শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

আজিজ-বেনজীর আ'লীগের কেউ নন :কাদের

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০
আজিজ-বেনজীর আ'লীগের কেউ নন :কাদের

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ 'আওয়ামী লীগের লোক নন' উলেস্নখ করে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বেনজীর আমাদের দলের লোক নন। সিনিয়রিটি ও মেধা নিয়ে তিনি আইজিপি হয়েছেন। আজিজও আমাদের দলের লোক নন। তিনিও যোগ্যতা ও সিনিয়রিটির ভিত্তিতেই

সেনাপ্রধান হয়েছেন। এখন ভেতরে তারা যদি কোনো অপকর্ম করেন, এটা যখন সরকারের কাছে আসে তখন এদের বিচার করার সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে।

মঙ্গলবার দুপুরে তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ৬ দফা দিবস এবং ২৩ জুন আওয়ামী লীগের 'পস্নাটিনাম জয়ন্তী' উদযাপন উপলক্ষে এক প্রতিনিধি সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

বর্তমান সময়ে আলোচিত সরকারের সাবেক দুই কর্মকর্তাকে নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আপনাদের সময় কেউ শাস্তি পায়নি। আপনাদের দলের নেতা নিজেই দুর্নীতিবাজ। সিঙ্গাপুর থেকে কোকোর (আরাফাত রহমান কোকো) টাকার একটা অংশ আনতে পেরেছি। এফবিআই ঢাকায় এসে তারেকের (তারেক রহমান) বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে।'

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে লক্ষ্য করেছি, বিরোধীদল বিএনপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কথা বলছে। তাদের দলের প্রধান দুর্নীতির অভিযোগে সাজা ভোগ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদারতায় বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এটা করেছেন। বিএনপি আন্দোলন করতে পারেনি, তাদের আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হয়নি। হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচনেও অংশ নেয়নি।'

বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিরোধীদল বিএনপি যোগ না দিলেও এ নির্বাচন সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ হয়েছে। '৭৫-পরবর্তী সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল ছিল এবারের নির্বাচন। উপজেলা নির্বাচন নিয়েও এতো কথা, জনগণ নাকি ভোট দিতে যায় না। অথচ প্রথম ধাপে ৩৬, দ্বিতীয় ধাপে ৩৭ ও তৃতীয় ধাপে ৩৮ শতাংশেরও বেশি ভোটার উপস্থিতি ছিল। জাতীয় নির্বাচনেও ৪২ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি ছিল। এখানে কোনো প্রাণহানি হয়নি।'

আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কাউকে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র?্যাব কিংবা প্রশাসনের বড় পদে বসায়নি উলেস্নখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, '৮ জনকে পাশ কাটিয়ে ৯ নম্বর ব্যক্তি মঈন ইউ আহমেদকে সেনাপ্রধান করা হয়েছিল, কে করেছে? বেগম খালেদা জিয়া। আশরাফুল, রকিবুল হুদা, কোহিনূর কার সৃষ্টি? মির্জা ফখরুল অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছেন। ভুলে গেছেন, তার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অস্ত্র চোরাচালান, মানি লন্ডারিংয়ের মামলায়, দুর্নীতির মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশে-বিদেশে সর্বত্রই একজন সৎ পলিটিশিয়ান হিসেবে পরিচিত। তার সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই।'

সেতুমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের প্রধান প্রধান নেতাদের কে দুর্নীতিবাজ? সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে আসেন। দুর্নীতিবাজ আপনাদের দলের চোরের রাজা, চোরের মহারাজা সবই বিএনপি। বিএনপি দুর্নীতিবাজদের জন্মদাতা।'

এ সময় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইবি ও সুজনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আজ টিআইবি একটা আছে, সুজন আছে... সুজন না কুজন জানি না। ফখরুল, গয়েশ্বর যে সুরে কথা বলে, তারাও একই সুরে কথা বলে। আজ মানুষের প্রশ্ন, টিআইবি সুজন কি বিএনপির "বি" টিম? যে সুরে কথা বলে, কোনো পার্থক্য নাই, একই সুরে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে।'

দলের নেতাকর্মীদের কারও কোনো অসুবিধা বা সচ্ছলতায় ঘাটতি থাকলে দলকে জানানোর কথা উলেস্নখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের অসচ্ছল, অসুস্থ লোকের খবর পেলেই ব্যবস্থা নেন। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, অসচ্ছলতার ব্যাপারে তার সদয় দৃষ্টি আমরা দেখতে পাই।'

দলের নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, 'দলের বদনাম করে কেউ কোনো অপকর্ম করবেন না। সত্য সত্যই। বাইরে থেকে বেনজীরকে আমরা যেভাবে দেখেছি, তিনি যে আরেক বেনজীর ভেতর থেকে সেটা তো এখন সত্য হয়ে দেখা দিচ্ছে। একজন মানুষের চলতে-ফিরতে কত টাকা লাগে? দলের নেতা যদি দলের কর্মীদের কাছে টাকা-পয়সা চায়, এটা খুব লজ্জার বিষয়।'

দলের জাতীয় সম্মেলন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'জন্মলগ্ন থেকেই আমাদের দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা হয়। আমি তৃতীয়বারের সাধারণ সম্পাদক। আমাদের একটা সম্মেলনও কেউ বলতে পারবে না সময় রেখা অতিক্রম করেছে। আমরা ডিসেম্বরের সময় সীমার মধ্যেই জাতীয় সম্মেলন সম্পন্ন করি। আগামী সম্মেলনও ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে হবে।'

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আপনারা প্রস্তাবিত কমিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে পৌঁছাবেন। ৭ জুন আমরা সারাদেশে ৬ দফা দিবস পালন করব। এর পরেই সবার হাতে কমিটি চলে যাবে। এ নিয়ে কেউ শোরগোল করতে পারবেন না। কোনো কথা থাকলে লিখিত অভিযোগ আমাদের সভাপতির ধানমন্ডি অফিসে জমা দেবেন।'

দলীয় প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে