নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যৎ- ঋষি সুনাক নাকি কিয়ার স্টারমার, কার হাতে বেশি নিরাপদ- এই প্রশ্নের জট খুলতে আজ ব্যালটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাজ্যের জনগণ।
প্রায় দেড় মাসের নির্বাচনী প্রচারণা শেষে দেশজুড়ে আজ স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এই নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি, লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গ্রিন পার্টি, রিফর্ম পার্টি, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টিসহ ছোট-বড় অন্তত ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করছে।
তবে জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে লেবার পার্টি। হাউস অব কমন্সের ৬৫০টি আসনের বিপরীতে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত, স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ এই নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে গত ২২ মে আকস্মিক আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। যদিও ২ মে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনের পর লেবার পার্টি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। নির্বাচনে প্রধান দলগুলো জনমত নিজেদের দিকে টানতে চলমান সমস্যার সমাধানে ও সুসংহত যুক্তরাজ্য গড়ে তুলতে নির্বাচনী ইশতেহারে নানা প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে।
ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময় থেকে যুক্তরাজ্যের ভঙ্গুর অর্থনীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, অভিবাসন সমস্যাসহ সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জনগণ বেশ বিরক্ত। তা ছাড়া টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের প্রতিও আস্থা রাখতে পারছে না সাধারণ মানুষ।
এমন বাস্তবতায় পরিবর্তনের সমূহ সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে লেবার পার্টির কাছে আত্মসমর্পণ না করতে বলেছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঋষি সুনাক বলেন, লেবার পার্টির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথা বলা হলেও নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি একদম হাল ছেড়ে দেননি।
২০১০ সাল থেকে টানা তিনবার ক্ষমতায় আছে কনজারভেটিভ পার্টি। এ দলের অবস্থা নড়েবড়ে। আর মে মাসে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ফুরফুরে মেজাজে থাকা আত্মবিশ্বাসী লেবার পার্টি জাতীয় নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী।
লেবার পার্টির পরিবর্তনের ডাকের সঙ্গে জনগণও যে পরিবর্তন চান, সেটির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে নির্বাচনী জনমত জরিপগুলোতে। সবশেষ জনমত জরিপে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে
\হপ্রথম অবস্থানে রয়েছে লেবার পার্টি। লেবার পার্টি থেকে ১৯ পয়েন্ট কম, তথা ২১ পয়েন্টে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বর্তমান ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ভালো ফলাফল করলেও নির্বাচনী জরিপে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ওঠে এসেছে রিফর্ম ইউকে।
নির্বাচনী প্রচারণায় লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার বলে আসছেন, ক্ষমতায় গেলে অর্থনীতি পুনর্গঠন, স্বাস্থ্যসেবাকে গতিশীল করা, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো, স্কুলগুলোতে আরও শিক্ষক নিয়োগসহ অবৈধ অভিবাসীদের রুয়ান্ডা না পাঠিয়ে নিজ নিজ দেশে পাঠাবেন। স্টারমার কনজারভেটিভ পার্টির টানা ১৪ বছরের 'বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি' থেকে দেশকে পুনর্গঠনের জন্য ৪ জুলাই লেবার পার্টিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও তাদের মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সভা-সমাবেশ, লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব বিভিন্ন গণমাধ্যমের নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন নানা প্রশ্নের।
গত ২৭ জুন ডেইলি সানের এক বিতর্কে অংশ নিয়ে লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার অবৈধ অভিবাসন বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অযাচিতভাবে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন। পরবর্তীকালে লেবার পার্টির ব্যাখ্যায়ও প্রশমিত হয়নি বাংলাদেশি কমিউনিটির ক্ষোভ। যুক্তরাজ্যের একটি বাংলা গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টারমার বাংলাদেশি কমিউনিটিকে আঘাত করা তার উদ্দেশ্য ছিল না এবং এই ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত বলে জানান।
এবার রেকর্ড ৩৪ বাংলাদেশি প্রার্থী
এই নির্বাচনে ৯ নারীসহ রেকর্ড ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী লড়াই করছেন, যার মধ্যে একক দল হিসেবে বিরোধী লেবার পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সর্বোচ্চ ৮ জন।
বিবিসি জানাচ্ছে, ৩৪ প্রার্থীর মধ্যে বেশির ভাগই এবার প্রথম ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে আবার অনেকে গাজা সংকটে লেবার পার্টির অবস্থানের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যে পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন ১১ জন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি, ২০১৯ সালে সংখ্যাটি বেড়ে হয় ১৪; এবার তা এক লাফে ৩৪ হলো।
লেবার পার্টির ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, তাদের প্রার্থী তালিকায় আটজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীর মধ্যে ছয়জনই নারী।
আর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারা দু'জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিককে এবার প্রার্থী করেছে।
অন্যান্য দলের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি অব ব্রিটেন থেকে ছয়জন, রিফর্ম ইউকে থেকে একজন, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস (লিব ডেম) থেকে একজন, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) থেকে একজন, গ্রিন থেকে তিনজন এবং সোশ্যালিস্ট পার্টি থেকে একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী সাধারণ নির্বাচনে নিজ নিজ দলের টিকিট পেয়েছেন।
এই ২৩ জনের বাইরে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ১১ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক।
বিবিসি লিখেছে, মূলত গাজায় ইসরাইলের হামলা নিয়ে লেবার পার্টি এবং দলটির এমপিদের নীরবতার প্রতিবাদ হিসেবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
সম্প্রতি ব্রিটেনের ডেইলি সান এর 'ইলেকশন শো-ডাউন' অনুষ্ঠানে লেবার নেতা কিয়ার স্টারমার অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে শুধু বাংলাদেশিদের নাম নেওয়ায় তীব্র সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে পড়েন।
একে পুঁজি করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা লেবার পার্টির দিকে ঝুঁকে থাকা ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের ভোট টানার চেষ্টা করছেন।
যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী ইতিহাসে এবারই প্রথম সবচেয়ে বেশি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রার্থী ভোট করছেন, যাদের মধ্যে লেবার ও ব্রিটেনের ওয়ার্কার্স পার্টি ১৪ জন রয়েছেন।
লেবার পার্টি থেকে আট প্রার্থী
যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি এবার আটজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশিকে প্রার্থী করেছেন। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও আটজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশিকে ভোটে নামিয়েছিল দলটি।
এবার যে আটজন লড়ছেন, তার মধ্যে চারজন সদ্য ভেঙে দেওয়া পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন। এবারও তারা তাদের একই নির্বাচনী আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন।
এ চার সংসদ সদস্য হলেন- রুশনারা আলী, রূপা আশা হক, টিউলিপ সিদ্দিক ও আফসানা বেগম।
বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি আসন থেকে এবারও লড়াই করছেন রুশনারা আলী। ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনে প্রার্থী হয়েছেন রূপা হক। হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনে লড়ছেন টিউলিপ সিদ্দিক। আর আফসানা বেগম প্রার্থী হয়েছেন পপলার অ্যান্ড লাইমহাউজ থেকে।
এবার রুশনারা আলীর নির্বাচনী আসনের এলাকা কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। ২০১৯ সালে তার নির্বাচনী এলাকা ছিল বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো, এবার সেটি বদলে করা হয়েছে বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি। বো এলাকাটি স্ট্রাটফোর্ডের সঙ্গে যুক্ত করে 'স্ট্রাটফোর্ড অ্যান্ড বো' আসনের নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিলেটের মেয়ে রুশনারা আলী প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি হওয়ার গৌরব অর্জন করেন ২০১০ সালে, লেবার পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ের মাধ্যমে। সেই থেকে টানা তিনবারের এই এমপি চতুর্থবারে নির্বাচনেও দলের আস্থায় রয়েছেন।
সিলেটের বিশ্বনাথে ১৯৭৫ সালে জন্ম নেওয়া রুশনারা মাত্র সাত বছর বয়সে বাবা-মার সঙ্গে লন্ডনে পাড়ি জমান। দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ডিগ্রিধারী রুশনারা পরামর্শক সংস্থা ইয়ং ফাউন্ডেশনের সহযোগী পরিচালক।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৫ সালে লেবার পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হন। ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার জয় পান তিনি।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ লন্ডনের মিচামে জন্মগ্রহণ করেন। টিউলিপের শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরে। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্মেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে।
টিউলিপের সঙ্গে একই বছর লেবার পার্টি থেকে জয়ী হন পৈতৃক সূত্রে পাবনার মেয়ে রূপা হক, যার জন্ম ১৯৭২ সালে লন্ডনের ইলিংয়ে।
রূপা হক ১৯৯১ সালে লেবার পার্টির সদস্য হন। তিনি একাধারে লেখক, মিউজিক ডিজে, কলামিস্ট হিসেবে পরিচিত।
এর আগে ২০০৫ সালের নির্বাচনে চেশাম ও এমারশাম আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়ন পেলেও নির্বাচিত হতে পারেননি তিনি। ২০০৪ সালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে পূর্ব লন্ডনের পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন আফসানা বেগম।
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সোচ্চার ভূমিকা পালন এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এমপি আফসানা বেগম।
আফসানার জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাওয়ার হ্যামলেটসেই। বাংলাদেশে তার আদি বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে।
লেবার পার্টির অন্য চার প্রার্থী
রুমি চৌধুরীকে লেবার পার্টি প্রার্থী করেছে উইথাম আসনে, রুফিয়া আশরাফকে দাঁড় করিয়েছে সাউথ নর্থহ্যামটনশায়ারে, গর্ডন অ্যান্ড বুশানে প্রার্থী হয়েছেন নুরুল হক আলী এবং নাজমুল হুসাইনকে প্রার্থিতার সুযোগ দেওয়া হয়েছে ব্রিজ অ্যান্ড ইমিংহ্যামে।
টোরি দলের দুই প্রার্থী
ক্ষমতাসীন টোরি পার্টি এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে দু'জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশকে তাদের দলের প্রার্থী করেছে। যার মধ্যে টটেনহ্যাম থেকে দাঁড়িয়েছেন আতিক রহমান এবং ইলফোর্ড সাউথ থেকে লড়ছেন সৈয়দ সাইদুজ্জামান।
ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে ছয় প্রার্থী
ব্রিটেনের ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে ভোটে লড়ছেন ছয়জন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ইলফোর্ড সাউথ থেকে গোলাম টিপু, বেডফোর্ড থেকে প্রিন্স সাদিক চৌধুরী, হ্যাকনি সাউথ থেকে মোহাম্মদ শাহেদ হোসেন, আলট্রিনশাম অ্যান্ড সেল থেকে ফয়সাল কবির, ম্যানচেস্টার রুশলম থেকে মোহাম্মদ বিলাল এবং স্টার্টফোর্ড অ্যান্ড বো থেকে হালিমা খান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রিফর্ম ইউকে থেকে একজন
কট্টর জাতীয়তাবাদী দল রিফর্ম ইউকের প্রার্থী সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে নেমেছে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রার্থী রাজ ফরহাদ, যিনি ইলফোর্ড সাউথ আসনে লড়ছেন।
লিব ডেম থেকে একজন
বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড স্টেপনি আসনে লিব ডেম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রুবিনা খান। এ আসনে লেবার থেকে লড়ছেন রুশনারা আলী।
স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি থেকে একজন
ডানফার্মলাইন অ্যান্ড ডলার আসন থেকে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নাজ আনিস মিয়া।
গ্রিন পার্টি থেকে তিন প্রার্থী
জলবায়ু সহনশীল যুক্তরাজ্য গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতিতে আসা গ্রিন পার্টি থেকে এবার তিনজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ভোটে লড়ছেন। তারা হলেন- ইলফোর্ড সাউথ থেকে সৈয়দ সিদ্দিকি, ওল্ডহ্যাম ওয়েস্ট ও রয়টন থেকে সৈয়দ শামসুজ্জামান শামস এবং লেইসেস্টার থেকে শারমিন রহমান।
সোশ্যালিস্ট পার্টি থেকে একজন
ফোকস্টোন আসন থেকে স্যোশালিস্ট পার্টির প্রার্থী হয়েছেন মমতাজ খানম।
স্বতন্ত্র ১১ প্রার্থীর যে কোথায় দাঁড়িয়েছেন
যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে এবার ১১ জন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন।
এর মধ্যে বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনি আসনেই প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। তারা হলেন- আজমল মাসরুর, সুমন আহমেদ ও স্যাম উদ্দিন।
অন্য আটজন স্বতন্ত্রের মধ্যে হলবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যাংকার্স আসনে প্রার্থী হয়েছেন ওয়েইস ইসলাম, পপলার অ্যান্ড লাইমহাউজ আসনে এহতেশামুল হক, ইলফোর্ড সাউথে নুরজাহান বেগম, নিউক্যাসেল সেন্ট্রাল ওয়েস্টে হাবিব রহমান, ওল্ডহ্যাম ওয়েস্টে রাজা মিয়া এবং স্ট্রাটফোর্ড অ্যান্ড বো আসনে দু'জন- ওমর ফারুক ও নিজাম আলী।
দ্য গার্ডিয়ান বলছে, যুক্তরাজ্যের এবারের নির্বাচনে ছোট-বড় মোট ৯৫টি রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিয়েছে। দেশটির ইতিহাসে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসের ৬৫০টি আসনের বিপরীতে এবারই সবচেয়ে বেশি ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী ভোট করছেন।
ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম মিরর লিখেছে, এবার জাতীয় নির্বাচন এতটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে যে, এমন কোনো নির্বাচনী আসন নেই যেখানে অন্তত পাঁচজন প্রার্থী দাঁড়াননি। এমন একটি আসন রয়েছে, যেখানে সর্বাধিক ১৩ প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। এবার ৩১৭টি আসনে ৪৫৯ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোট করছেন।
বিবিসির হিসাব অনুযায়ী, এবার প্রার্থী দেওয়া ৯৫টি দলের মধ্যে ৩৪টি একজন করে প্রার্থী দিয়েছে এবং বাকি দলগুলোর একাধিক প্রার্থী রয়েছে।
এ সংক্রান্ত আরও খবর পৃষ্ঠা ৮