ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র

আনার হত্যার তদন্তে পূর্ণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আনোয়ারুল আজীম আনার
কলকাতায় এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে 'খুনের' ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশকে 'পূর্ণ সহায়তা' দেওয়ার কথা বলেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রানধির জেসওয়াল বলেন, "বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক্ষেত্রে সমন্বয় করছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য আদান-প্রদান করছে। চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে আমাদের দিক থেকে সরকার বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহায়তা দিচ্ছে।" ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। তদন্ত শুরু হয় দুই দেশে। ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নিউ টাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন এমপি আনার। এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতীয় পুলিশের দেওয়া তথ্যে বাংলাদেশে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডেও নেওয়া হয়। ওই তিনজন হলেন- আমানুলস্না সাঈদ ওরফে শিমুল ভুঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভুঁইয়া (৫৬), তানভীর ভুঁইয়া (৩০) ও সেলেস্টি রহমান (২২)। এছাড়া মঙ্গলবার যশোর থেকে সাইফুল আলম মোলস্না মেম্বার নামে আরেকজনকে আটক করে ডিবি। তিনি পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা খুলনার শিমুল ভুঁইয়ার সহযোগী বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ বলছে, এমপি আনার হত্যার 'হোতা' তার বাল্যবন্ধু ও ঝিনাইদহের যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিন মিয়া। আর হত্যাকান্ডটি বাস্তবায়ন করেছেন চরমপন্থি নেতা আমানুলস্না ওরফে শিমুল। আনার কলকাতায় যাওয়ার পরদিন বৈঠক করার জন্য নিউ টাউনে আখতারুজ্জামান শাহীনের ভাড়া বাসায় যান। সেখানেই আসামিরা তাকে হত্যা করে। তদন্তের এক পর্যায়ে জিহাদ হাওলাদার নামের এক কসাইকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাকে নিয়ে কয়েকটি খাল, জঙ্গলে ব্যাপক তলস্নাশি চালিয়েও আনারের লাশের হদিস মেলাতে পারেনি কলকাতা পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২৪ বছর বয়সি জিহাদ হাওলাদার বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা। অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন তিনি। আনারকে 'খুনে'র প্রায় দুই মাস আগে অভিযুক্তরা জিহাদকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন। জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডিকে জিহাদ বলেছেন, আখতারুজ্জামানের নির্দেশেই তিনি 'সব কাজ' করেছেন। আরও চার জন বাংলাদেশি এই কাজে সাহায্য করেছেন। ভারতীয় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বাংলাদেশে এসে ২৪ মে ঢাকায় গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যান। এরপর ২৫ মে কলকাতায় যান বাংলাদেশের ডিবির তিন কর্মকর্তা। তারাও কসাই জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং তাকে নিয়ে সেই বাড়ি ঘুরে দেখেন, যেখানে আনারকে হত্যার কথা বলা হয়েছে। সঞ্জীবা গার্ডেনস নামের বিলাসবহুল ওই অ্যাপার্টমেন্ট বস্নকের সেপটিক ট্যাংক থেকে মঙ্গলবার বেশ কিছু মাংসের টুকরো উদ্ধার করার কথা জানায় পুলিশ।