শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

আন্দোলন করেই সরকারকে পরাজিত করতে হবে

বিএনপির সমাবেশে মির্জা ফখরুল
যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০০
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন -যাযাদি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে সরকারকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশনেত্রী ও দেশের মানুষকে রক্ষায় অবশ্যই তীব্র থেকে তীব্রতর আন্দোলন হবে। আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে পরাজিত করতে হবে।

শনিবার বিকালে নয়া পল্টনে এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন। নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সড়কে বিএনপির উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশ হয়। কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্টুরেন্ট মোড় থেকে ফকিরেরপুল মোড় পর্যন্ত নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। নেতাকর্মীদের হাতে হাতে ছিল খালেদা জিয়ার ছবি সংবলিত পস্ন্যাকার্ড। কারো কারো হাতে ছিল জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা।

এর আগে সকাল থেকে মুষল ধারায় বৃষ্টি হওয়ায় নয়া পল্টনের সড়কে কিছুটা পানি জমলেও দুপুর ১টা পর পানি চলে যায়। সকালে বৃষ্টির মধ্যেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ৬টি পিকআপের ওপর অস্থায়ীভাবে সমাবেশের মূল মঞ্চ তৈরি করা হয়। টানানো হয় ব্যানার। মূল মঞ্চ তৈরির পাশাপাশি নয়াপল্টন থেকে শুরু করে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত এবং অন্যপাশে কাকরাইল থেকে কর্ণফুলী মার্কেট পর্যন্ত লাগানো হয় মাইক। সকাল থেকেই ঢাকা মহানগরের পাশাপাশি আশপাশের জেলা ও মহানগর থেকে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করে নেতাকর্মীরা। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নানা স্স্নোগান দেয়। বেলা পৌনে ৩টায়

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুপুর ২টার আগেই নয়াপল্টন এলাকা নেতাকর্মীদের পদচারণায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। কার্যালয়ের সামনের দু' পাশের সড়ক বন্ধ যায়। সমাবেশ উপলক্ষে নয়া পল্টন, কাকরাইল, ফকিরের পুল, বিজয়নগর সড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'আওয়ামী লীগের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। একদিকে তারা ভোটের অধিকার হরণ করেছে, অন্যদিকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের উদ্দেশ্য বক্তব্য হচ্ছে, দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন। অন্যায় যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ কখনো দেশনেত্রীকে এ অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি অবস্থায় চলে যেতে দেবে না। এটা মনে রাখতে হবে।'

নিজ দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে একত্রীভূত করার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'ভারতে সঙ্গে যে চুক্তি করেছে তা সবাই বলছে বাংলাদেশের স্বার্থের বিরোধী। এদেশের মানুষ ন্যায্য হিৎসা চায়, সীমান্তে হত্যা বন্ধ চায়, সব সমস্যা সমাধান চায়। তা না করে এই সরকার সব কিছু বিলিয়ে দিয়েছে।'

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ, আজকে পুরো জাতি অসুস্থ হয়ে গেছে। চোর-ডাকাত-বাটপার-বদমাইস সবাই মুক্তি পেয়ে যায়, আর দেশনেত্রী পায় না। দেশনেত্রীকে যেকোনো মূল্যে মুক্তি দিতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, 'দেশনেত্রী মুক্ত নন, কারাগারে। চিকিৎসা পান না যেটা মানুষের মৌলিক অধিকার। জামিন পান না। অথচ খুনের আসামি জামিন পায়, মৃতু্যদন্ডের আসামি জামিন পায়।'

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'বাংলাদেশে আজকে আইনের শাসন বলে কিছু নাই।'

প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পরিচালনায় সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উলস্নাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, আসাদুজ্জামান রিপন, কেন্দ্রীয় নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক, ফরহাদ হালিম ডোনার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ্‌ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাইয়েদুল আলম বাবলু, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শিরিন সুলতানা, সালাউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আমিনুল হক, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্র দলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। ঢাকা জেলার খন্দকার আবু আশফাক, নারায়ণগঞ্জ জেলার গিয়াস উদ্দিন, মহানগর সাখাওয়াত হোসেন খান, টাঙ্গাইলের ফরহাদ ইকবাল, গাজীপুর মহানগরের শওকত হোসেন সরকারও বক্তব্য রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে