ঢাকায় এসে খুন হলেন জাপান প্রবাসী আরিফ

কানাডা থেকে এসে তাকে খুন করে এক নারী

প্রকাশ | ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রলোভনে পড়ে জাপান থেকে ঢাকায় এসে খুন হয়েছেন আরিফুল ইসলাম নামের এক প্রবাসী। পুলিশ বলছে, পারভীন নামের এক নারী ওই প্রলোভনের ফাঁদ পেতেছিলেন। কানাডা প্রবাসী ওই নারী একদিনের জন্য ঢাকায় এসে আরিফকে হত্যার পর আবার কানাডায় চলে গেছেন। অভিযুক্ত নারীকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে পাওয়া চিরকুটের লেখা ওই নারীর কিনা তা খতিয়ে দেখছে সিআইডি। পুলিশ জানায়, গত ১ জুন রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ২ নম্বর সড়কের সি বস্নকের ১/এ বাসার দোতলা থেকে কম্বল পেঁচানো অর্ধগলিত একজন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বুকে ও গলায় একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। রাতেই লাশ পাঠানো হয় ঢাকার শেরেবাংলানগর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। পুলিশ জানায়, লাশটি বাংলাদেশের নাগরিক জাপান প্রবাসী আরিফুল ইসলামের (২৮) বলে শনাক্ত হয়। তার বাড়ি নরসিংদীতে। লাশের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। তাতে লেখা রয়েছে, 'নিজের হাতে এই রেপিস্ট, বস্ন্যাক মেইলারকে মেরে শান্তি নিলাম'। লেখাটি হত্যাকারী হিসেবে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত পারভীন আক্তারের (৩৪) কিনা তা নিশ্চিত হতে চিরকুটটি সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, মাটি প্রপার্টিজের নির্মিত বাড়িটির ওই ফ্ল্যাট অনলাইনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নেন আরিফুল ইসলাম ও পারভীন আক্তার। গত ১৭ মে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়েই তারা ফ্ল্যাটটিতে ওঠেন। কয়েক দিন ধরে ফ্ল্যাটের দরজা জানালা বন্ধ দেখে মাটি প্রপার্টিজ থেকে পুলিশকে ফোন দেওয়া হয়। পরে সেখানে গিয়ে একজনের লাশ পাওয়া যায়। ওই নারীর বাড়িও নরসিংদীতে। পারভীন কানাডা প্রবাসী। থানা পুলিশ জানায়, বসুন্ধরার ভাড়া বাসা থেকে কানাডা প্রবাসী পারভীন আক্তারের সঙ্গে আরিফুলের বিয়ের নোটারি করা হলফনামা উদ্ধার হয়েছে। হলফনামা মোতাবেক তারা ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। নিহত আরিফের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, আরিফুলের সঙ্গে এক জাপানি নারীর পরিচয় হয়। সেই সুবাদে ওই নারী আরিফুলকে জাপানে নিয়ে যান। জাপানে গিয়ে বিয়ে করেন সেই জাপানি নারীকে। এরপর থেকে তারা জাপানেই বসবাস করছিলেন। বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাজন কুমার সাহা জানান, পারভীন তার স্বামীর সঙ্গে কানাডায় থাকেন। পারভীনের বর্তমান স্বামীর বাড়িও নরসিংদীতে। তদন্তে দেখা গেছে, গত ১৭ মে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন পারভীন। ওইদিন বিকাল ৪টার দিকে পারভীন ও আরিফুল একসঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে ওঠেন। পরদিন সকাল সাড়ে ৬টায় পারভীন একাই বেরিয়ে যান। পারভীনের সবশেষ অবস্থান শাহজালাল বিমানবন্দর দেখা গেছে। তাতে বোঝা যাচ্ছে, পারভীন একদিনের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। এসেই আরিফুলকে খুন করে আবার কানাডায় চলে যেতে পারেন। আরিফুলও একইদিন জাপান থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকে পারভীন হত্যাকান্ডটি সংঘটিত করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়া হবে।