সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা
যারা দেশ বিক্রির কথা বলে তারা পাকিস্তানের দালাল
তিস্তা প্রকল্প ভারত করলে সব সমস্যার সমাধান হবে মমতার মন্তব্য ও চিঠি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় ড. ইউনূসকে উন্মুক্ত বিতর্কের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর কিছু মানুষ এত টাকা বানায় যে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়
প্রকাশ | ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
ভারতের কাছে বাংলাদেশ 'বিক্রির' অপপ্রচার ও গুজব যারা ছড়াচ্ছে, তাদের পাকিস্তানের 'দালাল' বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না। এই দেশ আমরা স্বাধীন করেছি, এটা মনে রাখা উচিত।' ভারত সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত ভাষণ পড়ে শোনান তিনি। পরে শুরু হয় সাংবাদিকদের প্রশ্নত্তোরপর্ব।
সেখানে একজন সাংবাদিক জানতে চান, ভারতের কাছে 'দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্র চলছে' বলে সোশাল মিডিয়ায় যে সমালোচনা হচ্ছে, তা প্রধানমন্ত্রী কীভাবে দেখছেন।
জবাবে শেখ হসিনা বলেন, 'বিক্রিটা হয় কীভাবে? বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ, মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।' তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা এই দেশকে বিক্রি করে না, কারণ আমরা এই দেশ স্বাধীন করেছি, এটা ভুলে গেলে চলবে? আর যে কষ্টটা আমরা ভোগ করি সেটা আমরা জানি। যারা বিক্রির কথা বলে তারা একাত্তর সালে পাকিস্তানের দালালি করেছে।'
বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, 'তাদের জানা উচিত, সারা পৃথিবীতে একটি মাত্র মিত্র শক্তি, যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজেদের রক্ত ঢেলে দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করে দিয়েছে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে ট্রেনিং পেয়েছেন। পৃথিবীর যে কোনো দেশে, যেখানেই কোনো মিত্র শক্তি সহযোগিতা করেছে, তারা কিন্তু সেই দেশ ছেড়ে কোনো দিন ফেরত যায়নি।' দেশ স্বাধীন
হওয়ার পর মিত্র বাহিনীকে ভারতে ফেরত পাঠানোর ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'এখনো জাপানে আমেরিকান সৈন্যসহ এ রকম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ দেখলে সেই দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে। সেখানে ভারত কিন্তু ব্যতিক্রম। তারা মিত্র শক্তি হিসেবে আমাদের পাশে থেকে যুদ্ধ করেছে। কিন্তু যখনই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়েছেন তারা দেশে ফিরে যাক, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধি রাজি হয়েছেন এবং তাদের ফেরত নিয়ে গেছেন।
'তারা যুদ্ধের সরঞ্জামাদি সবকিছু নিয়েই কিন্তু এসেছিল, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সারেন্ডার করেছিল, তাদের কাছে। আমরা কিন্তু স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। কারণ ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর পরে যারা বলে ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে যাবে তারা সব পাকিস্তানের দালাল।
ভারত নিয়ে জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার 'মনোভাব' নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, 'আমরা তো দেখেছি... ওপর দিয়ে ভারতবিরোধী কথা বলেছে আর ভারতে যেয়ে পা ধরে বসে থেকেছে, এগুলো আমার নিজের দেখা, জানা। এই ধরনের কথা বলার কোনো অর্থ হয় না।'
ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী?
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, যত ছোট হোক আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আর সেই সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং স্বকীয়তা বজায় রেখেই আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই আমরা কাজ করছি। আজকে আমরা সব যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দিলাম। এতে সব থেকে বেশি লাভবান হবে তো আমাদের দেশের মানুষ। তাদের যোগাযোগ করতে হয়, যেতে হয়। চিকিৎসার জন্য যায়, পড়াশোনার জন্য যায়, অন্যান্য কাজে যায়, হাট-বাজার করতে যায়, আজমির শরিফে যায়, বিভিন্ন জায়গায় যায়, ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রটাও তো আরও উন্মুক্ত হবে।
একটা দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী- সেই প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, 'রেল যতগুলো বন্ধ ছিল আমরা আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। ফলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ হচ্ছে। আমাদের ওই অঞ্চলের লোকজন উপকৃত হচ্ছে। তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ হচ্ছে। আর যেসব জিনিস আমাদের দেশে আনার সুযোগ হচ্ছে, অর্থনীতিতে এটা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কি চারদিকে দরজা বন্ধ করে বসে থাকবে এটা হয় না। কোনো দেশ পৃথিবীতে এমন করে না।'
ট্রানজিট প্রসঙ্গে ইউরোপের উদাহরণ টানেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, 'ইউরোপের দিকে তাকান, সেখানে কোনো বর্ডারই নেই। তাহলে কি একটা দেশ আরেকটা দেশের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। একসময় নো মেনস ল্যান্ড ছিল, আমরা যখন ইউরোপে গেছি, একটা গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে কাস্টমস চেক করে আবার গাড়িতে উঠতে হয়েছে। প্রত্যেকটা দেশ স্বাধীন দেশ। কই কেউ কাউকে তো বিক্রি করেনি। তাহলে সাউথ এশিয়াতে কেন বাধা দিয়ে রাখব? আমাদের দেশের মানুষগুলোর কথা চিন্তা করতে হবে। আমাদের দেশের মানুষগুলোর ভাগ্য পরিবর্তন করাটাই আমাদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন।'
তিস্তা প্রকল্প ভারত করলে সব সমস্যারই সমাধান হয়
তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে যাদের প্রস্তাব বেশি লাভজনক হবে, সেটাই বাংলাদেশ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে তিনি এও বলেছেন, 'ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রজেক্টটা করে দেয়, তাহলে আমাদের সব সমস্যারই তো সমাধান হয়ে যায়।
এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমাদেরকে চীন প্রস্তাব দিয়েছে, ভারতও প্রস্তাব দিয়েছে। অবশ্যই আমি এটা বিবেচনা করব, কোন প্রস্তাবটা করলে পরে আমার দেশের মানুষের, আমার দেশের কল্যাণে আসবে, আমি সেটাই করব।'
তিনি বলেন, 'লোন কতটুকু নিলাম, কতটুকু আমাকে শোধ দিতে হবে, কতটুকু পাব, এই সবগুলো বিবেচনা করেই তো আমাদের করতে হবে। সেক্ষেত্রে ভারত যখন বলেছে যে, তারা করতে চায় এবং তারা টেকনিক্যাল গ্রম্নপ পাঠাবে, অবশ্যই তারা আসবে। আমরা যৌথভাবে সেটা দেখব।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'চীনও একটা ফিজিবিলিটি স্টাডি করেছে, ভারতও একটা করবে। আমাদের কাছে যেটা সব থেকে বেশি গ্রহণযোগ্য, লাভজনক, আমরা সেটাই করব।
তবে তিস্তা নিয়ে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের টানাপড়েনের প্রসঙ্গ ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'ভারত যখন এগিয়ে আসছে, আমরা যদি এটা করি, তাহলে পানি নিয়ে আর প্রতিদিন প্যাঁ প্যাঁ করতে হবে না। আমরা সেই সুবিধাটা পাব। কাজেই আমি তো এখানে কোনো সমস্যা দেখি না।'
মমতার মন্তব্য তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়
তিস্তা চুক্তি ও গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে যে চিঠি দিয়েছেন, তা 'ভারতের অভ্যন্তরীণ' ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি যদি নবায়ন না-ও হয়, তবু এ চুক্তি অব্যাহত থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, 'তিস্তা নিয়ে আমরা প্রকল্প নিয়েছি। তিস্তা নদীটাকে ড্রেজিং করা, পানি সংরক্ষণ এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি যদি নবায়ন না-ও হয়, তবু এ চুক্তি অব্যাহত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন এবং আমরাও সম্মত হয়েছি যে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একটা টেকনিক্যাল গ্রম্নপ করা হবে।'
গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি হয় ১৯৯৬ সালে। এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালে।
শেখ হাসিনা বলেন, 'মমতা ব্যানার্জি যে চিঠি লিখেছেন তার দেশের প্রধানমন্ত্রীকে, এটা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমার সঙ্গে ভারতের সব দলের সম্পর্ক ভালো। মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো আবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্পর্কও ভালো। ভারতের দলমত-নির্বিশেষে আমার সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে।'
ড. ইউনূসকে উন্মুক্ত বিতর্কের আহ্বান
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উন্মুক্ত বিতর্কে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, 'ওনাকে জেলাস (ঈর্ষা) করার কী আছে? সে আসুক না, মাঠে আসুক। চলুক আমার সঙ্গে। আমেরিকায় ডিবেট হয় না, আসুক, কথা বলব।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'শেখ হাসিনা কারও সঙ্গে জেলাসি করে না। শেখ হাসিনা জাতির পিতার মেয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে। অন্তত এই জায়গাটায় কেউ আসতে পারবে না। আর সেটাই আমার গর্ব। প্রধানমন্ত্রী তো একটা সাময়িক ব্যাপার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি দেশও বেচি না, দেশের স্বার্থও বেচি না। আমি সব সময় দেশের স্বার্থ রক্ষা করে চলি। তার জন্য আমি একবার ক্ষমতায় আসতে পারিনি, তাতে আমার কিচ্ছু আসে যায় না।'
তিনি বলেন, 'আমার দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, আমার দেশের মানুষের মাথা যেন উঁচু থাকে, সব সময় সেটাই কাজ। আমি এর-ওর কাছে ধরনা দিয়ে বেড়াই না।'
নোবেল পুরস্কারের জন্য কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'আবার অনেকে লিখেছে নোবেল প্রাইজের জন্য নাকি তার সঙ্গে আমার... আমার সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব নেই। ওই নোবেল প্রাইজের জন্য আমার কোনো আকাঙ্ক্ষাও নেই। আর আমার লবিস্ট রাখার মতো টাকাও নেই, পয়সাও নেই। আর আমি কখনো এটা চাইনি।'
তিনি বলেন, 'হ্যাঁ, পার্বত্য শান্তি চুক্তির জন্য শুধু দেশে-বিদেশে অনেকে লিখেছেন, অনেক নোবেল লরিয়েটও আমার জন্য লিখেছেন। কই আমি তো কখনো তদবির করতে যাইনি, কারও কাছে বলতেও যাইনি। কী পেলাম, না পেলাম ওগুলো আমার মাথার মধ্যেও নেই। আর যিনি অর্থনীতি নিয়ে কাজ করলেন, ব্যাংকের একজন এমডি, তিনি যখন একটা নোবেল প্রাইজ পান, তার সঙ্গে কনটেস্ট করতে যাব কেন?'
শেখ হাসিনা বলেন, 'পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি আমি করেছি। পৃথিবীতে যত শান্তি চুক্তি হয়েছে খুঁজে বের করেন, শান্তি চুক্তি হয়েছে কিন্তু কয়টা অস্ত্রধারী আত্মসমর্পণ করেছে। আমি পার্বত্য চট্টগ্রামে শুধু শান্তি চুক্তি করিনি, ১ হাজার ৮০০ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার, তারা আমার কাছে অস্ত্র সারেন্ডার করেছে। আমি তাদের সবাইকে সামাজিকভাবে, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করেছি। ২৪ হাজার শরণার্থী শিবির ছিল ভারতে, তাদের সবাইকে ফিরিয়ে এনেছি।'
ড. ইউনূসকে সুবিধা দেওয়ার কথা উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছেন আমার হাত থেকে। ওয়াশিংটনে তার মাইক্রো ক্রেডিটে কেউ আসতে চায় না, আমি গিয়েছি হিলারি ক্লিনটন এসেছেন, কুইন সোফি এসেছেন। আমরা তাকে খুবই প্রমোট করেছি।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'উপকারীরে বাঘে খাক, যাতে উপকারটা স্বীকার করতে না হয়। এটাই তো বাস্তবতা। ওনার পয়সা আছে, উনি লেখাচ্ছেন। কত নোবেল লরিয়েটসহ তাদের যে বিবৃতিটা, এই বিবৃতিটা কী বিবৃতি। এটাতো বিজ্ঞাপন। তিনি যদি এতই পপুলার হন, তার বিজ্ঞাপন দিয়ে এতজনের নাম দিতে হবে কেন? তার জন্য সারা পৃথিবী ঝাঁপিয়ে পড়বে।'
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মামলা করছে তার শ্রমিকরা। যখন দাবি পেশ করেছে, প্রমোশন চেয়েছে তাদের চাকরিচু্যত করেছেন। তারা সবাই মামলা করে দিয়েছেন। লেবার কোর্টের মামলায় শাস্তি পেয়েছেন, লেবারদের কি কোনো অধিকার নেই!'
শেখ হাসিনা বলেন, 'যারা এত লেবার নিয়ে কথা বলেন, মানবাধিকারের কথা বলেন, তারা কোথায় এখন, তারা চুপ কেন? তারা কি এই লেবারদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, দাঁড়াননি। লেবারদের ন্যায্য পাওনা একজনে মেরে খাচ্ছেন, চুরি করে খাচ্ছেন, সেটা বলেছেন কখনো? বলেননি।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আর আমেরিকা থেকে শুরু করে ইউরোপ, ইংল্যান্ড, কেউ যদি ট্যাক্স ফাঁকি দেয় সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করবে, তার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বিক্রি করে দেবে। এটাই তাদের নিয়ম। সেটা দেখে না কেন? তিনি (ড. ইউনূস) সমানে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবার মামলা করে তার ওপর আদায় করা হচ্ছে। যারা লিখেছেন তারা এই অনুসন্ধানটা একটু করুন।'
তিনি আরও বলেন, 'এই যে বিদেশে এত বিনিয়োগ করে বেড়িয়েছেন, টাকাটা কোথা থেকে এসেছে? কার টাকা, কীভাবে কামাই করেছেন এই টাকা? বিনিয়োগ কীভাবে হলো?'
এই টাকা বানিয়ে কী লাভ?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কিছু মানুষের টাকা-পয়সা এত বেড়ে যায় যে তারা দেশে টাকা রাখতে পারে না। টাকা বিদেশে রাখতে গিয়ে দেশ ছাড়তে হয়। এটা নেশার মতো হয়ে যায়।
দেশের ব্যাংক খাত নিয়ে কমিশন গঠন সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'কিছু মানুষ লোভী হয়ে যায়। টাকা-পয়সা এত বেড়ে যায় যে দেশ বাদে বিদেশে রাখতে গিয়ে তারপর দেশ ছেড়েই ভাগতে হয়। সেই অর্থ বানিয়ে লাভটা কী হলো? এতই অর্থ বানিয়ে ফেলল যে দেশেই থাকা যায় না। তাহলে লাভ হলো কী! এটা তো মানুষ চিন্তা করে না। নেশার মতো হয়ে যায়।'
ব্যাংক খাত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ ব্যাংক ভালো চালাতে পারছে, কেউ পারছে না। যদি কোনো ব্যাংক দুর্বল হয়, তাকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। যারা আমানত রাখে, তাদের আমানত সংরক্ষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সেটাই পালন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে যেটুকু সমস্যা হচ্ছে, তা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।