রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

হজের প্রথম ফিরতি ফ্লাইটে ফিরলেন ৪১৭ জন

যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ জুন ২০২৪, ০০:০০
হজের প্রথম ফিরতি ফ্লাইটে ফিরলেন ৪১৭ জন

বাংলাদেশ থেকে এবার ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ সৌদি আরবে হজ পালনে গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃতু্যর খবর এসেছে। হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রথম ফিরতি ফ্লাইটে ৪১৭ জন হাজি দেশে ফিরেছেন।

শুক্রবার ভোর ৬টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের প্রথম ফ্লাইট (বিজি ৩৩২) অবতরণ করে। এই ফ্লাইটটি সৌদির কিং আবদুল আজিজ বিমানবন্দর থেকে ছেড়েছিল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায়।

ঢাকার বিমানবন্দরে নামার পর ধর্ম মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়

এবং সিভিল এভিয়েশন ও বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাজিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

\হদেশে নামার পর প্রত্যেক হাজির হাতে জমজমের পানির বোতলও তুলে দেওয়া হয় বলে বিমানের জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম জানান।

এ সময় বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. জাহিদুল ইসলাম ভূঞা, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, বিমানের পরিচালক (গ্রাহক সেবা) হায়াত-উদ-দৌলা খান, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রম্নপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

ফিরতি হজ ফ্লাইটের অর্ধেক যাত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবং বাকি অর্ধেক সৌদি এয়ারলাইনস এবং ফ্লাইনাস পরিবহণ করবে।

চলতি বছর সৌদিতে হজ হয়েছে গত ১৫ জুন। আর গত ৯ মে হজের প্রথম ফ্লাইট শুরু হয়ে ১২ জুন পর্যন্ত চলে। মোট ২১৮টি ফ্লাইটে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পৌঁছে দেওয়া হয়।

এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালিত হজ ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল ১০৬টি। এছাড়া সৌদি এয়ারলাইনস ৭৫টি এবং ফ্লাইনাস ৩৭টি ফ্লাইট চালিয়েছে।

আর প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন শুরু হয়েছে। আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত ফিরতি ফ্লাইটে হাজিরা দেশে ফিরবেন।

হজ শেষে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস মোট ১২৫টি 'ডেডিকেটেড' হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এর মধ্যে জেদ্দা থেকে ঢাকায় ৭৩টি, জেদ্দা থেকে চট্টগ্রামে ১৫টি, জেদ্দা থেকে সিলেটে ২টি। এছাড়া মদিনা থেকে ঢাকা ২২টি, মদিনা থেকে চট্টগ্রামে ৯টি এবং মদিনা থেকে সিলেটে ৪টি ফ্লাইট আসবে।

বিমানের পাশাপাশি সৌদি আরবের বিমান পরিবহণ সংস্থা ফ্লাইনাস ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস বাংলদেশ থেকে হজযাত্রীদের পরিবহণ করবে।

হজ করতে গিয়ে ৩১ বাংলাদেশি হাজির মৃতু্য

এদিকে চলতি বছর হজ করতে গিয়ে সৌদি আরবে মৃতু্য এক হাজার ছাড়িয়েছে। তীব্র দাবদাহের কারণে ওই হজযাত্রীরা মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। মারা যাওয়া হাজিদের মধ্যে ৩১ জন বাংলাদেশি রয়েছেন।

শুক্রবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ সম্পর্কিত নিয়মিত বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা ও সৌদি আরব সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্প ডেস্ক।

বুলেটিনে জানানো হয়, মারা যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী। মক্কায় ২৪ জন, মদিনায় ৪ ও মিনায় দুজন এবং জেদ্দায় একজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৩০ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। একজনের পরিচয় এখনো প্রকাশ করতে পারেনি হেল্প ডেস্ক।

হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর যারা মারা গেছেন তারা হলেন, ঢাকার মোহাম্মদপুরের জহিরুল ইসলাম (৭৩), মাদারীপুর শিবচরে ইদ্রিস খান (৫৬), ঢাকার বাড্ডার উম্মে কুলসুম (৪৭), ঢাকার বংশালের মনির হোসেন (৫৯), কিশোরগঞ্জের ফাতেমা ইয়াসমিন (৫৩), পিরোজপুরের নার্গিস (৬০), ঢাকা নিউ মার্কেটের আমিনুল ইসলাম (৬৫), নোয়াখালীর মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৮), রংপুরের সিদ্দিকুর রহমান (৪৮), ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মানিক তোফাজ্জল হক (৭০), ঢাকা মোহাম্মদপুরের রওশন আরা বেগম (৭২), বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রেজাউল করিম মন্ডল (৬১) ও টাঙ্গাইল সদরের আলমগীর হোসেন খান (৭৩)।

এছাড়া হজের আনুষ্ঠানিকাতা শুরুর আগে গত ১২ জুন সৌদিতে দুজন মারা যান। তারা হলেন- মো. শাহ আলম (৭৭) ও সুফিয়া খাতুন (৬২)। তাদের বাড়ি কুমিলস্না ও কিশোরগঞ্জ। চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গত ১৫ মে মো. আসাদুজ্জামান নামে এক হজযাত্রী মারা যান।

মারা যাওয়া অন্য হজযাত্রীরা হলেন- নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মো. আসাদুজ্জামান (৫৭), ভোলা জেলার মো. মোস্তফা (৯০), কুড়িগ্রাম জেলার লুৎফর রহমান (৬৫), ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের মুরতাজুর রহমান (৬৩), চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার মোহাম্মদ ইদ্রিস (৬৪), ঢাকা জেলার মোহাম্মদ শাহজাহান (৪৮), কুমিলস্না জেলার আলী ইমাম ভুঁইয়া (৬৫), কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মো. জামাল উদ্দিন (৬৯), কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার মোহাম্মদ নুরুল আলম (৬১), কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার মাকসুদ আহমদ (৬১), ফরিদপুর জেলার মমতাজ বেগম (৬৩), ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম (৫৭), গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দপুর উপজেলার মো. সোলাইমান (৭৩), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শাহজাদ আলী (৫৫) এবং রংপুরের তারাগঞ্জের গোলাম কুদ্দুস (৫৪)।

সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে যদি মারা যান, তাহলে তার মরদেহ সৌদি আরবে দাফন করা হয়। নিজ দেশে আনতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না। মক্কায় হজযাত্রী মারা গেলে মাসজিদুল হারামে জানাজা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে