সৌদি আরবে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ৭ জিলহজ রাত থেকেই মক্কা থেকে হজযাত্রীরা তাঁবুর শহর মিনার উদ্দেশে রওনা হন। এশার নামাজের পর মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরামের কাপড় পরে মিনার উদ্দেশে রওনা হন হাজিরা।
মিনায় হাজিরা ৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজরসহ মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন। ১৫ জুন ফজরের নামাজ আদায় করার পর রওনা দেবেন আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে। সেখানে দুপুরে হজের খুৎবা শুনবেন। এরপর এক আজানে হবে জোহর ও আসরের নামাজ। সূর্যাস্তের পর হজযাত্রীরা যাত্রা করবেন মুজদালিফার পথে। সেখানে তারা আবার এক আজানে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ। এ রাতে অবস্থান করবেন মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে।
১৬ জুন জামারায় প্রতীকী শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের জন্য মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করবেন হাজিরা। বড় জামারাতে পাথর নিক্ষেপ করে মিনায় কোরবানির পশু জবাই করবেন তারা।
কোরবানির পরপরই মাথা মুন্ডন করে হজের ইহরাম ত্যাগ করবেন হাজিরা। এবার বিশ্বের ১৮০টির বেশি দেশের প্রায় ২০ লাখ মুসলিস্ন হজ পালন করবেন।
এদিকে, মুয়ালেস্নমরা জানান, মিনায় থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে নিতে হবে। পুরুষ হাজিরা মক্কার বাসায় অজু-গোসল সেরে সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় পরে হজের নিয়ত করবেন। ইহরামের কাপড় (আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ কাপড় আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের ৩ গজ কাপড়) এক সেট পরে নিতে হবে, অতিরিক্ত আরেক সেট থাকবে ব্যাগে।
এ ছাড়া এক সেট সাধারণ পোশাক (শার্ট-প্যান্ট অথবা পাঞ্জাবি-পায়জামা), পেস্ট, ব্রাশ, সাবান, চার্জারসহ মুঠোফোন, কোরবানির কুপন (৭২০ রিয়ালে ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক থেকে কুপন কিনতে হয়), মুজদালিফায় রাতে ঘুমানোর জন্য হালকা বিছানাসহ প্রয়োজনীয় জিনিস ছোট ব্যাগে নিলে ভালো হয়। কারণ, নিজের ব্যাগ নিজেকে বহন করতে হবে। মুয়ালেস্নম শুধু খাবারের ব্যবস্থা করবেন।
মক্কার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, হজের সময় মক্কার তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকতে পারে। আর্দ্রতা থাকবে ৮৫ শতাংশ। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে।
এবার চলতি বছর নুসুক কার্ড ছাড়া কেউ হজ করতে পারছেন না। সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া হজযাত্রী প্রতিরোধ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মক্কায় প্রবেশের তাসরিহ বা নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল অর্থদন্ড এবং আবার অপরাধে দ্বিগুণ জরিমানা ও কারাদন্ডের বিধান করা হয়েছে। হজের অনুমতি নেই, এমন কোনো ব্যক্তিকে পরিবহণ করা হলে পরিবহণকারীকে ছয় মাসের কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। মিনা, আরাফায় হাজির তাঁবুতে নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে অর্থদন্ড আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকে। হজের জন্য মিনা, আরাফা, মুজদালিফা, মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে চাইলে এই কার্ড অবশ্যই দেখাতে হবে।