খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির সমাবেশ আজ

প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির দুটি কমিটিই বিলুপ্ত। যে কোনো সময়ে নতুন কমিটির ঘোষণা আসতে পারে বলে আলোচনা সর্বত্র। এরই মধ্যে আজ শনিবার দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বড় সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। সঙ্গত কারণে পদপ্রত্যাশীরা সমাবেশ ঘিরে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ বেলা ২টা থেকে সমাবেশ শুরু হবে। সমাবেশে বড় শোডাউন করে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টি জানান দিতে দলটি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতোমধ্যে ডিএমপি কমিশনারের দপ্তর থেকে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে। বিএনপি মহাসচিব \হমির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশ থেকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাবেন। এদিকে, শুক্রবার সমাবেশের প্রস্তুতির বিষয়ে নয়পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ঢাকায় বড় ধরনের জমায়েতের প্রস্তুতি রয়েছে বিএনপির। সমাবেশ সফল করার জন্য নানা প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এটি ঐতিহাসিক সমাবেশ হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে ঢাকাবাসীসহ দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে যথাসময়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানান রুহুল কবির রিজভী। জানা গেছে, সমাবেশ সফলে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে প্রধান সমন্বয়ক করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সহায়তা করার জন্য দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আব্দুস সালাম আজাদ ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ জ্যেষ্ঠ নেতারাও সমাবেশ সফলে কাজ করছেন। সমাবেশে বড় ধরনের শোডাউন ঘটাতে ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নেতারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির সমাবেশের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সদ্যবিলুপ্ত দলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, নতুন কমিটি সামনে রেখে এই সমাবেশ দিয়ে দলে পদপ্রত্যাশী নেতাদের পারফরম্যান্স যাচাই করা হবে। জানা যায়, গত ১৩ জুন কমিটি বিলুপ্ত করার পরপরই ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও যুবদলের নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন সেই আলোচনা সর্বস্তরে নেতাকর্মীর মুখে মুখে ছিল। আলোচনায় থাকা নেতাদের মধ্যে ছিলেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হিসেবে বিদায়ী কমিটির সদস্য সচিব সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য যুবদলের সাবেক সহসভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, দক্ষিণে বিদায়ী কমিটির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু আর সাধারণ সম্পাদক পদে যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহমেদ রবিন এবং যুবদলের সভাপতি পদের জন্য বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নাম ও পদে আরও কয়েকজন যুক্ত হয়েছেন। স্থায়ী কমিটিসহ উচ্চ পর্যায়ের নেতারা আলোচনায় থাকা নেতাদের মধ্যে কাকে নেওয়া উচিত এবং কাকে বাদ দেওয়া উচিত এ নিয়ে দলের বিভিন্ন ফোরামে কথা বলেছেন। অনেকে বলেছেন, বাইরে কাউকে আর মহানগর রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না করতে। শুধু তারুণ্যনির্ভর নয় অভিভাবক হিসেবে একজন সিনিয়র রেখে অপেক্ষাকৃত তরুণদের দিয়ে কমিটি করা উচিত বলেও কেউ কেউ মত দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ পাওয়ার আলোচনায় থাকা সব নেতাই আজকের সমাবেশে সমাগম বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছেন। বড় মিছিল নিয়ে এসে তার চিত্র হাইকমান্ডের কাছে পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন অনেকে। বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকারের ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে চায় তারা। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও কেন্দ্রীয় যুবদলের নতুন কমিটি গঠনকে সামনে রেখে সমাবেশকে নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্র হিসেবেও বিবেচনা করছে দলটির হাইকমান্ড। এর মধ্য দিয়ে পদপ্রত্যাশী নেতাদের পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন করা হবে। সব মিলিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হওয়ার প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। প্রস্তুতির বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আযাদ বলেন, সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মানুষ এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে চায় বলে বিএনপির কর্মসূচির অপেক্ষায় থাকে। জনগণ সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন।