আনার হত্যায় জড়িত শিমুলের সহযোগী সাইফুল কারাগারে

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
ঝিনাইদহ-৪ (কালিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার মামলায় জড়িত শিমুল ভূঁইয়ার সেকেন্ড ইন কমান্ড সাইফুল আলম মেম্বারকে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় যুবলীগ নেতা প্রফেসর উদয় শংকর হত্যা মামলা ও নতুন করে দায়ের করা বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। শুনানি শেষে আসামি সাইফুল আলমকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন যশোর সদরের আমলি আদালতের বিচারক গোলাম কিবরিয়া। একইসঙ্গে রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ৩ জুন পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন। আটক সাইফুল আলম মেম্বার যশোরের অভয়নগর উপজেলার দত্তগাতি গ্রামের আবুল কাশেম মোলস্নার ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, সাইফুল মেম্বার চরমপন্থি নেতা শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমান উলস্নাহর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত। সে যশোরের অভয়নগর উপজেলার রাকিব, সুব্রত এবং মনিরামপুর উপজেলার যুবলীগ নেতা প্রফেসর উদয় শংকর হত্যা মামলায় জড়িত। তাকে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে যশোর শহরের বাবলাতলা এলাকার আদর্শ নার্সারি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে একটি ভারতীয় নম্বরের মোবাইল সিম ও বিস্ফোরক জব্দ করা হয়েছে। বুধবার বিকালে তাকে যুবলীগ নেতা প্রফেসর উদয় শংকর হত্যা মামলা ও নতুন করে দায়ের করা বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিস্ফোরক মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। যশোরের পুলিশ সুপার কুলায় কুমার জোয়ারদার জানান, সাম্প্রতিক সময় সাইফুল মেম্বার ভারতে ছিলেন। তিনি ভারতীয় মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। গত ২০ মে সে অবৈধ পথে দেশে ফিরে আসে। এমপি আনারের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা আছে কিনা সেটি আমরা তদন্ত করে দেখব। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে। এর আগে গ্রেপ্তারকালে ডিবি পুলিশ যশোরের উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম বলেন, অভয়নগর উপজেলার দত্তগাতি গ্রামের রকিবুল ও সুব্রত হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি সাইফুল ও শিমুল ভূইয়া। এ ছাড়া মনিরামপুর উপজেলার পাচাকড়ি গ্রামের উদয় শংকর হত্যা মামলার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে সাইফুলের নাম এসেছে। সাইফুল আলম নিষিদ্ধ পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা। একই সঙ্গে শিমুল ভূইয়ার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করে সাইফুল। সাইফুল চোরাইপথে ভারতে পলাতক ছিলেন। গত ১৯ মে তিনি যশোরে ফেরেন। তার কাছ থেকে ভারতীয় সিম জব্দ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময় সাইফুল মেম্বার সাতক্ষীরা ও ভারত সীমান্ত এলাকায় ছিলেন। তিনি ভারতীয় মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। এদিকে, ডিবি সূত্র জানিয়েছে, সাইফুল চোরাইপথে ভারতে পলাতক ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম। আনার হত্যার সময় তিনি ভারতে উপস্থিত ছিলেন বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছেন। গত ১৯ মে তিনি ভারত থেকে যশোরে ফেরেন। তার কাছ থেকে ভারতীয় সিম জব্দ করা হয়েছে। তবে আটক সাইফুল ইসলাম তার কাছের ভারতীয় সিম দিয়ে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ছুটিপুর সীমান্ত এলকায় অবস্থান করে ভারতে কথা বলতেন বলে দাবি করেছেন। ডিবি পুলিশ যশোরের উপ-পরিদর্শক মফিজুল ইসলাম আরও জানান, সাইফুল আলম মেম্বার এক সময় মাছের ব্যবসা করতেন। সেই সূত্র ধরে পাঁচ দিন আগে চাঁচড়া বাবলাতলায় এসে তিনি আত্মগোপন করেছিলেন। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করে তিনি ভারতে যোগাযোগ করতেন। ভারতীয় সিম দিয়ে তিনি ভারতের বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কথা বলতেন। তবে ভারতে ছিলেন না বলে দাবি তার। এ সময় তার ব্যবহার করা নম্বরটি দেশে না ভারতে ব্যবহৃত হতো, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়েছে কিনা প্রশ্নের জবাবে এসআই মফিজ বলেন, এ ব্যাপারে পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলছে।