রুই-কাতলাদের ধরা হবে চলতি আইনেই যৌথসভায় ওবায়দুল কাদের
প্রকাশ | ১০ জুন ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
দুর্নীতিবাজদের শায়েস্তা করার জন্য নতুন করে আইন প্রণয়নের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার মতে, 'আইন আছে, আইন নতুন করে করতে হবে না। নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) যেটা
বলেছেন, সেটা আমিও বলব। আধার দিয়েছি, রুই-কাতলা ধরা পড়বে।'
রোববার গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, জেলা আওয়ামী লীগ এবং সবকটি সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের যৌথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নতুন অর্থবছরে বাজেট পেশ করার পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণভাবে 'কালোটাকা' হিসেবে অপ্রদর্শিত আয় সাদা বা বৈধ করার সুযোগ দেওয়াকে বড়শিতে আধার গেঁথে মাছ শিকারের সঙ্গে তুলনা করে কথা বলেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, 'আমি বলি মাছ ধরতে গেলে তো আধার দিতে হয়, দিতে হয় না? আধার ছাড়া তো মাছ আসবে না। সেই রকম একটা ব্যবস্থা, এটা আসলে আগেও হয়েছে। সেই তত্ত্বাবধায়ক আমলেই শুরু করেছিল, আর পরেও প্রত্যেক সরকারই করে।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কালোটাকা সাদা তো বিএনপি সরকারের অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান করেছে, বেগম খালেদা জিয়াও করেছেন। বেগম জিয়া এখন বৃদ্ধ মানুষ। তারাও তাহলে দুর্বৃত্ত? এই বাজেট করা হয়েছে রাঘব-বোয়ালদের লুটপাট বন্ধ করার জন্য।'
'সীমান্ত এলাকায় হত্যার মহোৎসব চলছে' বলে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'সীমান্ত এলাকায় এই ধরনের ঘটনা মাঝে মধ্যে ঘটে। বিএনপির আমলে তো এটা আরও বেশি হয়েছিল। কিন্তু এটা যে মহোৎসব বা উৎসব এটা তো বলা যায় না। কোনো ঘটনা ঘটলেই কিন্তু দুদেশ এক সাথে বসছে, আলাপ-আলোচনা করছে। এর পুনরাবৃত্তির রোধে কার্যকর ব্যবস্থাও নিচ্ছে। হত্যার উৎসব বা মহোৎসব এইগুলো বিএনপির আবিষ্কৃত শব্দ। তারা নিজেরা যা চর্চা করেছে এখনো মনে করে তাই হবে।'
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'বিএনপি যে লুটপাটের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল, দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল, অন্ধকার পথ থেকে শেখ হাসিনা এই দেশকে উদ্ধার করেছে। লুটপাট আমরা বন্ধ করেছি। দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে।'
তিনি বলেন, 'বুয়েটে সনি হত্যার বিচার কে করেছে? আর আবরার হত্যায় যে কয়েকজন মৃতু্যদন্ড পেয়েছে সবাই ছাত্রলীগ বলে পরিচিত। বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার কি হয়নি? তারা (বিএনপি) তাদের সময় তাদের দলীয় কোন নেতার একটা বিচার করেছে? আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, এসপি কোহিনূর এদের বিচার কে করেছে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বেনজীর, আজিজ সাহেবেরা দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পাবেন না। তারা আওয়ামী লীগের লোক নন। একজন পুলিশ অফিসার আরেকজন সেনা অফিসার। কথা হচ্ছে দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পেয়েছে কি না? যেটা বিএনপি করেছে। আমরা ইমপিউনিটি কালচার গড়ে তুলিনি।'
গাজায় নির্বিচার হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আমরা সবাই চোখেও দেখি না, কানেও শুনি না। আমরা সবাই যেন বধির হয়ে গেছি। ৯ মাস পরে ৪ জন হোস্টেজকে উদ্ধার করল, তাতে মনে হচ্ছে বিশ্বনেতা যেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। গতকাল (শনিবার) ইন্টারন্যাশনাল সব মিডিয়া তাকে একজন মহামানব বানিয়েছে। আর বাইডেন সাহেব ফ্রান্সে বসে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'সারা পৃথিবী সাক্ষী, শেখ হাসিনা ছাড়া একজন রাষ্ট্রনেতা বললেন না যে ২১৩ জন সিভিলিয়ান শিশু-নারীসহ হত্যা করে চারজনকে উদ্ধার করেছে। এই ২১৩ জনের কথা বলার কি কেউ নেই? এই শিশুদের কী অপরাধ? এরা কি হামাস? এই সিভিলিয়ান হত্যার বিচার কি হবে না? একটা কথাও বলেন নাই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আর আমাদের আরব বিশ্ব মনে হচ্ছে ঘুমাচ্ছে।'
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।