শিশু-নারীদের অবস্থা নিয়ে পারিবারিক জরিপ শুরু

প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরো (বিবিএস) ইউনিসেফের সহযোগিতায় দেশের শিশু ও নারীদের অবস্থার ওপর সবচেয়ে বড় পারিবারিক জরিপ শুরু করেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁও বিবিএস অডিটোরিয়াম 'মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে' (এমআইসিএস) ২০২৪-২৫ এর জরিপের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার। এ সময় তিনি বলেন, এটি এমন একটি বিষয় জাতিকে এগিয়ে নিতে পথ দেখাবে। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে সেই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার জন্য বাস্তবায়নের জন্য বিবিএস যে উদ্যোগ নিয়েছে, আমি বিএসএসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমরা একটা উন্নত জাতি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি। সেই জাতি রাষ্ট্রের এই স্বপ্ন দেখবার আমাদের সবচাইতে বড় বিষয়টি হচ্ছে পরিকল্পনা। পরিকল্পনা ব্যতিরেখে শুধু আমাদের পক্ষে না, পৃথিবীর কোনো মানুষের পক্ষে কোনো সমাজের পক্ষে, কোনো রাষ্ট্রের পক্ষে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আর এই পরিকল্পনার পেছনে সবচেয়ে বড় উপাদানটি বা সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে পরিসংখ্যান। তথ্য সবচেয়ে বেশি পরিসংখ্যানকে সহায়তা করে। আমাদের স্বপ্ন এগিয়ে নেওয়ার জন্য আপনাদের যে নিরলস প্রচেষ্টা, এটা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি।' তিনি আরও বলেন, এটা একটি বড় কর্মযজ্ঞ। আশা করি আপনারা সফল হবেন। আর এই কর্মযজ্ঞকে সফল করতে লাগবে দক্ষতা। আমরা যাতে নির্ভুল কাজ করতে পারি। এক্ষেত্রে তথ্যের যাতে বিভ্রাট না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ হবে আপনাদের তথ্যের ভিত্তিতে। বিবিএস এগিয়ে যাবে এ দেশের কল্যাণে। আপনাদের দেওয়া তথ্যে শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করব আমরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ইউনিসেফ ও বিবিএস মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস) পরিচালনার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে যার মাধ্যমে শিশু ও নারীদের জীবন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা শুরু হতে যাচ্ছে। এমআইসিএস হলো, এক ধরনের পারিবারিক জরিপ, যার মাধ্যমে শিশু ও নারী সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে বাস্তব ধারণা পাওয়া যায়। এই প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত তাদের উপযোগী নীতিমালা তৈরি, পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি প্রণয়নে সহায়তা করে। এবারের জরিপে কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেমন- এমআইসিএসের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো রক্তে সিসার মাত্রা (বিএলএল), ভারী ধাতুর মাত্রা, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের মাত্রা এবং রক্তশূন্যতা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। আমাদের চারপাশে সিসাসহ ভারী উপাদানের উপস্থিতি শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, তবে পরিবেশগত এই ঝুঁকি সময়মতো নির্ণয় ও মোকাবিলার মাধ্যমে পাঁচ বছরের কম বয়সি প্রতি তিনটি শিশু-মৃতু্যর একটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই এই জরিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমআইসিএস পরিচালনায় বিবিএস ও ইউনিসেফ কয়েক দশক ধরে একসঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশে প্রথম এমআইসিএস পরিচালিত হয় ৩০ বছর আগে। এই জরিপগুলো দেশের নারী ও শিশুর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এই উপাত্ত ভান্ডার শিশুদের অধিকার রক্ষায় পরিবর্তনকারী নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি ইউনিসেফের, নীতিনির্ধারকদের, সরকারের ও অংশীজনের কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আসন্ন এমআইসিএসে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পানি, স্যানিটেশন, শিক্ষা ও শিশু সুরক্ষা বিষয়ে প্রায় ২০০টি সূচক অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২০-২৫ মূল্যায়নে এই জরিপের উপাত্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।