনিসহ কয়েকজন।

একাধিক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের ওপর নির্দেশ আছে শিক্ষার্থীরা যাতে আন্দোলনে না যেতে পারে। এজন্যই তারা বিভিন্ন হলের সামনে পাহারা বসিয়েছে। যদিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের দাবি, শিক্ষার্থীদের আটকানোর কোনো নির্দেশনা নেই।

যায়যায়দিনের চট্টগ্রাম বু্যরো অফিস জানায়, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে হাটহাজারী-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে হাটহাজারী-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। পরে দেড়টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

অবরোধ শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি জানান এবং শুক্রবার বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।

যায়যায়দিনের বাকৃবি প্রতিনিধি মো. আমান উলস্নাহ জানান, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও চলমান ট্রেন থামিয়ে আন্দোলন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আব্দুল জব্বার মোড়ে অবস্থিত রেললাইনে অবরোধ করে চলমান জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। প্রায় ২ ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেওয়া হলে ৩টা ১০ মিনিটে জামালপুর এক্সপ্রেস গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

এর আগে বিভিন্ন হল থেকে মুক্তমঞ্চে এসে সমবেত হন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি কে আর মার্কেট পর্যন্ত যায়। পরে মুক্তমঞ্চের সামনে দিয়ে এসে আব্দুল জব্বার মোড়ে পৌঁছে রেলপথ অবরোধ করে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা।

বিক্ষোভে 'বঙ্গবন্ধুর বাঙলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই', 'দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান', 'স্বাধীন এই বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই', '১৮ সালের পরিপত্র, পুনর্বহাল করতে হবে'সহ বিভিন্ন স্স্নোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা।

রাবি প্রতিনিধি আসিক আদনান জানান, সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা সমবেত হয়। তারা বেশকিছু সময় সেখানে অবস্থান করে 'মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা'; 'সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে'; 'আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার'- এ ধরনের কোটা বিরোধী বিভিন্ন স্স্নোগান দেন।

বরিশাল অফিস জানায়, কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বই ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৫টা পর্যন্ত তাদের অবরোধ কর্মসূচি চলমান ছিল।

বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও খয়রাবাদ সেতু প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা এবং ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় চলাচলকারী যানবাহনের চালক-হেলপারসহ যাত্রীদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি প্রয়োজনের যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এদিকে গণপরিবহণে থাকা অনেককেই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর হেঁটে আন্দোলনস্থল অতিক্রম করে গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে।

জাবি প্রতিনিধি শিহাব উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ চেম্বার আদালতের রায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিলে দুপুর বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। শুরুতে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে ১ ঘণ্টা অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হলেও যাত্রীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আধাঘণ্টা পর তা গুটিয়ে নেওয়া হয়। তবে এরপরও মহাসড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

এদিকে হাইকোর্টে শুনানি না হওয়ায় কোটাবিরোধী আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কায় আন্দোলন চালিয়ে নিতে 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' ব্যানারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে