সংসদে প্রধানমন্ত্রী

২০৩৫ সালের মধ্যে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে

প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে সমাপনী ভাষণ দেন -স্টার মেইল
হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়া থেকে বিদু্যৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে। বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, 'পেট্রোবাংলার অধীনে রূপান্তরিত গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডে (আরপিজিসিএল) একটি সেল গঠন করা হয়েছে। ওই সেল একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করবে। আশা করা যায়, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে।' আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত আরেক সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, 'ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য সমতার ভিত্তিতে সুবিচার নিশ্চিত করা এবং বিচারব্যবস্থায় দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধন করে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধপরিকর। বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে বর্তমান সরকার দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে অধস্তন আদালতে এক হাজার ৪২৯ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।' ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে আট লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৭টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এতে উপকারভোগী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৩৯ হাজারেরও বেশি। এ পর্যন্ত ৫৮টি জেলা এবং ৪৬৪টি উপজেলা সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হয়েছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী- এই পাঁচটি বিভাগ এখন সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত। অর্থাৎ এসব জেলা-উপজেলা ও বিভাগে কোনো ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষ নেই।' প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যারাক হাউসের মাধ্যমে আমরা ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৮টি পরিবারকে পুনর্বাসন করেছি। ব্যারাক হাউস ছাড়াও আমরা এক লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৩টি পরিবারকে নিজ জমিতে বিনামূল্যে গৃহনির্মাণ করে দেই। মুজিববর্ষ উপলক্ষে দুই লাখ ৬৬ হাজার ৮৫টি পরিবারের কাছে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে ২ শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা একক ঘর হস্তান্তর করেছি। মুজিববর্ষে উপকারভোগী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষ। ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল মানুষকে জমির মালিকানাসহ ঘর করে দেওয়ার লক্ষ্যে সারাদেশে ছয় হাজার ৯৪৫ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য তিন হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা। 'চিকিৎসা যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু ব্যবহারের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর' এদিকে, দেশে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়ে এগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, 'শুধুই কেনার জন্য নয়; হাসপাতাল ও রোগীর চাহিদা অনুযায়ী যন্ত্রপাতি কিনতে হবে এবং যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।' বুধবার গণভবনে 'সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ট্রান্সফরমেশন' বিষয়ক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কেএম শাখাওয়াত মুন অনুষ্ঠানের বিস্তারিত তুলে ধরেন। মুন বলেন, 'বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা পরবর্তী স্বাস্থ্য খাতকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী পদক্ষেপ তুলে ধরেন। গত দেড় দশকে বাংলাদেশে অন্যান্য খাতের মতো স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে সরকারের অর্জনগুলো ধরে রেখে এগিয়ে যাওয়ার গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।' স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ-বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাইমুল ইসলাম খান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।