দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে কর্মস্থল ছাড়ছেন লাখ লাখ মানুষ। বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস থেকেই সড়কে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। সময় বাড়ার সঙ্গে বাস কাউন্টারে ভিড় বেড়েছে কয়েকগুণ। সেই সঙ্গে যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে বেড়েছে গণপরিবহণের সংখ্যা। এতেই সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে কমেছে গাড়ির গতি। শুক্রবারও এই চাপ অব্যাহত থাকতে দেখা গেছে। এদিন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত গাড়ির কারণে পদ্মা সেতুর মাওয়া টোলপস্নাজায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সাতটি বুথে টোল পরিশোধের পরও যানজট ছড়িয়ে পড়ে কয়েক কিলোমিটার। যদিও সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'সড়কে চাপ আছে, যানজট নেই। স্মরণকালের সেরা সড়ক শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই হয়েছে।'
এদিকে শুক্রবার ভোর থেকেই সাভার, গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের ধীরগতির কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় ঘরমুখো যাত্রীদের। ভোরে টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলায় পুংলী এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে মহাসড়কের ১৫ কিলোমিটার অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিকালে পোশাক কারখানা ছুটি হলে যানজট আরও তীব্র হওয়ার খবর পাওয়া যায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিলস্নার চান্দিনা এলাকায় পোশাক শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করলে প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশে যানবাহনে ধীরগতি সৃষ্টি হয়। তবে আগের মতো ভিড় ছিল না সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। যাত্রীরা ভোগান্তিহীনভাবেই ঈদযাত্রায় শামিল হয়েছে।
অন্যদিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস কাউন্টারে ছিল যাত্রীদের ভিড়। মহাখালীতে বাসের টিকিট সংকটে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। গাবতলী কাউন্টারে আগের চিরচেনা সেই রূপ না থাকলেও বাড়তি দামে টিকিট বিক্রির অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। এছাড়া ঈদযাত্রার প্রথম দুইদিন ১ থেকে দুই ঘণ্টা বিলম্বসূচিতে ট্রেন ছাড়লেও শুক্রবার তা ৫-১০ মিনিটে নেমে এসেছে। এতে যাত্রীরা স্বস্তি নিয়েই যে যার যার গন্তব্যমুখী ট্রেনযাত্রা করতে পেরেছেন।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
১৫ কিলোমিটার ধীরগতি
স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল থেকে জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে অতিরিক্ত গাড়ির চাপ ও একাধিক দুর্ঘটনার কারণে থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। একাধিক স্থানে দুর্ঘটনার কারণে এবং শুক্রবার ভোরে কালিহাতি উপজেলায় পুংলী এলাকায় একটি পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে এলেঙ্গা থেকে সদর উপজেলার আশেকপুর বাইপাস এলাকা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রথমে যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো সরিয়ে নিলে মহাসড়কে ধীরগতিতে যানবাহন চলতে থাকে। বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত ধীরে ধীরে উত্তরবঙ্গগামী লেনে গাড়ি চলতে দেখা গেছে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাজেদুর রহমান জানান, ঈদুল আজহার ছুটি পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে কেউ মারা যায়নি। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সরিয়ে নিতে কিছুটা সময় লেগে যাওয়ায় ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে। মহাসড়কে পর্যাপ্ত পুলিশ কাজ করছে।
মাওয়া টোলপস্নাজায় তীব্র যানজট
শুক্রবার ভোররাত থেকে এ পদ্মা সেতুর মাওয়া টোলপস্নাজায় তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে শ্রীনগর উপজেলা পর্যন্ত। এতে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা টোল দেওয়ার অপেক্ষায় থেকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
শুক্রবার ভোর থেকেই পদ্মা সেতু এলাকায় অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি মোটর সাইকেলের ঢল নামে। পরে গাড়ির লাইন মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া টোলপস্নাজা থেকে শ্রীনগর উপজেলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটারে ছাড়িয়ে যায়। ভোরের দিকে বেশি চাপের কারণে মোটর সাইকেলের বুথ বাড়িয়ে দু'টি করা হয়েছিল। তবে অন্য যান সামাল দিতে বাইকের বুথ আবার একটিতে নামিয়ে আনা হয়।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ রজব আলী বলেন, 'বাইকের পাশাপাশি প্রাইভেট গাড়ি ও বাসের চাপ আছে। ঈদের সময় একটু চাপ বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।'
মাওয়া ট্রাফিক জোনের টিআই পরিদর্শক জিয়াউল হক জিয়া বলেন, 'বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সকাল থেকে দক্ষিণবঙ্গমুখী গাড়ির চাপ বেড়েছে। সেই সঙ্গে পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচলরত ট্রাকগুলোর ওজন মাপা স্কেলে সমস্যা দেখা দিলে ট্রাকের দীর্ঘ সারি পড়ে যায় মহাসড়কে। ফলে যানজট ছড়িয়ে পড়ে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত।'
জিয়াউল হক জিয়া জানান, ভোর থেকে এ যানজট শুরু হয়। যানজট অনেকটা কমে গেছে। টোলপস্নাজা থেকে এক কিলোমিটার দূরে দোগাছি পর্যন্ত এখন গাড়িগুলো টোল দেওয়ার অপেক্ষায় আছে। আশা করছি শিগগিরই এ যানজট নিরসন হবে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান বলেন, 'গাড়ির বাড়তি চাপে কিছু ঝামেলা থাকলেও মানুষ আরামে বাড়ি ফিরছে। সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।'
সাভারের সড়কে ধীরগতি
শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার থেকে বলিয়ারপুর ৫ কিলোমিটার, বিশমাইল থেকে নয়ারহাট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলস্নীবিদু্যৎ থেকে বাইপাইল ২ কিলোমিটার, শ্রীপুর থেকে ইপিজেড দেড় কিলোমিটার ও বাড়ইপাড়া থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটারসহ ১৭ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনের ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। এসব পয়েন্ট পাড়ি দিতে আধাঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগছে বলে দাবি করেছেন যাত্রীরা।
সাভার হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, 'সকাল থেকে মানুষের চাপ বেড়েছে। এছাড়া কিছু বাস সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠাচ্ছে। এতে করে পেছনের গাড়ির গতি কমে যায়। এজন্য তৈরি হচ্ছে ধীরগতি। তবে পুলিশ কাজ করছে। ভোগান্তি ছাড়াই যাতে যাত্রীরা নিরাপদে বাড়ি পৌঁছতে পারে সেজন্য কাজ করছে পুলিশ।'
গাজীপুরে থেমে থেমে হচ্ছে যানজট
গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার বিকালে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন ও ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস মোড়, চন্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় গাড়ির চাপ বেড়েছে এবং থেমে থেমে জট তৈরি হচ্ছে।
নাওজোড় হাইওয়ে থানার ওসি মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, 'মহাসড়কে যানজট নিরসনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। রেকার মজুত রাখা হয়েছে যাতে কোনো যানবাহন বিকল হলে দ্রম্নত সরিয়ে নেওয়া যায়। এ ছাড়া মোটর সাইকেলে পুলিশ সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।'
গাবতলীতে টিকিটের চড়া দাম
এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে ঘরমুখো মানুষের ঢলে লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে গাবতলী বাস টার্মিনাল। এখানকার কাউন্টারগুলোতে অধিকাংশ বাসের টিকিট আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। যেসব বাসের টিকিট মিলছে, সেগুলো বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাঁদরাত পর্যন্ত সব টিকিটের বুকিং শেষ। ফলে অনেক যাত্রী চাইলেও নির্ধারিত বা পছন্দের পরিবহণে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
কুষ্টিয়ার পাংশায় যাবেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ফিরোজ আহমেদ। রাবেয়া পরিবহণ থেকে দু'টি টিকিট কেটেছেন তিনি। অন্য সময়ে যে টিকিটের দাম রাখা হতো ৪০০ টাকা, তার কাছ থেকে তা রাখা হয়েছে ৬০০ টাকা।
এ বিষয়ে রাবেয়া পরিবহণের কাউন্টারে কথা বললে বিক্রয়কর্মী শহিদুল বলেন, 'ঈদের জন্য ভাড়া একটু বেশি রাখা হচ্ছে।'
কাউন্টারের লোকজন বলছেন, বাসের তুলনায় যাত্রীর চাহিদা বেশি, তাই টিকিটের দাম একটু বেশি রাখা হচ্ছে। ঈদের পর আবার আগের দামেই টিকিট বিক্রি হবে।
মহাখালীতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন
রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে যাত্রী থাকলেও অধিকাংশ বাসের কাউন্টারে নেই টিকিট। এ টার্মিনালে টাঙ্গাইলগামী নিরালা সুপার পরিবহণের টিকিটের জন্য যাত্রীরা ৩-৪ ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেও পর্যাপ্ত বাস না থাকায় কাউন্টার থেকে যাত্রীদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। যাত্রীদের অভিযোগ, বাস ঠিকই রয়েছে। কিন্তু ভাড়া বাড়ানোর জন্য কাউন্টার কর্তৃপক্ষ বাসের সংকটের অজুহাত দিচ্ছে।
টাঙ্গাইলগামী যাত্রী মোহাম্মদ আমির নিরালা বাসের টিকিটের জন্য তিন ঘণ্টা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, 'বাস আসছে না, কাউন্টার থেকে আমাদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। মহাখালী থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত ভাড়া ২৫০ টাকা। এখন এ ভাড়া বাড়ানোর জন্য বাস সংকটের অজুহাত দেখাচ্ছে নিরালা সুপার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।'
এ বিষয়ে নিরালা সুপার সার্ভিসের কাউন্টার ম্যানেজার সাজ্জাদ খান বলেন, 'আমাদের পর্যাপ্ত টিকিট রয়েছে ঠিকই। কিন্তু টাঙ্গাইলে যে কয়েকটি বাস গিয়েছে, সেগুলো এখনো ফিরে আসছে না। বাস ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা টিকিট দিতে পারছি না।'
নিরালা সুপারই নয়, এনা, শাহ ফতে আলী পরিবহণ, ন্যাশনাল ট্রাভেল, দেশ ট্রাভেল, একতা পরিবহণনহ বিভিন্ন পরিবহণের কাউন্টারে কোনো ধরনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন।
শ্রমিক বিক্ষোভে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ধীরগতি
বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে শুক্রবার কুমিলস্নার চান্দিনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধ করে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় মহাসড়কে আটকা পড়ে হাজার হাজার যানবাহন। ঈদযাত্রায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা।
শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চান্দিনার বেলাশহর এলাকায় 'ডেনিম প্রসেসিং পস্নান্ট' কারখানার শ্রমিকরা এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। কারখানাটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত। শ্রমিকদের অবরোধের কারণে মহাসড়কের অন্তত ২০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র গাড়ির জট তৈরি হয়।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, 'শ্রমিকদের অবরোধের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয়মুখী লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে গাড়ি চলাচল শুরু করে। তবে দেড় ঘণ্টা গাড়ি আটকে থাকার কারণে এখন বেশ ধীরগতি রয়েছে।'
পাটুরিয়া ঘাটে ভিড় থাকলেও নেই ভোগান্তি
শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার ভোর থেকেই পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাটে ঘরমুখো যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঘাট হলেও পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এ ঘাটের গুরুত্ব অনেক কমে গেছে। এ নৌ-রুটের বেশির ভাগ যানবাহন এখন পদ্মা সেতু হয়ে যায়।
তবে ঘাট এলাকায় যানজট না হওয়ার জন্য প্রায় এক কিলোমিটার দূরে লঞ্চ টার্মিনালের যাত্রীদের বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে ঘরমুখো যাত্রীরা কোলের শিশুসন্তানসহ বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে লঞ্চ বা ফেরিতে উঠছেন। এ কারণে তাদের কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ট্রেনযাত্রায় স্বস্তিতে যাত্রীরা
ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন শুক্রবার নির্ধারিত সময়ের ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই রাজধানীর কমলাপুর ছেড়েছে যাচ্ছে ট্রেন। স্টেশন ও পস্ন্যাটফর্মে যাত্রীদের ভিড় তুলনামূলক কম। বেশির ভাগ ট্রেনের ভেতরে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় নেই। নেই গত কয়েকদিনের মতো ভ্যাপসা গরমের কষ্ট। সব মিলিয়ে স্বস্তিতে ঈদে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করছেন সাধারণ মানুষ। ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারোয়ার বলেন, 'সকাল থেকে যে ট্রেনগুলো ছেড়ে গেছে, সব কটিই যথাসময়ে গেছে। ফলে আজ যাত্রীরা স্বস্তি নিয়ে বাড়ি যেতে পারছেন। আমরা আশা করছি, আজকের বাকি ট্রেনগুলোও যথাসময়ে ছেড়ে যেতে পারবে।'
ভোগান্তিহীন লঞ্চযাত্রা
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। তবে লঞ্চ মালিকরা বলছেন, যাত্রী আগের মতো নেই। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির তথ্য অনুযায়ী ঢাকার ৯৫ শতাংশ নৌ-যাত্রী ঢাকা নদীবন্দর (সদরঘাট নদীবন্দর) ব্যবহার করবেন। ঈদ স্পেশাল সার্ভিসের আওতায় সদরঘাট টার্মিনাল থেকে মোট ১৮০টি লঞ্চ চলাচল করবে। এসব নৌপরিবহণের মধ্যে ঢাকা থেকে ছাড়বে ৯০টি, বিভিন্ন স্থান থেকে ৯০টি ঢাকায় আসবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডবিস্নউটিএ) ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. সলেমান জানান, ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভ্রমণকারীরা যাতে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন সেজন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।