এমপি আনার হত্যা
খাগড়াছড়ির পাহাড় থেকে দুই আসামিকে ধরল ডিবি
মোবাইল ফোন উদ্ধারে ঝিনাইদহে অভিযান
প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
চাঞ্চল্যকর আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলার অন্যতম দুই আসামি ফয়সাল ও মোস্তাফিজকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ির পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে, আনার হত্যাকান্ডের আলামত উদ্ধারে ঝিনাইদহে অভিযান চালিয়েছে ডিবি। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে নিয়ে বুধবার সকালে এই অভিযান চালানো হয়।
মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, পলাতক দুই আসামি ধরতে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়। অভিযানে
খাগড়াছড়ির পাহাড় থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে ঢাকায় আনা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ফয়সাল ও মোস্তাফিজের কাছে এমপি আনার হত্যাকান্ডের অনেক তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। তাদের থেকে অনেক কিছু জানা যাবে বলে জানিয়েছেন ডিবির তদন্ত কর্মকর্তারা।
গত ১৩ মে কলকাতার সঞ্জিভা গার্ডেন্সের ফ্ল্যাটে খুন হন আনোয়ারুল আজিম। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট পুলিশের ভাষ্য মতে, এই হত্যাকান্ডে সরাসরি যুক্ত ছিলেন- মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী। তারা খুনের আগে গত ২ মে কলকাতায় গিয়েছিলেন। এরপর ২১ মে সংসদ সদস্য খুনের ঘটনায় দেশে শিমুল ভূঁইয়া, তার ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান গ্রেপ্তার হলে মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল আত্মগোপনে চলে যান।
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, আনোয়ারুল আজিম খুনের খবর প্রকাশের পর থেকেই ক্রমাগত অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল। তাদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়িতে এই দুইজনের অবস্থানের কথা জানা যায়। পরে ডিবির একাধিক দল হেলিকপ্টার নিয়ে অভিযানে যুক্ত হয়। ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদও হেলিকপ্টারযোগে খাগড়াছড়িতে যান।
তারেক মাহমুদ, ঝিনাইদহ থেকে জানান, এমপি আনার হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে নিয়ে হত্যার আলামত ও মোবাইল উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারুক আযমের উপস্থিতিতে বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে জেলেদের পুকুরে নামিয়ে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়।
এর আগে, ঝিনাইদহ জেলা কারাগার থেকে গ্যাস বাবুকে কঠোর নিরাপত্তায় ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বর সংলগ্ন গাঙ্গগুলি হোটেলের পেছনে একটি পুকুরের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন পুলিশের কর্মকর্তারা। পরে জেলেদের পুকুরে নামানো হয়। এ সময় হাজার হাজার উৎসুক জনতার ভিড় করে।
অভিযান শুরু হলে ডিবিপ্রধান হারুন একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে ঝিনাইদহ নেমে অভিযানস্থলে আসেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করে পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, 'মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান। পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছে, বাকি দুইজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ঝিনাইদহে গ্যাস বাবুকে নিয়ে উদ্ধার অভিযান চলছে। যে মোবাইলে তিনি শিমুল ভুইয়াকে ছবি বিনিময় ও কথোপকথন করেছিলেন, সেটি উদ্ধারের জন্য অভিযান চলছে। মোবাইল পাওয়া গেলে অনেক তথ্যই বেরিয়ে আসবে।'
পরে ঝিনাইদহ স্টেডিয়ামের পাশের অন্য একটি পুকুরে মোবাইল উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। তবে সেখানে কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানান জেলেরা।
ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান জানান, ডিবিপ্রধানের উপস্থিতিতে অভিযান চালানো হয়েছে। পরে উদ্ধার অভিযান চালাবে কিনা, তা বলতে পারব না। এমপি আনার হত্যা, তদন্ত ও উদ্ধার অভিযান সম্পূর্ণ ডিবি পুলিশের অধিনে হচ্ছে। কখন কি হবে, সেটা তাদের ব্যাপার বলে যোগ করেন পুলিশ সুপার।
\হ