শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হতে সময় চান বেনজীর

যাযাদি ডেস্ক
  ০৬ জুন ২০২৪, ০০:০০
দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হতে সময় চান বেনজীর

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হওয়ার জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।

বুধবার বিকালে আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করেন বলে দুদক কমিশনার জহুরুল হক জানান।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেনজীর আহমেদকে ৬ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে নোটিশ পাঠিয়েছিল দুদক। তিনি বিদেশে চলে গেছেন বলে গুঞ্জনের মধ্যেই আইনজীবীর মাধ্যমে সময় চাওয়ার এ খবর এল।

বেনজীরের স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরকেও দুদকে তলব করা হয়েছে। তাদের ৯ জুন জিজ্ঞাসবাদে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

সাবেক এই পুলিশ প্রধান এবং পরিবারের সদস্যদের সম্পদ জব্দেরও আদেশ দিয়েছেন আদালত। তবে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, আদালতের আদেশ আসার আগেই বেনজীর ব্যাংক থেকে তার বেশির ভাগ অর্থ তুলে নিয়েছেন। এরপর তারা দেশ ছেড়ে গেছেন।

বেনজীর দেশে আছেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে অস্পষ্টতা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এ বিষয়ে কোনো তথ্য তার কাছে নেই। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা না থাকায় বেনজীর আহমেদ বিদেশে 'যেতেই পারেন'।

দুদকের তলবে বেনজীর জিজ্ঞাসাবাদে হাজির না হলে কী হবে, সে প্রশ্ন মঙ্গলবার দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হকের কাছে রেখেছিলেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, 'দুদক কাউকে নোটিশ করলে তিনি আসতে বাধ্য কি না, সেটা আইনে সুস্পষ্ট বলা নেই। না এলে ধরে নিতে হবে তার কোনো বক্তব্য নেই। তবে তার সুযোগ আছে সময় চাওয়ার। সময় চাইলে দুদক ১৫ দিন সময় দিতে পারবে। এই এখতিয়ার কমিশনের রয়েছে।'

দুদক কমিশনার বলেন, 'সময় দেওয়ার পরও যদি তিনি দুদকে না আসেন তাহলে ধরে নিতে হবে তার কোনো বক্তব্য নেই। তখন নথিপত্র দেখে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, না হলে নয়।'

অনুসন্ধানের স্বার্থে করণীয় সবই করা হচ্ছে উলেস্নখ করে জহুরুল হক বলেন, 'অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতেও বিচার হবে, এতে কোনো বাধা নেই।'

গত ৩১ মার্চ 'বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ' ও ৩ এপ্রিল 'বনের জমিতে বেনজীরের রিসোট' শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি পত্রিকা। সেখানে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে।

বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এপ্রিলের শেষে বেনজীর এবং তার পরিবারের সদস্যদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে দুদকে আবেদন করেন।

এরপর ২২ এপ্রিল দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, বেনজীর আহমেদের 'অবৈধ সম্পদ' নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছেন তারা। সেজন্য তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।

একই দিন হাই কোর্ট এক আদেশে দুই মাসের মধ্যে বেনজীরের বিষয়ে উঠা অভিযোগের তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন চেয়ে নির্দেশ দেয় হাই কোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী এবাদাত হোসেনের বেঞ্চ।

নির্দেশনার পর সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সম্পদের খোঁজে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আটটি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক।

দুদকের আবেদনে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন। সেই সঙ্গে তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ারও অবরুদ্ধ করার আদেশ হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে