শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

ভিটামিন 'এ' পস্নাস ক্যাপসুল পেল ২ কোটি ২২ লাখ শিশু

যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ জুন ২০২৪, ০০:০০
একটি শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে

সারাদেশে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী শিশুদের ভিটামিন এ পস্নাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২ কোটি ২২ লাখ শিশুকে ভিটামিন 'এ' পস্নাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। এদের মধ্যে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সি প্রায় ২৭ লাখ শিশুকে একটি নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সি প্রায় এক কোটি ৯৫ লাখ শিশুকে লাল রঙের একটি ভিটামিন 'এ' পস্নাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দিনব্যাপী দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১ লাখ ২০ হাজার কেন্দ্রে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী ও প্রায় ৪০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী এই আয়োজনে যুক্ত ছিলেন।

শনিবার সকালে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) অডিটরিয়ামে জাতীয় ভিটামিন 'এ' পস্নাস ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মধ্যে রাতকানা রোগের হার ছিল ৪ দশমিক ১০ শতাংশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম গ্রহণ করে শিশুদের ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু করেন। পরে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে ভিটামিন 'এ'-এর অভাবজনিত রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা প্রায় নাই বললেই চলে।

তিনি বলেন, স্বল্প সময়ে ভিটামিন 'এ' পস্নাস কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

ক্যাম্পেইনকে সফল করতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রয়োজন। আমরা আশা করি জাতিকে অন্ধত্ব ও অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন। ভিটামিন 'এ' পস্নাস ক্যাম্পেইন পর্যালোচনার জন্য ক্যাম্পেইনের দিন প্রতিটি উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে।

জাতীয় ভিটামিন 'এ' পস্নাস ক্যাম্পেইনের সফলতা উলেস্নখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন আরও বলেন, বছরে ২ বার শতকরা ৯৮ ভাগ শিশুদের ভিটামিন 'এ' খাওয়ানোর ফলে ভিটামিন 'এ' অভাবজনিত অন্ধত্ব্যের হার শতকরা ১ ভাগের নিচে এসেছে এবং শিশু মৃতু্যর হারও কমেছে। এই সাফল্য ধরে রাখতে জাতীয় ভিটামিন 'এ' পস্নাস ক্যাম্পেইনে ৬-৫৯ মাস বয়সি সব শিশুকে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো চলমান রাখতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য খাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার ফলে বাংলাদেশে অপুষ্টির হার কমেছে এবং শিশু ও মাতৃমৃতু্য উলেস্নখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। শুধু দেশেই নয়, বিশ্ব নেতৃত্বের পুষ্টি ফোরামের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সারাবিশ্বের পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও বিশ্বস্বাস্থ্য) ড. মো. জিয়াউদ্দীন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল অনুবিভাগ) মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান এনডিসি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (জনস্বাস্থ্য অধিশাখা) শিব্বির আহমেদ ওসমানী, নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল হক প্রমুখ।

এদিকে, শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগে ইপিআই কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাইয়ে জাতীয় ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক ও উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বণিক, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউর রহমান প্রমুখ ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে