ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনায় মামলার তদন্তকাজ স্বাধীনভাবে এগিয়ে নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেছেন, 'এমপি আনার হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত সঠিকভাবে এগিয়ে চলছে। তদন্তে কারও হস্তক্ষেপ বা কোনো চাপ নেই। স্বাধীনভাবে আমরা তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।'
ঈদুল আজহা উপলক্ষে শনিবার ডিএমপি সদও দপ্তরে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ, কাঁচা চামড়া বহনকারী যানবাহনের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় সভা
শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো চাপ বা এ বিষয়ে কোনো তদবির আসছে কি না? জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তদন্ত সঠিকভাবে এগিয়ে চলেছে। এমপি আনার হত্যা মামলার তদন্ত যেন সুষ্ঠুভাবে হয় সেজন্য আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ নেই। স্বাধীনভাবে তদন্ত করার জন্য আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস্) বিপস্নব কুমার সরকারের সঞ্চালনায় সমন্বয় সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি এবং সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, চামড়া ব্যবসায়ীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এমপি আনারের নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু বর্তমানে আটদিনের রিমান্ডে আছেন। এ হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত কয়েকজনের সঙ্গে মিন্টুর যোগাযোগ, কিলার আমানুলস্নাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে তার নাম আসা, তার আগে থেকে আনারের সঙ্গে মিন্টুর দ্বন্দ্ব, এসব বিষয় সামনে এনে ঘটনার সঙ্গে যোগসূত্র খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ঢাকা মহনগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার রয়েছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে প্রথমে গ্রেপ্তার হন আমানুলস্নাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, সিলিস্তি রহমান ও তানভীর ভূঁইয়া। এরপর আনার হত্যাকান্ডে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বিষয়টি সামনে চলে আসে। এ কারণে গ্রেপ্তার হন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মন্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এর পর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।
গত ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামের একটি আবাসিক ভবনে এমপি আনার খুন হয়েছেন।